ব্রাজিলের দক্ষিণাঞ্চলের লাগুনা অঞ্চল। প্রজন্ম থেকে প্রজন্মান্তরে এখানে মানুষের সঙ্গে জোটবদ্ধ হয়ে মাছ শিকার করে ডলফিনের দল। সম্প্রতি ড্রোন ভিডিও বিশ্লেষণে এই সহযোগিতার নিখুঁত কৌশল উঠে এসেছে। এ সংক্রান্ত একটি গবেষণা সম্প্রতি কারেন্ট জুলজি জার্নালে প্রকাশিত হয়েছে।
কাদাময় লেগুনের পানিতে ডলফিনেরা মাছের ঝাঁককে তীরের দিকে তাড়িয়ে নিয়ে যায়। জেলেরা ডলফিনের সংকেতের অপেক্ষায় থাকে। ডলফিন কর্তৃক পানিতে পুচ্ছের আঘাত বা হঠাৎ ডুব দেয়ার মুহূর্তে জাল ছোড়ে জেলেরা। এতে মানুষের জালে মাছ ওঠার পাশাপাশি ডলফিনেরা জালের বাইরে আটকে যাওয়া মাছ শিকার করে।
ওরেগন স্টেট ইউনিভার্সিটির সামুদ্রিক স্তন্যপায়ী প্রাণী বিশেষজ্ঞ মাউরিসিও ক্যান্টরের ভাষায়, এ যেন ঠিক দুটি শীর্ষ শিকারীর পরিপূরক দক্ষতার সমন্বয়, যা প্রকৃতিতে বিরল।
২০১৮ সালে মুলেট মাছের প্রজনন মৌসুমে ১৮ দিন ধরে ড্রোন দিয়ে ৪৫টি ভিডিও রেকর্ড করা হয়। এর মধ্যে মাত্র ৯টিতে যৌথ সাফল্য আসে। গবেষকরা ডলফিনের তিনটি আচরণ পর্যবেক্ষণ করেন। দেখা যায়, ডলফিন যখন একাধিক পথ থেকে মাছ তাড়া করে এবং একসঙ্গে ডুব দেয় তখন সাফল্যের সম্ভাবনা বাড়ে। স্পেনের বোটলনোজ ডলফিন রিসার্চ ইনস্টিটিউটের জীববিজ্ঞানী ব্রুনো ডিয়াজ লোপেজ বলেন, এটি প্রজাতিগত সমন্বয়ের জটিল নমুনা, যা ডলফিনদের মানবসৃষ্ট পরিস্থিতির সঙ্গে খাপ খাইয়ে নেয়ার দক্ষতা প্রমাণ করে।
মাউরিসিও ক্যান্টরের ভাষায়, এটি প্রমাণ করে, প্রকৃতির সঙ্গে আমাদের সম্পর্ক একপেশে নয়—পারস্পরিক সুবিধারও হতে পারে। বর্তমানে ক্যান্টরের দল ড্রোন ভিডিও থেকে ডলফিনের আচরণের প্যাটার্ন শনাক্ত করতে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা মডেল তৈরি করছেন। পাশাপাশি, জেলেদের শারীরবৃত্তীয় তথ্য বিশ্লেষণ করে বোঝার চেষ্টা চলছে—কোন মুহূর্তে তারা জাল ফেলার সিদ্ধান্ত নেয়। সূত্র: বণিক বার্তা