স্পোর্টস ডেস্ক: ইংল্যান্ডের ক্রিকেটাররা এবার আইপিএলে খেলার সুযোগ পেলেও পাকিস্তান সুপার লিগে খেলতে পারবেন না। এমনকি অন্য কোনো দেশের ফ্রাঞ্চাইজি টুর্নামেন্টে খেলতে পারবেন না। ইংল্যান্ড অ্যান্ড ওয়েলস ক্রিকেট বোর্ড (ইসিবি) খেলার ওপর নিষেধাজ্ঞা জারি করেছে। যা ইংল্যান্ডের গ্রীষ্মকালীন ঘরোয়া ক্রিকেট মৌসুমের সঙ্গে সংঘর্ষ করে। তবে, ভারতীয় প্রিমিয়ার লিগের (আইপিএল) জন্য এখনো বিশেষ অনুমতি বহাল রয়েছে। - দ্য টেলিগ্রাফ
নতুন এই নীতিটি ইংলিশ খেলোয়াড়দের গ্রীষ্মকালীন ঘরোয়া মৌসুমে আয়ের সুযোগ কমিয়ে দিতে পারে এবং তাদের মধ্যে কিছু খেলোয়াড় বিদেশি লিগে খেলার জন্য লাল বলের ক্রিকেট থেকে মুখ ফিরিয়ে নিতে পারে। তবে ইসিবি মনে করে, এই পদক্ষেপ ইংল্যান্ডের ঘরোয়া ক্রিকেটের মান রক্ষা করবে।
ব্রিটিশ গণমাধ্যম টেলিগ্রাফ এক প্রতিবেদনে জানিয়েছে যে, ইসিবি সিদ্ধান্ত নিয়েছে ইংল্যান্ডের গ্রীষ্মকালীন মৌসুমের সঙ্গে সংঘর্ষকারী প্রতিযোগিতার জন্য কোনো আপত্তি সনদ (এনওসি) আর প্রদান করা হবে না, যদি না খেলোয়াড়দের শুধুমাত্র সাদা বলের চুক্তি থাকে।
ইসিবি আরও জানায় যে, তারা খেলোয়াড়দের এমন প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণে বাধা দেবে যা ‘ভাইটালিটি ব্লাস্ট’ এবং ‘দ্য হান্ড্রেড’ টুর্নামেন্টের সঙ্গে সাংঘর্ষিক। এছাড়া, সন্দেহভাজন দুর্নীতিপূর্ণ লিগ এবং ‘ডাবল-ডিপিং’ একই সময়ে এক প্রতিযোগিতা থেকে বাদ পড়ে অন্য প্রতিযোগিতায় যোগ দেয়া – থেকেও খেলোয়াড়দের বিরত রাখা হবে।
প্রতিবেদনে আরও জানানো হয়েছে বুধবার (২৭ নভেম্বর) ইসিবি এক বৈঠকে নতুন এই নীতিগুলো অনুমোদন করেছে। এই পদক্ষেপ এমন এক সময়ে নেয়া হলো যখন ক্রিকেটের সূচি ক্রমেই জটিল ও ব্যস্ত হয়ে উঠছে। ২০২৫ সালে ২০টিরও বেশি বড় আকারের ফ্র্যাঞ্চাইজি টুর্নামেন্ট অনুষ্ঠিত হবে এবং ভবিষ্যতে এর সংখ্যা আরও বাড়ার সম্ভাবনা রয়েছে।
নতুন নীতির ফলে খেলোয়াড়দের আয়ের সর্বোচ্চ সুযোগ এবং সব ফরম্যাটে উপস্থিত থাকার মধ্যে ভারসাম্য রক্ষা করতে সমস্যায় পড়তে হতে পারে। সাকিব মাহমুদ, যিনি সম্প্রতি ওয়েস্ট ইন্ডিজ সফরে ইংল্যান্ডের সীমিত ওভারের ক্রিকেটে দুর্দান্ত পারফর্ম করেছেন, পরবর্তী মৌসুমে ল্যাঙ্কাশায়ারের সঙ্গে একটি সাদা বলের চুক্তি করেছেন। যা তাকে পিএসএলে খেলার সুযোগ করে দিতে পারে।
ইতিহাসে ইংল্যান্ডের গ্রীষ্মকালীন মৌসুমের সঙ্গে খুব কম আন্তর্জাতিক লিগের সংঘর্ষ হয়েছে। তবে আগামী বছর ‘টি-২০ ব্লাস্ট’ এবং ‘দ্য হান্ড্রেড’ টুর্নামেন্ট চলাকালে মেজর লিগ ক্রিকেট, কানাডার গ্লোবাল টি-২০ এবং শ্রীলঙ্কার প্রিমিয়ার লিগও চলবে। আগস্টের শেষের দিকে শুরু হবে ক্যারিবিয়ান প্রিমিয়ার লিগ। আর ২০০৮ সাল থেকে আইপিএল ইংল্যান্ডের গ্রীষ্মের শুরুতে সংঘর্ষ করে আসছে এবং খেলোয়াড়রা দেশের ম্যাচ ছেড়ে এই লিগে অংশ নিচ্ছে।
২০২৫ সালে পিএসএল এপ্রিলে অনুষ্ঠিত হবে, যা প্রতিভা নিয়ে আরও বেশি প্রতিযোগিতা তৈরি করবে। ইসিবি কোনো পদক্ষেপ না নিলে ১২ জন বা তার বেশি ইংলিশ খেলোয়াড় পাকিস্তানে খেলতে পারত, যা কাউন্টি চ্যাম্পিয়নশিপের মান কমিয়ে দিত।
গত বছর জেসন রয় সারের হয়ে ‘টি-২০ ব্লাস্ট’ ছেড়ে মেজর লিগ ক্রিকেট এবং ক্যারিবিয়ান প্রিমিয়ার লিগে অংশ নেন। অ্যালেক্স হেলস ‘নটিংহ্যামশায়ারের’ হয়ে ব্লাস্ট ম্যাচ ছেড়ে লঙ্কা প্রিমিয়ার লিগে খেলেন। নতুন নীতি অনুযায়ী, যারা আর প্রথম শ্রেণির ক্রিকেট খেলেন না, তারাও ঘরোয়া সাদা বলের ম্যাচ বাদ দিয়ে অন্য কোথাও খেলতে পারবেন না।
ইসিবির প্রধান নির্বাহী রিচার্ড গোল্ড বলেন, আমাদের খেলার মান এবং ইংল্যান্ড ও ওয়েলসের প্রতিযোগিতার শক্তি রক্ষা করতে হবে। এই নীতি খেলোয়াড় ও পেশাদার কাউন্টি দলগুলোর জন্য আমাদের দৃষ্টিভঙ্গি স্পষ্ট করবে। এটি আমাদের খেলোয়াড়দের আয়ের সুযোগ এবং অভিজ্ঞতা অর্জনের ক্ষেত্রে সহায়তা করার পাশাপাশি, আমাদের নিজস্ব প্রতিযোগিতার মান বজায় রাখতে এবং কেন্দ্রীয় চুক্তিবদ্ধ খেলোয়াড়দের কল্যাণ নিশ্চিত করতে সাহায্য করবে।