বিশ্বের অন্যতম জনপ্রিয় সোশ্যাল মিডিয়া প্ল্যাটফর্ম ফেসবুকের আজ ২১ তম জন্মদিন। ২০০৪ সালের ৪ ফেব্রুয়ারি মার্ক জাকারবার্গ ও তার সহপাঠীরা হার্ভার্ড ইউনিভার্সিটিতে থাকাকালীন এটি তৈরি করেন। শুরুতে "দ্য ফেসবুক" নামে চালু হওয়া এই প্ল্যাটফর্ম মূলত হার্ভার্ডের শিক্ষার্থীদের মধ্যে যোগাযোগ সহজ করার জন্য তৈরি হয়েছিল। সহ-প্রতিষ্ঠাতাদের মধ্যে ছিলেন এডুয়ার্ডো স্যাভেরিন, অ্যান্ড্রু ম্যাককালাম, ডাস্টিন মস্কোভিটস এবং ক্রিস হিউজ।
পরবর্তীতে ফেসবুক হার্ভার্ডের গণ্ডি পেরিয়ে অন্যান্য বিশ্ববিদ্যালয়ে ছড়িয়ে পড়ে এবং ২০০৬ সালে এটি সবার জন্য উন্মুক্ত করা হয়। দ্রুত জনপ্রিয়তা অর্জনের পর ২০১২ সালে এটি স্টক মার্কেটে তালিকাভুক্ত হয়।
শুরুতে শুধুমাত্র বন্ধুদের সংযুক্ত করার প্ল্যাটফর্ম হলেও এখন ফেসবুক বিশ্বের বৃহত্তম সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম হিসেবে পরিচিত। ২০২৫ সালের মধ্যে ফেসবুক ব্যবহারকারীর সংখ্যা ৩ বিলিয়ন ছাড়িয়ে যাবে বলে ধারণা করা হচ্ছে।
বর্তমানে ফেসবুক মেটা প্ল্যাটফর্মস ইনক.-এর অধীনে পরিচালিত হচ্ছে, যা ২০২১ সালে নাম পরিবর্তন করে ভবিষ্যতের মেটাভার্স ও ভার্চুয়াল রিয়েলিটির দিকে মনোযোগ দেয়। ফেসবুক এখন কেবল একটি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম নয়, এটি এক বিশাল ডিজিটাল ইকোসিস্টেম।
ফেসবুকের মাধ্যমে সহজেই বন্ধু, পরিবার ও সহকর্মীদের সঙ্গে সংযোগ স্থাপন করা যায়। মেসেঞ্জারের মাধ্যমে ইনস্ট্যান্ট মেসেজিং ও ভিডিও কল করা সম্ভব। ব্যক্তি ও ব্যবসায়িক ব্র্যান্ড তৈরি করতে প্রোফাইল ও পেজ ব্যবহার করা যায়, যেখানে বিজ্ঞাপন ও মার্কেটিং সুবিধাও রয়েছে।
ফেসবুক গ্রুপের মাধ্যমে বিভিন্ন কমিউনিটি তৈরি করা যায়, লাইভ ভিডিও ও ইভেন্টের মাধ্যমে আলোচনা করা যায় এবং সংবাদ মাধ্যমগুলোর আপডেট সরাসরি ফেসবুক থেকেই পাওয়া সম্ভব। ফেসবুক ওয়াচ ও রিলস এখন ভিডিও কনটেন্টের জন্য জনপ্রিয় প্ল্যাটফর্ম হিসেবে বিবেচিত হচ্ছে।
তবে ফেসবুকের সাফল্যের পাশাপাশি বিভিন্ন চ্যালেঞ্জের মুখোমুখিও হতে হয়েছে। গোপনীয়তা লঙ্ঘন, ভুয়া সংবাদ ছড়ানো এবং রাজনৈতিক বিতর্কের কারণে এটি অনেকবার সমালোচনার সম্মুখীন হয়েছে। তবুও বিশ্বব্যাপী মানুষের সংযোগ স্থাপনের ক্ষেত্রে ফেসবুক এখনও শীর্ষস্থানে রয়েছে।
২১ বছর পূর্তির এই মুহূর্তে, ফেসবুক কীভাবে ভবিষ্যতের প্রযুক্তিতে আরও নতুন সংযোজন আনবে সেটাই এখন দেখার বিষয়। ফেসবুক আজ শুধু যোগাযোগের মাধ্যম নয়, এটি একটি শক্তিশালী ডিজিটাল জগৎ।
আপনার মতামত লিখুন :