শিরোনাম
◈ আ.লীগ নিষিদ্ধের দাবিতে প্রধান উপদেষ্টার কাছে ৩০০ প্রবাসীর চিঠি ◈ আয়নাঘরে নির্যাতনে জড়িতদের চাকুরিচ্যুত করার আহবান চিফ প্রসিকিউটরের (ভিডিও) ◈ বিশেষ ‘ব্লক রেইড’  বিভিন্ন অপরাধে জড়িত  গ্রেফতার ১৬  ◈ জুলাই গণহত্যা: শেখ হাসিনাকে প্রধান আসামি করে ট্রাইব্যুনালে অভিযোগ বিএনপির (ভিডিও) ◈ সংস্কার ছাড়া কোনো নির্বাচন নয়: জামায়াত সেক্রেটারি (ভিডিও) ◈ র‍্যাব বিলুপ্তির বিষয়ে জাতিসংঘের সুপারিশ নিয়ে যা বললেন স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা (ভিডিও) ◈ বিদেশে পাসপোর্ট হারালে যা করবেন, জেনে নিন পদক্ষেপগুলো ◈ নতুন দল আসছে চলতি মাসের শেষদিকে ◈ বাংলাদেশে আসার ১০ মিনিটেই অন অ্যারাইভাল ভিসা পাবেন বিদেশিরা ◈ ক্ষমতা আঁকড়ে রাখতে সহিংস পন্থা বেছে নেন হাসিনা

প্রকাশিত : ১৩ ফেব্রুয়ারি, ২০২৫, ১১:০১ দুপুর
আপডেট : ১৩ ফেব্রুয়ারি, ২০২৫, ০৪:০০ দুপুর

প্রতিবেদক : এল আর বাদল

টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপে বাংলাদেশের সেরা চক্র কেমন ছিলো? 

স্পোর্টস ডেস্ক : বিশ্ব টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপের ২০২৩-২৫ চক্রের লিগ পর্ব শেষ হয়েছে শ্রীলঙ্কা-অস্ট্রেলিয়ার সিরিজ দিয়ে। আগের দুই চক্রের ব্যর্থতা কাটিয়ে এবারের চক্রে নিজেদের সেরা সময় কাটিয়েছে বাংলাদেশ। রেকর্ড সংখ্যক জয়ের পাশাপাশি প্রথমবারের মতো টুর্নামেন্ট শেষ করেছে পয়েন্ট টেবিলের তলানীতে না থেকে। দেখে নেওয়া যাক এবারের চক্রে কেমন ছিল টাইগারদের পারফরম্যান্স।

এবারের টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপ চক্রে ১২টি ম্যাচ খেলেছে বাংলাদেশ। এর মধ্যে নাজমুল হোসেন শান্তর দল জয় পায় ৪ ম্যাচে, যা গত দুই চক্রের চেয়েও বেশি। আসর শেষ করেছে পয়েন্ট তালিকার সাত নম্বরে থেকে। - অলআউট স্পোর্টস

পাকিস্তানকে প্রথমবারের মতো টেস্টে হোয়াইটওয়াশড করা ছাড়াও ঘরের মাঠে নিউজিল্যান্ডকে হারানো এই চক্রে টাইগারদের অন্যতম অর্জন। এর আগে ২০১৯-২১ ও ২০২১-২৩ চক্রে মোট ১৯টি টেস্ট খেলা বাংলাদেশ জয় পেয়েছিল মাত্র এক ম্যাচে। ২০২৩ সালের নভেম্বরে নিউ জিল্যান্ডের বিপক্ষে জয় দিয়ে এবারের চক্রের শুভ সূচনা করে বাংলাদেশ। সিলেটে অনুষ্ঠিত সেই ম্যাচে কিউইদের ১৫০ রানে হারায় স্বাগতিকরা। ম্যাচে ১০ উইকেট নিয়ে সেরা খেলোয়াড় হয়েছিলেন তাইজুল ইসলাম। দ্বিতীয় ইনিংসে ১০৫ রানের দুর্দান্ত এক ইনিংসে ব্যাট হাতে জয়ে অবদান রাখেন অধিনায়ক শান্ত।

