এ্যানি আক্তার: রূপকথা বা ভৌতিক গল্পের পাতায় তুষার ঢাকা পাহাড়ে সাদা চিতার দৃশ্য প্রায়ই দেখা যায়। এবার এ চিত্রই দেখা গেল বাস্তবে। তুষার আবৃত পাহাড়ের চূড়ায় বসে আছে শুভ্র চিতাবাঘ। তুষারের ওপর পূর্ণচাঁদের প্রতিফলন এ চিত্রকে করে তুলেছে আরও আকর্ষণীয়। অসাধারণ এ দৃশ্যটি ধারণ করেছেন যুক্তরাষ্ট্রের আলোকচিত্রী কিত্তিয়া পাওলস্কি। তার ধারণ করা ছবিতে দেখা যায়, নেপালের খুম্বু হিমবাহের ‘ফ্যান্টম অ্যালি’ বরফ চূড়ার ওপর একটি তুষার চিতা বসে আছে। এই খুম্বু হিমবাহের উপত্যকায় জন্ম নিয়েছিলেন প্রথম এভারেস্ট বিজয়ী তেনজিং নোরগে। এনডিটিভি
পাওলস্কি জানান, হেঁটে ১৬৫ দশমিক ৭ কিলোমিটার আরোহণ করার পর এ চিত্রটি তিনি ধারণ করেন। এ সময় তিনি দেখতে পান ফ্যান্টম অ্যালি বরফ চূড়ার একটি স্থানে একটি তুষার চিতা বসে আছে। দিনটি ছিল ৯ অক্টোবর। পূর্ণিমায় চাঁদের আলো বরফের ওপর প্রতিফলিত হয়ে দৃশ্যটিতে একটি ভৌতিক আবহ তৈরি করেছিল। রাত ৪টায় তিনি তার ক্যামেরা ও অন্যান্য জিনিস নিয়ে গোরক্ষেপের উত্তরপূর্ব দিকে এগোতে থাকেন।
এ সময় পাহাড়ের ওপর তুষারগুলোকে হীরার মতো দেখাচ্ছিল।এমন বিরল ছবি তুলতে পারার জন্য কম কষ্ট করতে হয়নি কিত্তিয়াকে। কয়েক দিন তাকে কাটাতে হয়েছে ঠান্ডা বরফাবৃত ওই এলাকায়। পাড়ি দিতে হয়েছে দেড় শ কিলোমিটারেরও বেশি পথ। এই বিষয়ে কিত্তিয়া জানান, ছবিটি তোলার জন্য সব মিলিয়ে হেঁটে তাকে ১৬৫ কিলোমিটারেরও বেশি দূরত্ব অতিক্রম করতে হয়েছে।
নিজের তোলা ছবি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ইনস্টাগ্রামে শেয়ার করেছেন কিত্তিয়া। ক্যাপশনে লিখেছেন, ‘ভূতের গলি হিমবাহের চূড়ায় একটি তুষার চিতা বসে রয়েছে। ৯ অক্টোবর রাতে চাঁদের ভৌতিক আলোয় ভেসে যাচ্ছিল হিমালয় চূড়া। কৃত্রিম আলো ছাড়াই দেখা যাচ্ছিল চারদিক. সাধারণত তুষার চিতা সন্ধ্যা থেকে শুরু করে ভোর পর্যন্ত সক্রিয় থাকে। তাই এমন একটি দৃশ্য ক্যামেরাবন্দি করতে আমাকে ঝুঁকি নিতেই হলো। ভোর ৪টার দিকে পায়ে জুতা গলিয়ে আমি বেরিয়ে পড়লাম। সঙ্গে ২৫ পাউন্ড ওজনের ক্যামেরার আনুষঙ্গিক যন্ত্রপাতি।’
একই হিমবাহে তুষার চিতার আরেকটি ছবি শেয়ার করে কিত্তিয়া লিখেছেন, ‘পৃথিবির অন্যতম নিষিদ্ধ ঘোষিত এলাকায় হেঁটে যাওয়ার পথে, প্রায় অক্সিজেনশূন্য বিরান এলাকা থেকে সবচেয়ে কঠিন ও ফলপ্রসূ ছবিটি আমি তুলেছি।’
এদিকে, সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছবিগুলো শেয়ার হওয়ার পরপরই তা ভাইরাল হয়েছে। এরই মধ্যে কয়েক হাজার মানুষ ছবিগুলোতে লাইক দিয়েছেন, মন্তব্যও করেছেন অনেকে। সম্পাদনা: খালিদ আহমেদ
এএ/কেএ/এএ
আপনার মতামত লিখুন :