আমিনুল ইসলাম: বাংলাদেশের জাতীয় নির্বাচনকে সামনে রেখে যুক্তরাষ্ট্রের ভিসানীতিকে ‘দুরভিসন্ধিমূলক’ বলে অভিহিত করেছে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ নেতৃত্বাধীন ১৪ দলীয় জোট। জোট মনে করে, এই ভিসানীতি অনাকাঙ্ক্ষিত, যা কারো পক্ষে ব্যবহার করা হচ্ছে। ইস্কাটনে কেন্দ্রীয় ১৪ দলের বৈঠকে রোববার এমন আলোচনা হয় বলে জানিয়েছেন, জোটের সমন্বয়ক ও মুখপাত্র এবং আওয়ামী লীগের উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য আমির হোসেন আমু।
তিনি বলেন, মার্কিন ভিসানীতি অনাকাঙ্ক্ষিত ও অনাহূতভাবে আসায় তা অত্যন্ত দুরভিসন্ধিমূলক মনে হচ্ছে। এটা কারো কারো পক্ষে ব্যবহার করার চেষ্টা করা হচ্ছে। কিন্তু আমরা মনে করি, জাতি সংবিধানের প্রত্যেকটি প্রক্রিয়াকে সমুন্নত রাখার জন্য ঐক্যবদ্ধ থাকবে। আমরা একটি সুষ্ঠু ও অবাধ নির্বাচন উপহার দেওয়ার জন্য অঙ্গীকারবদ্ধ। এক্ষেত্রে অন্য কোনও হস্তক্ষেপ আমরা কামনা করি না।
আপনারা ভিসানীতির সমালোচনা করছেন, কিন্তু আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক দাবি করেছেন তাদের টার্গেট করে এটা করা হয়নি এমন প্রশ্নের জবাবে আমু বলেন, আমরা ভিসানীতিকে অনাকাঙ্ক্ষিত মনে করি। আরেকটা কথা হলো, এটা তো ১৪ দল। আওয়ামী লীগের মিটিং না। মনে রাখবেন আমরা তো রাবার স্ট্যাম্প না। এখানে আরো ১৩টা দল আছে। সবাই তো আওয়ামী লীগ না। এটা আপনাকে মনে রাখতে হবে। এখানে কথাটা হচ্ছে ১৪ দল যেটা ফিল করে সেটাই বলবে। অন্য দল কে কী বলবে, সেটা আমাদের দেখার বিষয় না। আমাদের আলোচনায় যেটা আসবে সেটা আমরা প্রকাশ করবো।
আমির হোসেন আমু আরো বলেন, আমরা মনে করি যারা নির্বাচনকে বিভিন্ন অজুহাত দিয়ে বানচাল করতে চায়, নির্বাচনকে প্রশ্নবিদ্ধ করতে চায়, তাদের জন্য এটা (ভিসানীতি) সহায়ক হতে পারে। সেদিকে লক্ষ্য রেখে আমরা কথাগুলো বলতে চাই। এখানে যদি অন্য কোনো দেশের সন্দেহ থাকে, তাহলে তারা বসে এটা ঠিক করতে পারে যে, সংবিধানের কোথায় কোন ফাঁকফোকর আছে, সেটা তারা বিবেচনা করুক। সেগুলো দেখুক, আলোচনা করুক। কিন্তু সংবিধানের ভিত্তিতে নির্বাচনটা অনুষ্ঠিত হতে হবে। দেশে এ ধারাটা অব্যাহত রাখার জন্য সংবিধানে ব্যাঘাত সৃষ্টি করে বা অন্য কোনো উপায়ে আঘাত আসুক, এটা আমরা চাই না।
সব দলের অংশগ্রহণে নির্বাচনের জন্য ১৪ দলীয় জোট কোনো আলোচনার উদ্যোগ নেবে কিনা এমন প্রশ্নের জবাবে আমু বলেন, আমরা মনে করি এ জাতি সংবিধানের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। কোনও দলই জাতির বাইরে না, জনগণের বাইরে না, দেশের বাইরে না। জনগণের ওপর আস্থা থাকে, সংবিধানভিত্তিক নির্বাচনে আস্থা থাকে, এমন দলগুলোর নির্বাচনে অংশগ্রহণ করা উচিত। সুষ্ঠু নির্বাচনের স্বার্থে সব দলকে নির্বাচনে অংশ নেওয়ার আহ্বান জানাই। কোনো দলের পক্ষে জনস্রোত থাকলে এই স্রোতের বাইরে প্রশাসনও যেতে পারে না। সেদিকেই নির্বাচন ধাবিত হয়।
আমির হোসেন আমুর সভাপতিত্বে বৈঠকে আরো অংশ নেন ওয়ার্কার্স পার্টির সভাপতি রাশেদ খান মেনন, সাম্যবাদী দলের সাধারণ সম্পাদক দিলীপ বড়ুয়া, জাতীয় পার্টি (একাংশ)-জেপির সাধারণ সম্পাদক শেখ শহীদুল ইসলাম, আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য মোফাজ্জল হোসেন চৌধুরী মায়া, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহবুব উল আলম হানিফ, তরিকত ফেডারেশনের চেয়ারম্যান নজিবুল বশর মাইজভান্ডারী, কমিউনিস্ট কেন্দ্রের আহ্বায়ক ওয়াজেদুল ইসলাম খান, গণতন্ত্রী পার্টির সাধারণ সম্পাদক শাহাদাৎ হোসেন প্রমুখ। সম্পাদনা: মাজহারুল ইসলাম
এমআই/এমআই/এসবি২
আপনার মতামত লিখুন :