তবে মিরপুরে বৃষ্টিবিঘিœত সিরিজের দ্বিতীয় ও শেষ টেস্টে কিউই স্পিনে কুপোকাত হয়ে ৪ উইকেটে ম্যাচ হারে বাংলাদেশ। এরই সঙ্গে প্রথমবারের মতো নিউ জিল্যান্ডের বিপক্ষে টেস্ট সিরিজ জয়ের সুযোগ হাতছাড়া করে টাইগাররা।

এরপর গত মার্চে শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে ঘরের মাঠের টেস্ট সিরিজে একদমই বিবর্ণ ছিল বাংলাদেশের পারফরম্যান্স। সিরিজের দুই ম্যাচেই বোলাররা ভালো শুরু এনে দিলেও কামিন্দু মেন্ডিস ও ধনঞ্জয়া ডি সিলভার ব্যাটকে থামাতে পারেনি। সিলেটে সিরিজের প্রথম ম্যাচের দুই ইনিংসেই এই দুই ব্যাটার পান সেঞ্চুরির ছোঁয়া। অন্যদিকে ব্যাটারদের হতশ্রী পারফরম্যান্সে স্বাগতিকরা ম্যাচ হারে ৩২৮ রানে।

চট্টগ্রামে সিরিজের শেষ টেস্টেও দেখা মেলে একই চিত্র। বোলাররা ভালো শুরু পেলেও পরে তা আর ধরে রাখতে পারেননি। কোনো লঙ্কান ব্যাটার সেঞ্চুরির দেখা না পেলেও প্রথম ইনিংসে তারা ৫৩১ রানের সংগ্রহ গড়ে। এরপর প্রতিপক্ষ পেসারদের সামনে অসহায় ব্যাটাররা গুটিয়ে যায় ১৭৮ রানেই। ফলো-অন করানোর সুযোগ থাকলেও তা কাজে লাগায়নি লঙ্কানরা। শেষ পর্যন্ত শান্তর দল ম্যাচ হারে ১৯২ রানে।

এই সিরিজের পর থেকে মাঠের পারফরম্যান্স নিচের দিকে নামতে থাকে বাংলাদেশের। ঘরের মাঠে জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে টি-টুয়েন্টি সিরিজ জিতলেও পারফরম্যান্স আশানুরূপ ছিল না। টি-টুয়েন্টি বিশ্বকাপের আগে টি-টুয়েন্টি সিরিজ হারে যুক্তরাষ্ট্রের কাছে। পরিসংখ্যানের হিসেবে নিজেদের ইতিহাসের সেরা টি-টুয়েন্টি বিশ্বকাপ হিসেবে টুর্নামেন্ট শেষ করলেও ব্যাটারদের পারফরম্যান্স ছিল একদমই জঘন্য।

কিন্তু এই বাজে সময়কে যেন টাইগাররা হঠাৎ করেই কাটিয়ে ওঠে টেস্ট ক্রিকেটে। পাকিস্তানের মাটিতে দুই ম্যাচের সিরিজে স্বাগতিকদের হোয়াইটওয়াশড করে তারা। অথচ সেই সিরিজের আগে পাকিস্তানের বিপক্ষে খেলা ১৩ ম্যাচের মধ্যে ১২টিতেই হেরেছিল টাইগাররা।

