শিরোনাম
◈ রাজধানীর শ্যামপুর থানা ছাত্রলীগের সভাপতি রনি গ্রেফতার ◈ টাকা না পেয়ে ন্যাশনাল ব্যাংকে তালা দিলেন গ্রাহকরা ◈ দেখে মনে হয় স্কুল পড়ুয়া কিশোর, বয়স ২২, করেন মাদক ব্যবসা ◈ ৭ কলেজ শিক্ষার্থীদের আন্দোলন প্রসঙ্গে যা বললেন শিক্ষা উপদেষ্টা ◈ চার ঘণ্টা করে ট্রাফিকের দায়িত্বে থাকবে ৭০০ যুবক: উপদেষ্টা আসিফ (ভিডিও) ◈ ‘তোমরা রাস্তা বন্ধ করবা, আমরা কি আঙ্গুল চুষবো’ সাধারণ মানুষের আবেগেরই বহিঃপ্রকাশ (ভিডিও) ◈ শেখ হাসিনাকে ফেরত চাওয়ার বিষয়ে যা বললেন ড. মুহাম্মদ ইউনূস ◈ অলিম্পিক ক্রিকেট সরে যাচ্ছে নিউ ইয়র্কে ◈ শান্তকে টেস্ট ও ওয়ানডেতে রেখে টি-টোয়েন্টিতে সোহানকে অধিনায়ক করা য়ায়: আশরাফুল ◈ বিদ্যুৎ, পানি এবং অন্যান্য অবকাঠামো প্রকল্পের ক্ষেত্রে দিল্লির সমর্থনের অভাব রয়েছে : ড. ইউনূস

প্রকাশিত : ০৫ ফেব্রুয়ারি, ২০২৪, ০৪:১৪ দুপুর
আপডেট : ০৫ ফেব্রুয়ারি, ২০২৪, ০৪:১৪ দুপুর

প্রতিবেদক : নিউজ ডেস্ক

যে দেশে মুসলিমদের মরদেহ দাফন করা কঠিন

 ক্যাপশন: জাপানে এক শতাংশেরও কম মানুষ মুসলিম 

ইকবাল খান: [২] জাপানে মুসলিমরা খুবই ছোট একটি সংখ্যালঘু সম্প্রদায়। মাত্র লাখ দুয়েক মুসলিম নাগরিকের বাস দেশটিতে। তবে এই দেশের মোট জনসংখ্যা প্রায় ১২ কোটি।

[৩] বিবিসি জানায়, জাপানি নাগরিকদের মধ্যে শতকরা ৯৯ ভাগই মৃতদেহ বৌদ্ধ ধর্মীয় বিশ্বাস কিংবা শিন্তো রীতি অনুযায়ী পুড়িয়ে ফেলে। 

[৪] কাজেই মুসলিমরা সেখানে কিছু বিধিনিষেধের মধ্যে আটকে গেছে। ইসলামে মরদেহ পোড়ানো নিষিদ্ধ এবং মুসলিমরা সাধারণত তাদের মরদেহ মৃত্যুর ২৪ ঘণ্টার মধ্যে দাফন করে থাকে।

[৫] অনেক পরিবার মরদেহকে যথাযথভাবে ইসলামী রীতি অনুযায়ী কবর দেওয়ার জন্য শত শত কিলোমিটার দূরে যেতে বাধ্য হয়। “তারপরও আমার নিকটাত্মীয় কাউকে হয়ত মৃত্যুর পর পুড়িয়ে ফেলতে হতে পারে, এই চিন্তায় আমি রাতে ঘুমাতে পারি না,” আবেগ তাড়িত হয়ে বলছিলেন তাহির আব্বাস খান, যিনি ২০০১ সালে পিএইচডি ডিগ্রি অর্জনের জন্য জাপানে এসেছিলেন।

[৬] পাকিস্তানের বংশোদ্ভূত এই ব্যক্তি এখন একটি বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রভাষক এবং জাপানের নাগরিক। তিনি তার সম্প্রদায়ের মধ্যে বেশ সক্রিয় এবং তিনি বেপ্পু মুসলিম অ্যাসোসিয়েশন প্রতিষ্ঠা করেছেন।

