শিরোনাম
◈ সাত কলেজের বিষয়ে সিদ্ধান্ত জানাল সরকার ◈ ডিজেল ও কেরোসিনের দাম কমাল সরকার ◈ ১০০ টাকার প্রাইজবন্ডের ‘ড্র’ অনুষ্ঠিত,  ৬ লাখ টাকার পুরস্কার পেলেন যিনি ◈ জাতীয় পার্টির কার্যালয়ে আগুন, ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়া (ভিডিও) ◈ এবার জাতীয় পার্টিকে উৎখাতের ঘোষণা হাসনাত আব্দুল্লাহ ◈ স্পিকারের প্রশাসনিক ও আর্থিক দায়িত্ব পালন করবেন আইন উপদেষ্টা ◈ ভারতের সাংবাদিকরা আমাকে প্রশ্ন করে ইউনূস কী ফেল করেছে: মির্জা ফখরুল ◈ আমাদের রিজার্ভ বাড়ছে, ঘুরে দাঁড়াচ্ছে অর্থনীতি: বাণিজ্য উপদেষ্টা ◈ যুক্তরাষ্ট্রে নির্বাচনে নানা সমীকরণ, কে জিতবে ?  ◈ নির্বাচনের প্রক্রিয়া শুরু, নড়েচড়ে বসছেন রাজনীতিবিদরা

প্রকাশিত : ৩১ অক্টোবর, ২০২৪, ০২:১২ দুপুর
আপডেট : ৩১ অক্টোবর, ২০২৪, ০৭:০০ বিকাল

প্রতিবেদক : নিউজ ডেস্ক

কোয়ান্টাম টানেলিং কি?

বিজ্ঞান ডেস্ক : একটা টেনিস বলকে দেয়ালে ছুড়ে মারলে ধাক্কা খেয়ে ফিরে আসবে। দেয়াল ফুঁড়ে বেরিয়ে যাবে না। এটাকে কমন সেন্স বা সাধারণ কাণ্ডজ্ঞান বলে। কিন্তু বলের জায়গায় ইলেকট্রন ছুড়লে কী হবে? এ ক্ষেত্রে অদ্ভুত কিছু ঘটবে, যা আমাদের সাধারণ কাণ্ডজ্ঞান দিয়ে ব্যাখ্যা করা যায় না। অতিপারমাণবিক কণা দেয়াল ভেদ করে চলে যেতে পারে। কোয়ান্টাম কণার পক্ষে এটা সম্ভব। এই ঘটনার নাম কোয়ান্টাম টানেলিং।

 
কোয়ান্টাম টানেলিং বেশ জটিল ব্যাপার। নিউটনীয় বলবিদ্যায় এটা অসম্ভব। কিন্তু কোয়ান্টাম জগতে এসব হরহামেশাই ঘটে। ফরাসি বিজ্ঞানী লুই ডি ব্রগলি বলেন, ইলেকট্রন একইসঙ্গে কণা ও তরঙ্গ দুই অবস্থাতেই থাকতে পারে। শ্রোডিঙ্গারের সমীকরণ কোনো বিন্দুতে ইলেকট্রনের অবস্থানের সম্ভাবনা কতটুকু জানায়।


সঙ্গে এটাও জানায়— ইলেকট্রন পাওয়ার সম্ভাবনা শূন্য হবে না। ইলেকট্রন তরঙ্গ হলে এর বিস্তারও রয়েছে। বিস্তার এখানে গুরুত্বপূর্ণ। যথেষ্ট পাতলা ও ইলেকট্রন-তরঙ্গের বিস্তারের চেয়েও কম পুরুত্বের দেয়ালে আঘাত করা ইলেকট্রন সহজে বেরিয়ে যেতে পারে। ইলেকট্রন যখন দেয়ালের দিকে ধাবিত হয়, এর গতি ধীরে ধীরে কমে যায় এবং বিস্তার সংকুচিত হতে থাকে।


