নিজস্ব প্রতিবেদক: টাইগার ব্যাটারদের ব্যর্থতা নেই, আছে বোলার আর ফিল্ডারদের। অলরাউন্ড পারফরমেন্স দেখাতে না পারায় সিরিজ হারালো বাংলাদেশ। আর আফগানিস্তান দারুণ পারফরম করে ২-১ সিরিজ জিতলো। যার কল্যাণে সিরিজ পেলো আফগানিস্তান, সেই গুরবাজ কিন্তু আগের দুই ম্যাচে ছিলেন একদমই ব্যর্থ। এই ব্যাটার এতোটা ঘুরে দাঁড়াবে তা হয়তো কেউ কল্পনাই করেনি। সিরিজ নির্ধারণী ম্যাচে দলকে জেতাতে দারুণ ভাবে জ্বলে উঠলো রহমানউল্লাহ গুরবাজের ব্যাট।
বাংলাদেশ বোলারদের হতাশায় ডুবিয়ে তুলে নিলেন সেঞ্চুরি। ডানহাতি এই ব্যাটারের দুর্দান্ত শতকের ওপর ভর করে ৫ উইকেটের জয়ে তিন ম্যাচের ওয়ানডে সিরিজ জিতে নিয়েছে আফগানিস্তান।
সোমবার শারজায় সিরিজের তৃতীয় ও শেষ ওয়ানডেতে আগে ব্যাট করে মেহেদী হাসান মিরাজের ৬৬ ও মাহমুদউল্লাহ রিয়াদের ৯৮ রানে ৮ উইকেটে ২৪৪ রানের সংগ্রহ পায় বাংলাদেশ। জবাবে গুরবাজের সেঞ্চুরির পর আজমতউল্লাহ ওমরজাইয়ের দুর্দান্ত ফিফটিতে ১০ বল আগে জয় পায় আফগানিস্তান। ২-১ ব্যবধানে সিরিজ নিজেদের করে নিল আয়োজকরা।
এই নিয়ে আফগানিস্তানের কাছে দ্বিতীয় ওয়ানডে সিরিজ হারল বাংলাদেশ। গত বছর জুলাইয়ে চট্টগ্রামে অনুষ্ঠিত সিরিজে একই ব্যবধানে হেরেছিল টাইগাররা।
ক্যারিয়ারের অষ্টম সেঞ্চুরি হাঁকানো গুরবাজকে ফেরানোর সুযোগ এসেছিল বাংলাদেশের কাছে। কিন্তু পয়েন্টে তার ক্যাচটি নিতে পারেননি মাহমুদউল্লাহর বদলি হিসেবে ফিল্ডিংয়ে নামা রিশাদ হোসেন। সে সময় ২৪ রানে ছিলেন গুরবাজ।
এর আগে লক্ষ্য তাড়ায় সেদিকউল্লাহ আটালকে নিয়ে আফগানদের ভালো শুরু এনে দেন এই ওপেনার। তবে ৪১ রানের জুটি ভাঙেন নাহিদ রানা। অভিষেক ম্যাচে গতির ঝড় তুলে ডানহাতি এই ফাস্ট বোলার বোল্ড করেন আটালকে (১৪)। এরপর মুস্তাফিজুর রহমান রহমত শাহ (৮) ও হাশমতউল্লাহ শাহিদির (৬) উইকেটে তুলে নিলে ম্যাচের নিয়ন্ত্রণ নিজেদের দিকে আনতে শুরু করেন।
তবে চতুর্থ উইকেটে গুরবাজ ও ওমারজাইয়ের ১০০ রানের জুটিটি জয়ের মূল ভিত গড়ে দেয়। ১০১ রান করা গুরবাজকে তুলে নেন মিরাজ। এক ওভার পর গুলবাদিন নাইবকে ফিরিয়ে দলকে ম্যাচে ফেরানোর ইঙ্গিত দেন নাহিদ। কিন্তু ষষ্ঠ উইকেটে ওমারজাই ও মোহাম্মদ নবীর ৬৮ রানের অবিচ্ছিন্ন জুটিতে জয় পায় আফগানিস্তান। প্রথম দুই ম্যাচে ডাক মারা ওমারজাই অপরাজিত থাকেন ৭০ রানে।
এর আগে চোটের কারণে ছিটকে যাওয়া নিয়মিত অধিনায়ক নাজমুল হোসেন শান্তকে ছাড়া মিরাজের নেতৃত্বে মাঠে নামে বাংলাদেশ। টস জিতে ব্যাটিংয়ে নামা দলকে ভালো শুরু এনে দেন দুই ওপেনার তানজিদ হাসান তামিম ও সৌম্য সরকার। ২৪ রান করা সৌম্য সরকার ফিরলে ভাঙে ৫৩ রানের উদ্বোধনী জুটি। পরের ওভারে সাজঘরে ফেরেন দু’বার জীবন পাওয়া তানজিদও (১৯)। মিরাজের সঙ্গে ভুল বোঝাবুঝিতে রানআউট হন শান্তর বদলে দলে আসা জাকির হাসান।
৫ রানের ভেতর ৩ উইকেট হারানো দলকে বিপর্যয়ের হাত থেকে বাঁচাতে তাওহিদ হৃদয়কে নিয়ে জুটি বাঁধেন মিরাজ। কিন্তু পুরো সিরিজে ব্যর্থ হৃদয় ৭ রান করে রশিদ খানের শিকার হয়ে ফিরলে আবারও চাপে পড়ে বাংলাদেশ।
৭২ রানে ৪ উইকেট হারানোর পর ক্রিজে আসেন মাহমুদউল্লাহ। শুরুটা দেখেশুনে পরে রানের গতি বাড়াতে থাকেন ৩৮ বছর বয়সী এই ক্রিকেটার। ৬৩ বলে তুলে নেন ক্যারিয়ারের ২৯তম ফিফটি। অপর প্রান্তে ধীরগতিতে রান তুলতে থাকা মিরাজ পঞ্চাশের দেখা পান ১০৬ বলে। পঞ্চম উইকেটে এই দুই ব্যাটার যোগ করেন ১৪৫ রান।
এদিন ক্যারিয়ারের পঞ্চম সেঞ্চুরির খুব কাছ থেকে ফিরে আসতে হয় মাহমুদউল্লাহকে। তিন অংক স্পর্শ করার জন্য ইনিংসের শেষ বলে তার দরকার ছিল ৩ রান। কিন্তু আজমতউল্লাহ ওমরজাইয়ের করা শেষ ডেলিভারিতে বাউন্ডারি হাঁকাতে পারেননি তিনি। দুই রান নিতে গিয়ে অভিজ্ঞ এই ব্যাটার রানআউট হলে তার ইনিংস থামে ৯৮ রানে।
আপনার মতামত লিখুন :