মনজুর এ আজিজ: রাজধানীর ঢাকার কেরানীগঞ্জের ক্ষুদ্র পোশাক কারখানায় কর্মরত ২০ হাজার শিশুদের পুনর্বাসনের মাধ্যমে শিশু শ্রম নিরসনে সরকারের অনুমোদিত কর্মপরিকল্পনা বাস্তবায়নে গণমাধ্যমসহ সবাইকে এগিয়ে আসতে হবে। বৃহস্পতিবার রাজধানীর বাংলামোটরে বাংলাদেশ লেবার ফাউন্ডেশন (বিএলএফ) এর কার্যালয়ে গণমাধ্যম কর্মীদের সাথে এক মতবিনিময় সভায় এই আহবান জানিয়েছেন শ্রমিক ও সাংবাদিক নেতৃবৃন্দ।
অনুষ্ঠানে বিএলএফের চেয়ারম্যান ও প্রবীণ শ্রমিক নেতা আব্দুস সালাম খানের সভাপতিতে অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য রাখেন বিএলএফের মহাসচিব ও বিশিষ্ট শ্রমিক নেতা জেডএম কামরুল আনাম, বাংলাদেশ কলকারখানা পরিদর্শন অধিদপ্তরের সহকারী মহাপরিদর্শক ডা. দীপা দত্ত, বাংলাদেশ সংবাদ সংস্থার বাংলা বিভাগের প্রধান রুহুল গণি জ্যোতি, লেবার রাইটস সাংবাদিক ফোরামের সভাপতি কাজী আব্দুল হান্নান ও সাধারণ সম্পাদক আতাউর রহমান প্রমুখ। সভায় ঢাকার কেরানীগঞ্জের শিশু শ্রমিকের সার্বিক ভিডিও চিত্র ও মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন বিএলএফ কর্মসূচি কর্মকর্তা মাহমুদুল হাসান খান।
অনুষ্ঠানে জানানো হয়, দেশের অভ্যন্তরীণ চাহিদা পূরণের লক্ষ্যে ঢাকার কেরানীগঞ্জের ৭ হাজার ৫০০টি পোশাক তৈরির কলকারখানায় প্রায় ১ লাখ ২০ হাজার শিশু শ্রমিক কাজ করে। এর মধ্যে ঝুঁকিপূর্ণ শিশু শ্রমে নিয়োজিত রয়েছে প্রায় ২০ হাজার কর্মী। যাদের বয়স ৭ থেকে ১৪ বছর পর্যন্ত।
ঢাকার কেরানীগঞ্জের ৭ হাজার ৫০০ কলকারখানায় প্রায় ৩ লাখ শ্রমিক কাজ করেন। এর মধ্যে প্রায় ১ লাখ ২০ হাজার শিশুশ্রমিক রয়েছে। অর্থাৎ প্রায় ৪৮ শতাংশ শিশুশ্রমিক রয়েছে সেসব কলকারখানায়। ৯৫ ভাগ কারখানায় অত্যন্ত ঝুঁকিপূর্ণ পরিবেশে শিশুরা কাজ করে। অভাব, বাবা-মায়ের অসচেতনতা, পরিবারের অবাধ্য হওয়া, পরিবারের উপার্জনক্ষম ব্যক্তি মারা যাওয়া, বাবা-মায়ের বিবাহ বিচ্ছেদের কারণে অসহায় হয়ে পড়া শিশুরা তাদের লেখাপড়া ও খেলার বয়সে কলকারখানায় যুক্ত হয়ে পড়েছে। কেরানীগঞ্জের ২৮৫টি ভবনে এসব প্রতিষ্ঠান গড়ে উঠেছে। প্রতিটি কারখানায় ৫ থেকে ৫০ জন শিশু শ্রমিক কাজ করে। এসব প্রতিষ্ঠানে কর্মরত বেতনের কোনো ধারাবাঁধা নিয়ম নেই। বিভিন্ন কারখানা তাদের ইচ্ছামতো খুবই কম বেতন দিয়ে থাকেন। তাছাড়া অস্বাস্থ্যকর পরিবেশে তাদের থাকতে হয়। এতে অনেক শিশুই তাদের মৌলিক অধিকার হারাচ্ছে।
অনুষ্ঠানে বক্তারা বেশ কয়েকটি সুপারিশ তুলে ধরেন, তা হচ্ছে-কর্মঘন্টা ১৩ ঘন্টার পরিবর্তে ৬ ঘন্টা নির্ধারণ করা, স্বাস্থ্য, চিকিৎসাসহ মৌলিক অধিকারের বাস্তবায়ন, সর্বোপরি শিশুদের পুনর্বাসন কার্যক্রম জোরদার করা।
এমএ/এসবি২
আপনার মতামত লিখুন :