আগস্ট-সেপ্টেম্বরে রাওয়ালপিন্ডিতে হওয়া দুই ম্যাচেই ব্যাটার-বোলারদের সম্মিলিত পারফরম্যান্সে সিরিজ জেতে তারা। প্রথম ম্যাচের প্রথম ইনিংসে মুশফিকুর রহিমের ১৯১ রানের সুবাদে শেষ পর্যন্ত বাংলাদেশ ম্যাচ জেতে ১০ উইকেটে। এরপর দ্বিতীয় টেস্টের প্রথম ইনিংসে ২৬ রানের ভেতর প্রথম ৬ উইকেট হারিয়েও লিটন-মিরাজের ব্যাটে ম্যাচে ফেরে সফরকারীরা।

লিটনের ১৩৮ রানের সুবাদে প্রথম ইনিংস শেষে ১২ রানে পিছিয়ে থাকে শান্তর দল। দ্বিতীয় ইনিংসে বল হাতে স্বাগতিকদের ব্যাটিং লাইন-আপে আগুন ঝরান তাসকিন-হাসান-নাহিদের পেসত্রয়ী। তিন পেসার মিলে শিকার করেন পাকিস্তানের সবকটি উইকেট। ১৮৫ রানের লক্ষ্য তাড়ায় ব্যাটার দৃঢ়তায় টাইগাররা ম্যাচ জেতে ৬ উইকেটে।

তবে ভারতের মাটিতে পরের সিরিজেই যেন আবারও নিজেদের পুরোনো রূপে ফিরে আসে বাংলাদেশ। হতাশাজনক পারফরম্যান্সে হারে সিরিজের দুটো ম্যাচেই। প্রথম ম্যাচে পেসাররা দারুণ শুরু এনে দিলেও ব্যাটিং ব্যর্থতায় ম্যাচ হারে ২৮০ রানে। হতশ্রী পারফরম্যান্সে দ্বিতীয় টেস্ট হেরে যায় মাত্র আড়াই দিনে।

এই সিরিজকে ভুলে যেতে অক্টোবরে ঘরের মাঠে দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে সিরিজে ঘুরে দাঁড়ানোর ছক কষেছিল বাংলাদেশ। কিন্তু প্রোটিয়াদের অনভিজ্ঞ দলের কাছেই পাত্তা পায়নি তারা। মিরপুরে স্পিন সহায়ক উইকেট বানিয়েও ব্যাটাররা সেখানে ধরাশায়ী হয় কাগিসো রাবাদার পেস তোপে। ম্যাচ হারে ৭ উইকেটে। এরপর চট্টগ্রামে শেষ টেস্ট হারে ইনিংস ও ২৭৩ রানে।

তবে চক্রে নিজেদের শেষ সিরিজে ওয়েস্ট ইন্ডিজ সফরে প্রত্যাশার চেয়েও ভালো পারফর্ম করে টাইগাররা। নিয়মিত অধিনায়ক শান্ত ও অভিজ্ঞ মুশফিকুর রহিমকে ছাড়াই ক্যারিবিয়ানদের বিপক্ষে দ্বিতীয় টেস্টে তারা জয় পায় ১০১ রানে। আর প্রথম টেস্টে ব্যাটাররা হতাশ না করলে সেটির ফলও নিজেদের পক্ষে আনতে পারত লিটন-মিরাজরা।

আগামী জুনে ওয়েস্ট ইন্ডিজ-অস্ট্রেলিয়া সিরিজ দিয়ে শুরু হবে টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপের নতুন চক্র। ২০২৫-২৭ চক্রে নিশ্চিতভাবেই দলে বেশ কিছু বড় পরিবর্তন আসবে। ইতোমধ্যেই আন্তর্জাতিক ক্রিকেট থেকে অবসর নিয়েছেন তামিম ইকবাল। টেস্ট ক্রিকেটকে বিদায় জানিয়েছেন সাকিব আল হাসানও। মুশফিকও আছেন তার ক্যারিয়ারের গোধূলী লগ্নে। ফলে নতুনদের নিয়ে ক্রিকেটের রাজকীয় ফরম্যাটে বাংলাদেশের ভবিষ্যৎ কোন দিকে যাবে তা হয়তো এই চক্রেই বোঝা যাবে।

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়