শিরোনাম

প্রকাশিত : ১২ অক্টোবর, ২০২২, ০৪:২৩ দুপুর
আপডেট : ১২ অক্টোবর, ২০২২, ০৬:৫৪ বিকাল

প্রতিবেদক : নিউজ ডেস্ক

আসক্তি কমাতে যে গ্রামে নিয়ম করে বন্ধ রাখা হয় টিভি-মোবাইল

নিয়ম করে বন্ধ রাখা হয় টিভি-মোবাইল

হ্যাপী আক্তার: আধুনিক বিশ্ব প্রযুক্তিনির্ভর। জীবনকে সহজতর করে তোলতে প্রযুক্তির অবদান খাটো করে দেখার অবকাশ নেই। আমাদের চারপাশের সবক্ষেত্রেই প্রযুক্তির ব্যবহার দেখতে পারি। তবে এমন এক গ্রাম আছে যেখানে ঠিক সন্ধে ৭টায় টিভি-ফোন সব বন্ধ হয়ে যায়। আনন্দবাজার

প্রযুক্তি ব্যবহারের প্রতি আসক্তি কমিয়ে বাসিন্দাদের মধ্যে কথাবার্তা বাড়াতে এমন অভিনব উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে ভারতের মহারাষ্ট্রের সাঙলি জেলার ভাদগাঁও গ্রামে। 

সন্ধ্যা ৭টা বাজলেই গ্রামটিতে সাইরেন বেজে ওঠে। তবে সেটা কোনো বিপৎসংকেত নয়। ওই সাইরেনের অর্থ হলো গ্রামবাসীকে এখন টিভি আর মোবাইল ফোন বন্ধ করতে হবে। গ্রামপরিষদ কর্তৃপক্ষ রাত সাড়ে ৮টায় ফের সাইরেন বাজালে তবেই চালু করা যাবে এই দুই আধুনিক ডিভাইস।

টিভি আর মোবাইল ফোন বন্ধ করার কারণ হলো মোবাইলের প্রতি আসক্তি দিন দিন বেড়েই চলছিল। কিন্তু গত দু’বছরে করোনা পরিস্থিতিতে এই আসক্তি আরও ভয়ঙ্কর মাত্রা বৃদ্ধি পেয়েছে। শিশুরা মোবাইলের প্রতি এতোটাই নির্ভরশীল হয়ে পড়ছে, যে তার প্রভাব পড়ছে শিশুদের মানসিক ও শারীরিক স্বাস্থ্যের উপর। সম্প্রতি ভারতের একটি পরিসংখ্যানেও ধরা পড়েছে সেই উদ্বেগের ছবি।

তবে বলা চলে এই পরিস্থিতিতে মহারাষ্ট্রের একটি গ্রামের উদ্যোগ সত্যিই অভিনব। এই গ্রামে প্রতি দিন একটা নির্দিষ্ট সময়ের জন্য সকল গ্রামবাসীকে মোবাইল-টিভি থেকে দূরে থাকার নিয়ম জারি হয়েছে। সাংলি জেলার ভাদগাঁও গ্রামে প্রতি সন্ধে ৭টায় একটি সাইরেন বাজে। এই সাইরেনই বাসিন্দাদের তাদের টিভি এবং মোবাইল ফোন বন্ধ রাখার ইঙ্গিত দেয়। সাড়ে ৮টার সময় ফের সাইরেন বাজে। তখন থেকে গ্রামবাসীরা আবার টিভি বা মোবাইল ফোন ব্যবহার করতে পারেন।

গ্রাম পঞ্চায়েতের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয় হয় টিভি-মোবাইলের প্রতি আসক্তি কমাতে একটা উদ্যোগ নেওয়া দরকার। তখনই সিদ্ধান্ত হয় পরের দিন থেকে প্রতি দিন একটা নির্দিষ্ট সময়ের জন্য গ্রামবাসীদের বন্ধ রাখতে হবে মোবাইল-টিভির ব্যবহার। ভাদগাঁও গ্রামে প্রায় ৩ হাজার লোক বাস করেন। গ্রামের বেশির ভাগ পুরুষরাই হয় কৃষি কাজের সঙ্গে যুক্ত আর না হয় চিনি তৈরির কারখানায় কাজ করে।

গ্রাম পঞ্চায়েতের প্রধান বিজয় মোহিতে বলেন, কোভিড-১৯ চলাকালীন অনলাইন ক্লাসের জন্য শিশুরা মোবাইলের উপর বেশি নির্ভরশীল হয়ে পড়েছিল। এখন স্কুল-কলেজ খুলেছে। তবে সেখান থেকে ফিরেই হয় তারা মোবাইল নিয়ে বসে না হয় টিভি দেখে। বাড়ির বড়রাও ফোন নিয়েই সারাদিন ব্যস্ত থাকেন। নিজেদের মধ্যে কথা বলার অবসর পান না তারা।

বিজয় মোহিতে জানান, গত ১৪ আগস্ট গ্রাম বৈঠকে এই প্রযুক্তি আসক্তি বন্ধ করার সিদ্ধান্ত চূড়ান্ত হয়। সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, পরের দিন থেকে সাইরেন বাজতেই সব টিভি এবং মোবাইল বন্ধ করে দেওয়া হয়।

তবে গ্রামবাসীদের এই বিষয়ে রাজি করানো খুব একটা সহজ কাজ ছিলো না। প্রথমে গ্রাম পঞ্চায়েত সদস্যদের বাড়ি বাড়ি গিয়ে মোবাইল-টিভি বন্ধ রাখার অনুরোধ জানাতে হতো। তবে এখন সারা গ্রাম নিজে থেকেই এই নিয়ম মেনে চলে। 

এবি/ এইচএ

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়