ভারতের জমকালো টি-টোয়েন্টি ক্রিকেট লীগ আইপিএলের নিলাম মানেই কোটি কোটি রুপির ছড়াছড়ি। মুহূর্তের মধ্যেই ভাগ্য পরিবর্তনের এক মহামঞ্চ। মাত্র ভিত্তিমূল্যে নিলামে আসা অনেক ক্রিকেটারই কোটি রুপিতে বিক্রি হয়ে যান। সেখানে তারকা ক্রিকেটারদেরও ওঠে চড়া মূল্য। অনেকের ক্ষেত্রে আকাশচুম্বী মূল্যর আগে কয়েক ডিজিটের যোগ করেও তার দামকে ব্যাখ্যা করা কঠিন হয়ে যায়। এই যেমন গত বছরের নিলামে মিচেল স্টার্কের দাম ২৪ কোটি ৭৫ লাখ রুপিতে উঠে যাওয়া। আইপিএল ইতিহাসে যা এখন পর্যন্ত সর্বোচ্চ। খবর দ্য ক্রিকবাজের।
তবে স্টার্কের ভালো দাম পাওয়া প্রত্যাশিতই ছিল। তাই বলে ২৪ কোটির বেশি হওয়ায় চোখ কপালে তুলে লাভ নেই। দুই দিন পরেই বসছে আইপিএল নিলামের মেগা আসর। এবার হয়তো স্টার্ককেও কেউ ছাড়িয়ে যেতে পারেন।
ক্রিকেটপ্রেমীদের প্রশ্নটি হচ্ছে, কে স্টার্ককেও উতরে যাবেন। অনেকগুলো নামই সামনে আসছে। স্বাভাবিকভাবেই প্রথমে আসবে নিলামে মার্কি তালিকায় থাকা ক্রিকেটারদের নাম। এবারের নিলামে মার্কি তালিকায় রয়েছেন ১২ জন যাদের ভাগ করা হয়েছে দুই ভাগে।
প্রথম সেটে রাখা হয়েছে জশ বাটলার, ঋষভ পন্ত, শ্রেয়াস আইয়ার, কাগিসো রাবাদা, অর্শদীপ সিং ও মিচেল স্টার্ককে। দ্বিতীয় সেটে রাখা হয়েছে যুজবেন্দ্র চাহাল, লিয়াম লিভিংস্টোন, ডেভিড মিলার, লোকেশ রাহুল, মোহাম্মদ শামি ও মোহাম্মদ সিরাজকে।
তাদের প্রত্যেকেরই বিপরীতে চড়া মূল্যে ডাক উঠার সম্ভাবনা আছে। তবে ২৪ কোটি হয়তো একটু বেশিই। স্টার্ককে ছাড়ানোর সম্ভাবনার তালিকা করতে গেলে সংখ্যাটা হয়তো আরও কমে আসবে। চাহাল, অর্শদীপদের পেছনে এত টাকা খরচের সম্ভাবনা কমই। যদিও আইপিএল নিলাম নিয়ম মেনে চলে না, হতে পারে অনেক কিছুই। এরপরও সম্ভাবনার বিচারে এগিয়ে থাকবেন পন্ত, বাটলার। দিল্লি ক্যাপিটালস ছেড়ে দেয়া পন্ত আইপিএলে শুধু দিল্লির হয়েই খেলেছেন। মানে পন্ত ঠিক পন্ত হয়ে ওঠার পর এখনো নিলামেই ওঠেননি। সেদিক থেকে পন্তের মূল্য কততে গিয়ে টেকবে, সেটা দেখার বিষয়।
বাটলারও ২০১৮ সাল থেকে রাজস্থান রয়্যালসে খেলছেন। এবার তিনিও থাকছেন নিলামে। স্ট্রাইক রেট বলুন, টি-টোয়েন্টি ক্রিকেটে তার চাহিদা বলুন সবকিছু বিবেচনাতেই বাটলারের দাম এবার আকাশ ছোঁয়ার কথা।
তবে স্টার্ককে কি ছাড়াতে পারবেন তারা। লিভিংস্টোন, মিলার, রাহুলরাও নিলাম টেবিলে অনেকক্ষণ থাকবেন ধরেই নেয়া যায়। তালিকায় থাকা রাবাদা, গত মৌসুমে কলকাতাকে চ্যাম্পিয়ন করা শ্রেয়াস আইয়ারদের চড়া দাম উঠতে পারে। তবে তাদের ২৪ কোটি ৭৫ লাখ রুপিকে ছাড়ানো একটু চ্যালেঞ্জিং হবে। স্টার্ক নিজে কি নিজের রেকর্ড ভাঙবেন? গত মৌসুমে কলকাতার হয়ে ওভারপ্রতি ১০ রানের বেশি খরচ করা স্টার্কের জন্যও কাজটা কঠিন।
বিশেষ এই তালিকার বাইরে থাকা ক্রিকেটাররাও ওই মুহূর্তে রেকর্ড গড়তে পারেন। সে ক্ষেত্রে সবার আগে নাম আসবে গ্লেন ম্যাক্সওয়েলের। গত ৪ মৌসুম ধরে ম্যাক্সওয়েল রয়্যাল চ্যালেঞ্জার্সের হয়ে খেলছেন। এবার আর তাকে ধরে রাখেনি দলটি। আইপিএলে এই অস্ট্রেলিয়ানের চাহিদা সব সময়ই আকাশচুম্বী।
শুধু তার নয়, আইপিএলে অস্ট্রেলিয়ানদেরই চাহিদা বেশি। আইপিএল ইতিহাসে সর্বোচ্চ দামে বিক্রি হওয়া ১০ ক্রিকেটারের মধ্যে ৪ জনই অজি। গত মৌসুমের নিলামে তো প্রথমে সর্বোচ্চ মূল্যের রেকর্ড গড়েছিলেন প্যাট কামিন্স। এর কিছু সময় পরই তার ২০ কোটি ৫০ লাখ রুপির রেকর্ড ভেঙে নতুন রেকর্ড গড়েন স্বদেশি স্টার্ক। সম্প্রতি ভারত সিরিজে ভালো করা নিউজিল্যান্ডের রাচিন রবীন্দ্র ও গ্লেন ফিলিপসকেও আমলে নিতে হবে। আলোচনায় থাকবেন প্রোটিয়া ফাস্ট বোলার আনরিখ নর্কিয়া এবং কিউই পেসার লকি ফার্গুসনও।
তবে অনেক কিছুই নির্ভর করবে দলগুলোর নির্দিষ্ট পরিকল্পনার ওপরে। গত মৌসুমে কামিন্সকে যেমন যে করেই হোক দলে পেতে পেয়েছে হায়দরাবাদ। এবারও তাকে ধরে রেখেছে দলটি। এমন অনেককে নিয়েই বিশেষ বিশেষ পরিকল্পনা করে ফ্র্যাঞ্চাইজিগুলো। দাম চড়া হয়ে ওঠে এসব বিবেচনাতেই। এবার কার মূল্যের পারদ সবকিছুকে ছাপিয়ে যাবে তাই দেখার বিষয়।
আপনার মতামত লিখুন :