স্পোর্টস ডেস্ক ; দুর্দান্ত লড়াই হয়েছে দুই দলের মধ্যে, আকর্ষণীয় এই ম্যাচে রিয়াল মাদি্রদকে বিদায় করে উয়েফা চ্যাম্পিয়নস লিগের সেমিফাইনালে উঠেছে আর্সেনাল। মিকেল আরতেতার আর্সেনাল প্রথম লেগে ৩–০ গোলে এগিয়ে থাকার পর বুধবার (১৬ এপ্রিল) বার্নাব্যুর ভয়কেও জয় করে ফেলল। ফিরতি লেগে আর্সেনাল জিতল ২–১ ব্যবধানে।
তাতে দুই লেগ মিলিয়ে ৫–১ অগ্রগামিতায় চ্যাম্পিয়নস লিগের সেমিফাইনালে পৌঁছে গেল লন্ডনের ক্লাবটি। বর্তমান চ্যাম্পিয়ন রিয়ালকে থমকে যেতে হলো এখানেই।
ম্যাচ শুরুর দ্বিতীয় মিনিটেই ম্যাচের উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে। ভিনিসিউস জুনিয়রের ক্রসে জাল খুঁজে পান কিলিয়ান এমবাপে, তবে স্পষ্ট অফসাইডে থাকায় গোলটি বাতিল হয়ে যায়। পরের মিনিটে আবারও বাঁ দিক থেকে আক্রমণ সাজান ব্রাজিলিয়ান তারকা, তবে এবার এমবাপেকে ডি-বক্সে খুঁজে পেতে ব্যর্থ হন তিনি।
এরপরের চার মিনিটে দুটি দারুণ সুযোগ তৈরি করে আর্সেনাল। প্রথম লেগে দুর্দান্ত খেলা বুকায়ো সাকা দুটি শট নেন প্রথমটি লক্ষ্য ভ্রষ্ট হলেও, দ্বিতীয়টি কর্নারে পাঠাতে ঝাঁপিয়ে পড়েন থিবো কোর্তোয়া।
সেই কর্নার থেকেই এক সুবর্ণ সুযোগ আসে আর্সেনালের সামনে। বলটি গ্লাভসে ধরলেও, ছয় গজ বক্সের বাইরে মিকেল মেরিনোকে ফাউল করে বসেন রাউল আসেন্সিও। রেফারি প্রথমে কিছু না দেখলেও, ভিএআরে দেখে শেষমেশ পেনাল্টির নির্দেশ দেন তিনি।
২৩তম মিনিটে রিয়ালের আক্রমণে আবারও বিতর্ক। ডেক্লান রাইসের চ্যালেঞ্জে এমবাপে পড়ে গেলে সঙ্গে সঙ্গেই পেনাল্টির বাঁশি বাজান রেফারি। তবে আর্সেনালের খেলোয়াড়রা তীব্র প্রতিবাদ জানায়, এবং ভিএআর দেখে শেষপর্যন্ত নিজের সিদ্ধান্ত পাল্টান রেফারি।
মিনিট গড়ানোর সঙ্গে সঙ্গে রিয়ালের আক্রমণভাগে সমন্বয়ের অভাব প্রকট হয়ে ওঠে। ব্যক্তিগত পারফরম্যান্সেও জৌলুশের ঘাটতি দেখা যায়। আর্সেনাল রক্ষণভাগে দৃঢ়তা দেখায়, ফলে প্রথমার্ধে ছয়টি শট নিয়েও একটিও লক্ষ্যে রাখতে ব্যর্থ হয় বর্তমান চ্যাম্পিয়নরা।
বিরতির আগে আবারও পরীক্ষা দিতে হয় কোর্তোয়াকে। গ্যাব্রিয়েল মার্তিনেল্লির জোরালো শট দুরূহ কোণ থেকে ঠেকিয়ে দেন তিনি, বাঁচিয়ে রাখেন দলের আশার আলো।
৫৬তম মিনিটে রিয়াল মাদ্রিদের পক্ষ থেকে প্রথম লক্ষ্যে শট আসে। তবে বেলিংহ্যামের পাস পেয়ে আক্রমণে গতি না বাড়িয়ে ধীরগতি দেখান ভিনিসিউস, এবং তার শট অনায়াসে ধরে ফেলেন গোলরক্ষক। ঠিক পরের মিনিটে রদ্রিগোর কর্নারে বল জালে যাওয়ার পথে ছিল, কিন্তু শেষ মুহূর্তে বল ক্রসবারের উপর দিয়ে বাইরে পাঠিয়ে দেন দাভিদ রায়া।
৬১তম মিনিটে একসঙ্গে তিনটি পরিবর্তন আনেন রিয়াল কোচ কার্লো আনচেলত্তি রদ্রিগো, ডাভিড আলাবা ও লুকাস ভাসকেসের বদলে নামান দানি সেবাইয়োস, ফ্রান গার্সিয়া ও এন্দ্রিককে।
তবে নতুন উদ্যমে ফিরে আসার বদলে উল্টো গোল হজম করতে হয় চার মিনিটের মধ্যে। মেরিনোর নিখুঁত থ্রু পাসে বুকায়ো সাকা ছোট পাসে সাজানো আক্রমণে এগিয়ে এসে চিপ শটে বল তুলে দেন কোর্তোয়ার ওপর দিয়ে। গোলটি বৈধ ছিল, কারণ গোলের সময় তিনি প্রতিপক্ষের চার ডিফেন্ডারের সঙ্গেই একই লাইনে ছিলেন।
কিন্তু আনন্দ দীর্ঘস্থায়ী হয়নি। কিছুক্ষণ পর আর্সেনালের ডিফেন্ডার উইলিয়াম সালিবার এক বড় ভুলে সমতায় ফেরে রিয়াল। গোলরক্ষকের পাস পেয়ে মুভ করতে দেরি করে ফেলেন তিনি। সেই সুযোগে ভিনিসিউস বল ছিনিয়ে নিয়ে শক্তিশালী শটে ম্যাচে সমতা ফেরান।