ফলে বেশিরভাগ ইলেকট্রন দেয়াল ভেদ করতে পারে না, ফিরে আসে।
তবে, শুরুতে ইলেকট্রনের বিস্তার যদি দেয়ালের পুরুত্বের চেয়ে বেশি থাকে, সেক্ষেত্রে দেয়ালের অপর পাশে ইলেকট্রনের থাকার একটি ক্ষীণ সম্ভাবনা তৈরি হয়। আর শ্রোডিঙ্গারের সমীকরণ অনুযায়ী, এই সম্ভাবনা কখনও শূন্য হতে পারে না। ফলে দু-একটা ইলেকট্রন দেয়াল ফুঁড়ে বেরিয়ে যেতে পারে।


২০১৯ সালে বিজ্ঞানীরা সফলভাবে টানেলিং পরীক্ষা সম্পন্ন করেন। তাঁরা হাইড্রোজেন থেকে একটি ইলেকট্রন বের করে টানেলিং পর্যবেক্ষণ করেন। সূর্যের কেন্দ্রস্থলেও প্রতিনিয়ত এই ঘটনা ঘটে, যা সূর্যের শক্তি উৎপাদনের খুবই গুরুত্বপূর্ণ অংশ। কোয়ান্টাম কণা যেকোনো বস্তু বা শক্তির বাধা অনায়াসে টপকে যেতে পারে। এই ঘটনাকে বলা হয় কোয়ান্টাম টানেলিং। ক্লাসিকাল পদার্থবিজ্ঞানে এ কাজটি করার জন্য কণার পর্যাপ্ত শক্তি থাকে না।


বাস্তব জীবনে কোয়ান্টাম টানেলিংয়ের অসংখ্য উদাহরণ রয়েছে। আধুনিক সেমিকন্ডাক্টর, দেহকোষে এনজাইম—এ সবই টানেলিং পদ্ধতিতে কাজ করে। তবে এতে অসুবিধাও কম নয়। যুগে যুগে আকারে ছোট হচ্ছে ট্রানজিস্টর। পুরুত্ব কমে আসছে এর অন্তরক আবরণের।

কিছু ট্রানজিস্টরের অন্তরকের পুরুত্ব কয়েকটা পরমাণুর সমান। ফলে ইলেকট্রন সহজেই এই আবরণ অতিক্রম করতে পারে। এতে পুরো যন্ত্রই বিকল হয়ে পড়ে। তবে এর সমাধান রয়েছে। সিলিকন ডাইঅক্সাইড অন্তরকের পরিবর্তে হাফনিয়াম ডাইঅক্সাইড ব্যবহার করলে এই ঝামেলা কমে আসবে।


সম্পর্কিত তত্ত্ব

বিজ্ঞানী ফ্রিডরিখ হুন্ড ১৮৯৬-১৯৯৭ জার্মান পদার্থবিদ, কোয়ান্টাম রসায়নের অগ্রদূতদের একজন, অণুর বর্ণালিতে কোয়ান্টাম টানেলিংয়ের প্রভাব বর্ণনা করেছিলেন।

জর্জ গ্যামো ১৯০৪-১৯৬৮ সোভিয়েত বংশোদ্ভূত মার্কিন তাত্ত্বিক পদার্থবিদ, আলফা ক্ষয়ে কোয়ান্টাম টানেলিংয়ের প্রভাব পর্যবেক্ষণ করেছিলেন।

জর্জ গ্যামো
১৯০৪-১৯৬৮
সোভিয়েত বংশোদ্ভূত মার্কিন তাত্ত্বিক পদার্থবিদ, আলফা ক্ষয়ে কোয়ান্টাম টানেলিংয়ের প্রভাব পর্যবেক্ষণ করেছিলেন।

গার্ড বিনিং এবং হেনরিখ রোরার
১৯৪৭— বর্তমান ১৯৩৩-২০১৩
যথাক্রমে জার্মান ও সুইস উদ্ভাবক, টানেলিং ধর্ম ব্যবহার করে বিশেষ এক মাইক্রোস্কোপ (এসটিএম) উদ্ভাবন করেছিলেন, যে উদ্ভাবনের জন্য ১৯৮৬ সালে তাঁদের যৌথভাবে নোবেল পুরস্কার দেওয়া হয়।

সুত্র কালের কণ্ঠ

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়