মিনহাজুল আবেদীন: প্রেমের টানে দেশে আসা ভিনদেশি প্রেমিক-প্রেমিকাদের সংসার না টিকলেও ঘর বাঁধার স্বপ্ন নিয়ে কুড়িগ্রামের ফুলবাড়ীতে আসা ফিলিপাইনের তরুণী ইয়াসমিনের সংসার ভালোই কাটছে। ওই তরুণী বাংলাদেশি প্রেমিক যুবকের ভালোবাসার টানে ঘর বাঁধার স্বপ্ন নিয়ে সুদূর সিঙ্গাপুর থেকে ছুটে এসেছেন। বর্তমানে তার সংসার জীবন ভালোই কাটছে। র্দীঘ ৪ বছরের সংসার তাদের। তরুণীর ব্যবহারে মুগ্ধ স্বামী রুবেল আহমেদসহ পরিবারের সবাই। আত্মীয়-স্বজনসহ প্রতিবেশিরাও মুগ্ধ।
সম্প্রতি দেশে ভিনদেশি প্রেমিক-প্রেমিকারা ভালোবাসার টানে ঘর-বাঁধার স্বপ্ন নিয়ে আসলেও সেই সংসার বেশিদিন টিকছে না।
জানা গেছে, বাংলাদেশে আসার ৪ বছরের সংসার জীবনে ফিলিপাইনের তরুণী ৬ বার ফিলিপাইন টু বাংলাদেশে যাওয়া-আসা করেছেন। সর্বশেষ চলতি বছরের ১৪ জুলাই স্বামী রুবেলের বাড়ি থেকে ফিলিপাইনে যান ওই গৃহবধূ।
জানা গেছে, ২০০৮ সালে সিঙ্গাপুর গিয়ে একটি গ্লাস কোম্পানিতে চাকরির সুযোগ পান রুবেল। সেখানে কর্মরত থাকায় ২০১০ সালে তরুণীর সঙ্গে পরিচয় হয়। সেই পরিচয় থেকেই তাদের মাঝে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে ওঠে। দীর্ঘ ৪ বছরের প্রেমের সম্পর্কের বিষয়টি দুই পরিবারের মধ্যে জানাজানি হলে তাদের সম্মতিতে সিঙ্গাপরেই ২০১৪ সালে খ্রিস্টান ধর্ম ত্যাগ করে ইসলাম গ্রহণ করে বাংলাদেশি যুবক রুবেল আহমদকে বিয়ে করেন তরুণী।
ইয়াসমিন বলেন, শ্বশুর-শাশুড়িসহ বাড়ির সবাই অনেক আদর করেন আমাকে। গ্রামবাসী অমায়িক খুব। আমার স্বামী খুব ভালো মানুষ। কখনো কষ্ট দেন না আমাকে।
রুবেল বলেন, ভিনদেশি হলেও আমাদের আপন করে নিয়েছে সে। তাকে আমার পরিবারসহ সবাই অত্যন্ত আদর করে, স্নেহ করে। আমরা মুগ্ধ তার ভালোবাসায়।
রুবেলের বাবা বেলাল হোসেন ও মা নুরজাহান বেগম বলেন, আমাদের দুই ছেলে। বড় ছেলে রুবেল সিঙ্গাপুরে থাকাকালীন মেয়ের সঙ্গে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে ওঠে। ছেলে তাকে বিয়ের কথা বললে আমরা সম্মতি দেই। কারণ ছেলের সুখেই আমাদের সুখ। ছেলের বউ খুবই ভালো। সে একজন বিদেশি নারী হলেও বাঙালি বধূর মতো শ্বশুর-শাশুড়িকে খুবই যত্ন করেন এবং ভালোবাসেন। তার ব্যবহারে আমরা মুগ্ধ।
স্থানীয় আজিজুল ইসলাম ও আনোয়ার হোসেন জানান, গ্রামে অনেক বাংলাদেশি গৃহবধূর চেয়ে ফিলিপাইনের বউ অনেক ভালো। আমাদের কথা বুঝতে না পারলেও তার ব্যবহারে আমরা মুগ্ধ। তিনি ইশারায় সব কিছুই বোঝেন। আমরা তার দাম্পত্য জীবন সুখময় হয় এই কামনাই করছি।
ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান গোলজার হোসেন মন্ডল বলেন, সম্প্রতি আমাদের দেশে আসা ভিনদেশি প্রেমিক-প্রেমিকা ভালোবাসার টানে ঘর-বাঁধার স্বপ্ন নিয়ে আসলেও অধিকাংশের সংসার টেকে না এবং তারা নিজ দেশে ফিরে যান। তবে আমার প্রতিবেশি মামাতো ভাই রুবেলের বউ ৪ বছর ধরে সুখে-শান্তিতে সংসার করছে। তাদের সংসার জীবনে আরো সুখ বয়ে নিয়ে আসুক এই কামনা করছি। ইত্তেফাক
আপনার মতামত লিখুন :