মার্কিন গোয়েন্দা সংস্থা ‘সিক্রেট সার্ভিস’-এর ভাণ্ডারে সর্বশেষ সংযোজন হল ‘স্পট’ নামের এক রোবটিক কুকুর, যা বানিয়েছে রোবটিক কোম্পানি বস্টন ডাইনামিকস।
২০২১ সালে হোয়াইট হাউস ছাড়ার পর থেকে ফ্লোরিডা অঙ্গরাজ্যের পাম বিচে নিজের ‘মার-আ-লাগো’ রিসোর্টেই থাকছেন ট্রাম্প। সেখানেই রোবটটি দেখা গেছে।
এইসব রোবটের সঙ্গে কোনো অস্ত্র না থাকলেও এদের প্রত্যেককেই দূর থেকে বা স্বয়ংক্রিয়ভাবে নিয়ন্ত্রণ করা যায়। তবে, এর প্রোগ্রামিং ব্যবস্থা আগে থেকেই সেট করে দিতে হয়।
স্পটের প্রতিটি পায়ে পথচারীদের জন্য সতর্কবার্তা রয়েছে, যেখানে লেখা ‘ডু নট পেট।’
“রোবট কুকুরগুলোকে কেউ আদর করেছে কি না, তা আমার জানা নেই। এরা দেখতে একেবারেই আদুরে নয়,” বলেন যুক্তরাষ্ট্রের মেনলো কলেজের রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষক মেলিসা মিচেলসন।
ওই রিসোর্টে স্পটের দৌড়ে বেড়ানোর ভিডিও এরইমধ্যে টিকটকে ভাইরাল হয়েছে, যেখানে একে ‘শান্ত’ ও ‘চতুর’ থেকে শুরু করে ‘ভয়ানক’ বলেও আখ্যা দিচ্ছেন নেটিজেনরা। এমনকি যুক্তরাষ্ট্রের বিভিন্ন ‘লেট নাইট টেলিভিশন শো’তেও রোবটটি নিয়ে হাস্যরস হচ্ছে। যদিও এর মিশন হাসির কোনো বিষয় নয়।
“প্রেসিডেন্ট ইলেক্টকে নিরাপত্তা দেওয়া আমাদের সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার,” বিবিসি’কে দেওয়া বিবৃতিতে বলেছেন ‘ইউএস সিক্রেট সার্ভিস’-এর যোগাযোগ প্রধান অ্যান্টনি গুগলিয়েলমি।
মার্কিন প্রেসিডেন্ট নির্বাচন শুরুর কয়েক মাস আগে দুইবার হত্যাচেষ্টার মুখোমুখি হয়েছেন ট্রাম্প। এর মধ্যে প্রথমটি ঘটেছিল জুলাই মাসে, পেনসিলভানিয়ার এক র্যালিতে। আর অন্যটি সেপ্টেম্বরে, মার-আ-লাগো’র গলফ কোর্সে।
এদিকে, ট্রাম্পের নিরাপত্তায় রোবটিক কুকুর ব্যবহার নিয়ে বিবিসি’র সুনির্দিষ্ট কয়েকটি প্রশ্নের জবাব দিতে রাজী হয়নি সিক্রেট সার্ভিস, যেখানে এর কারণ হিসেবে ‘নিরাপত্তা ঝুকি’র বিষয়টি উল্লেখ করেছে। এমনকি ট্রাম্পের প্রাথমিক বাসভবনে তারা ডিভাইসটি কবে থেকে বসিয়েছে, সে সম্পর্কেও মন্তব্য করেনি সংস্থাটি।
রোবটটির নির্মাতা কোম্পানি বস্টন ডাইনামিকসও এ বিষয়ে বিবিসি’র বিভিন্ন সুনির্দিষ্ট প্রশ্নের উত্তর দিতে রাজী হয়নি। তবে সিক্রেট সার্ভিস যে তাদের স্পট রোবট ব্যবহার করছে, সে বিষয়টি নিশ্চিত করেছে কোম্পানিটি।
সিক্রেট সার্ভিস এটি এতদিন ব্যবহার করেনি কেন?
সিক্রেট সার্ভিসের সাবেক কর্মকর্তা এবং নিরাপত্তা ও ঝুঁকি ব্যবস্থাপনা নিয়ে কাজ করা ‘ট্যালন কোম্পানিস’-এর বর্তমান সিইও রন উইলিয়ামসের অনুমান বলছে, ট্রাম্পকে হত্যাচেষ্টার পর থেকেই সংস্থাটি ‘নিজেদের প্রযুক্তি আপগ্রেড নিয়ে তড়িঘড়ি করছে যাতে তাদের সম্ভাব্য বিপদ শনাক্ত এবং প্রতিরোধ করার সক্ষমতা আগের চেয়ে বেড়ে যায়।’
তিনি আরও যোগ করেন, মার-আ-লাগো, যেখানে বেশিরভাগ জমিই উন্মুক্ত অবস্থায় আছে, সেখানে রোবটিক কুকুর আরও আগে থেকেই থাকা উচিৎ ছিল।
“এরা একাই মানুষের চেয়ে বেশি জায়গা পাহাড়া দিতে পারে,” রোবটিক কুকুর সম্পর্কে বলেন উইলিয়ামস। তার অনুমান বছে, সময়ের সঙ্গে সঙ্গে এর ব্যবহার আরও সাধারণ বিষয় হয়ে উঠবে।
উইলিয়ামসের মতে, শুধু সিক্রেট সার্ভিসই নয়, বরং গোটা বিশ্বের সামরিক ও আইনপ্রয়োগকারী সংস্থাগুলোতে রোবটিক কুকুর ব্যবহারের প্রচলন বাড়বে। উৎস: বিডিনিউজ২৪
আপনার মতামত লিখুন :