[৭] ড. খান বলেন, ‘শেষকৃত্য হচ্ছে কোনও একটি মানুষের জন্য আপনি সর্বশেষ যা করতে পারেন সেই কাজ। আমি যদি আমার কোনও আত্মীয় বা বন্ধুকে মর্যাদাপূর্ণভাবে দাফন করতে না পারি, আমি স্বাভাবিক জীবনযাপন করতে পারবো না।’

[৮] দক্ষিণাঞ্চলের কিয়ুশু দ্বীপের ওইতা এলাকায় প্রথম মসজিদ স্থাপন করা হয় ২০০৯ সালে। কিন্তু সেখানে থাকা প্রায় দুই হাজার মুসলিমের জন্য একটি কবরস্থান স্থাপনের প্রক্রিয়া এখনও পরিকল্পনা পর্যায়েই আটকে রয়েছে।

[৯] মুহাম্মদ ইকবাল খান ২০০৪ সালে পাকিস্তান থেকে তার স্ত্রীর সাথে জাপানে এসেছিলেন। টোকিওর কাছে তিনি একটি গাড়ি রপ্তানির ব্যবসা গড়ে তোলেন। পরে তিনি তার ব্যবসা পার্শ্ববর্তী ফুকুয়া শহরে স্থানান্তরিত করেন।

[১০] যখন তার স্ত্রী ২০০৯ সালে একটি মৃত শিশুকে জন্ম দিলেন, তখন ওই এলাকায় মুসলিমদের জন্য কোনও কবরস্থান ছিল না।

[১১] “আমরা মরদেহটি একটি ছোট বাক্সে ঢুকিয়ে গাড়িতে তুলি। তারপর গাড়ি চালিয়ে প্রায় এক হাজার কিলোমিটার দূরে ইয়ামানাশিতে নিয়ে যাই,” দীর্ঘশ্বাস ছেড়ে বলেন খান। “আমার চার বন্ধু আমার সাথে গিয়েছিল। আমরা সবাই অদল-বদল করে গাড়ি চালিয়ে সেখানে পৌঁছাই।”

[১২] জাপানের কেন্দ্রীয় অঞ্চলে অবস্থিত ইয়ামানাশি সমাধিস্থল খ্রিস্টান ও মুসলিমরা ব্যবহার করে। খ্রিস্টানরাও জাপানের একটি সংখ্যালঘু সম্প্রদায়। দেশটির জনসংখ্যার মাত্র এক শতাংশের কিছু বেশি খ্রিস্টান ধর্মাবলম্বী।

[১৩] ড. খানের সংস্থা বেপ্পুতে খ্রিস্টান সমাধিস্থলের পাশে একটি জমি কেনে। এই জমির পাশে যাদের জমি ছিল তারা “অনাপত্তিপত্র” দিলেও তিন কিলোমিটার দূরে বসবাসরত একটি সম্প্রদায় এতে আপত্তি জানায়।

[১৪] ড. খান বলেন, “তারা বলে যে, মরদেহ কবর দেয়া হলে তা মাটির নিচের পানিকে দূষিত করে ফেলবে। এছাড়া লেকের পানিও দূষিত হয়ে যাবে যা সেচকাজে ব্যবহার করা হয়।”

[১৫] কিন্তু রিওকো সাতোর জন্য এই পথও খোলা নেই। কারণ তিনি একজন জাপানি নাগরিক যিনি ধর্মান্তরিত মুসলিম। তিনিও কিয়ুশু দ্বীপে বসবাস করেন।

[১৬] সাতো বলেন, কবর দেওয়ার বিরোধিতার পেছনে “সাংস্কৃতিক কুসংস্কার” কাজ করেছে। “অনেক মানুষ মনে করে যে, কবর দেওয়াটা ভয়ঙ্কর কিংবা আপত্তিকর কোনও বিষয়। কিন্তু মাত্র কয়েক প্রজন্ম আগেও জাপানে কবর দেওয়াটা বেশ স্বাভাবিকই ছিল,” বলেন সাতো।

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়