স্পোর্টস ডেস্ক ; দিল্লি এখনো অনেক দূরে।’ কারুন নায়ার ও অভিষেক পোরেলের ব্যাটিং দেখে মুম্বাই ইন্ডিয়ান্সের সমর্থকদের এমনই ভাবার কথা। তাদের দুজনের ব্যাটে একটা সময় অনায়াসেই জিতে যাচ্ছিল দিল্লি ক্যাপিটালস। জয়ের নেশায় বুঁদ হয়ে থাকা হার্দিক পান্ডিয়ারা অবশ্য সেটা হতে দেননি। বিশেষ করে কার্ন শর্মা ও মিচেল স্যান্টনার। ‘ইমপ্যাক্ট সাব’ হিসেবে ব্যাটার রোহিত শর্মার বদলি না কার্ন একাই পাল্টে দিয়েছেন ম্যাচের চিত্র। -- ক্রিকফ্রেঞ্জি
নিজের প্রথম ওভারে ৯ রান দিলেও উইকেটশূন্য ছিলেন ডানহাতি লেগ স্পিনার। তবে পরের ওভারে নায়ার ও পোরেলের ১১৯ রানের জুটি ভাঙেন তিনি। পরবর্তীতে ফেরালেন লোকেশ রাহুল ও ট্রিস্টিয়ান স্টাবসের মতো ব্যাটারকেও। ৪ ওভারে ৩৬ রান দিয়ে নিলেন ৩ উইকেট। আরেক স্পিনার খানিকটা খরুচে হলেও ৮৯ রানের ঝড়ো ইনিংস খেলা নায়ারের সঙ্গে ফিরিয়েছেন ভিপরাজ।
নায়ার ও পোরেলের ব্যাটে একটা সময় ১১৯ রানে ১ উইকেট থাকলেও মুম্বাই স্পিনারদের দুর্দান্ত বোলিংয়ে দিল্লি অল আউট হয়েছে ১৯৩ রানে। অবিশ্বাস্য বোলিং পারফরম্যান্সে মুম্বাই জিতে নিয়েছে ১২ রানে। আইপিএলের চলতি আসরে ৬ ম্যাচে এটি মুম্বাইয়ের দ্বিতীয় জয়। বিপরীতে দারুণ ছন্দে থাকা দিল্লি প্রথম হারের মুখ দেখেছে। যদিও ৮ পয়েন্ট নিয়ে টেবিলের দুইয়ে রয়েছে দিল্লি।
ঘরের মাঠ অরুণ জেটলি স্টেডিয়ামে জয়ের জন্য ২০৫ রান তাড়ায় ইনিংসের প্রথম বলেই উইকেট হারায় দিল্লি। দীপক চাহারের অফ স্টাম্পের বাইরের বলে কভার দিয়ে ড্রাইভ করার চেষ্টায় উইল জ্যাকসকে ক্যাচ দিয়েছেন জেইক ফ্রেজার-ম্যাকগার্ক। অস্ট্রেলিয়ান ওপেনার ফেরার উপর অভিষেক পোরেলের সঙ্গে জুটি গড়ে তোলেন নায়ার। শুধু জুটিই গড়েননি মুম্বাইয়ের বোলারদের উপর রীতিমতো তাণ্ডব চালাতে থাকেন তিনি।
ম্যাকগার্কের বিদায়ের পরও ইনিংসের প্রথম ৬ ওভারে ৭২ রান তোলে দিল্লি। যেখানে বেশিরভাগ রানই এসেছে নায়ারের ব্যাট থেকে। পাওয়ার প্লের শেষ বলে জসপ্রিত বুমরাহর বিপক্ষে দুই রান নিয়ে ২২ বলে হাফ সেঞ্চুরি তুলে নেন ডানহাতি এই ব্যাটার। ৭ বছরের আইপিএল ক্যারিয়ারে এটাই ভারতীয় ব্যাটারের প্রথম হাফ সেঞ্চুরি। পঞ্চাশ ছোঁয়ার পরও রান তোলার গতি কমেনি তাঁর। বরং আরও আক্রমণাত্বক হয়ে উঠেন তিনি।
অন্য প্রান্তে পোরেল দারুণভাবে সঙ্গ দিয়ে যাচ্ছিলেন নায়ারকে। তাদের দুজনের একশ পেরিয়ে যাওয়া জুটি ভাঙেন কার্ন। ডানহাতি লেগ স্পিনারের স্লগ সুইপ করতে গিয়ে নামান ধীরের হাতে ক্যাচ দিয়েছেন। বাঁহাতি ওপেনারের ব্যাট থেকে এসেছে ২৫ বলে ৩৩ রান। পোরেলের বিদায়ে ভাঙে নায়ারের সঙ্গে ১১৯ রানের জুটি। পরের ওভারে ফিরেছেন দুর্দান্ত ব্যাটিং করতে থাকা নায়ারও।
স্যান্টনারের লেংথ ডেলিভারিতে টপ এজ হয়ে বোল্ড হয়েছেন তিনি। আইপিএলের চলতি মৌসুমে নিজের প্রথম ম্যাচে ১২ চার ও ৫ ছক্কায় ৪০ বলে ৮৯ রানের ইনিংস খেলেছেন নায়ার। পরের ওভারে ফিরেছেন অক্ষর প্যাটেলও। পেসার বুমরাহর দুর্দান্ত এক ইয়র্কারে টপ এজ হয়ে সূর্যকুমার যাদবের হাতে ক্যাচ দিয়েছেন ৯ রানে। কার্ন শর্মা বোলিংয়ে এসে নিয়েছেন ট্রিস্টিয়ান স্টাবসের উইকেট। টানা চার ওভারে ৪ উইকেট হারিয়ে বিপাকে পড়ে দিল্লি।
স্বাগতিকদের বিপদ বাড়িয়ে ফেরেন লোকেশ রাহুলও। কার্ন শর্মাকে সুইপ করতে গিয়ে টপ এজ হয়ে তাঁরই হাতে ক্যাচ দিয়েছেন ১৫ রান করা এই ব্যাটার। ভালো শুরু পাওয়া ভিপরাজ নিগাম আউট হয়েছেন ৮ বলে ১৪ রানে। দিল্লির আশার প্রদীপ হয়েছিলেন আশুতোষ। তবে ইনিংসের ১৯তম ওভারে দুই রান নিতে গিয়ে রান আউট হয়ে ফিরতে হয়েছে তাকে। শেষ পর্যন্ত ১৯৩ রানে অল আউট হয় দিল্লি। মুম্বাইয়ের হয়ে তিনটি উইকেট নিয়েছেন কার্ন।
এর আগে টস হেরে ব্যাটিং করতে নেমে ২০৫ রান তোলে মুম্বাই। সফরকারীদের হয়ে সর্বোচ্চ ৩৩ বলে ৫৯ রানের ইনিংস খেলেছেন তিলক ভার্মা। এ ছাড়া রায়ান রিকেলটন ৪১, সূর্যকুমার ৪০ এবং শেষের দিকে ১৭ বলে অপরাজিত ৩৮ রানের ক্যামিও খেলেছেন নামান। দিল্লির হয়ে দুটি করে উইকেট নিয়েছেন কুলদীপ যাদব ও ভিপরাজ।