মনিরুল ইসলাম : ঢাকার উত্তরার বেসরকারি শহীদ মনসুর আলী মেডিকেল কলেজ থেকে শেখ মুজিবুর রহমানের ছবি অপসারণ এবং বিএনপি’র রাষ্ট্র কাঠামো সংস্কারের ৩১ দফা কর্মসূচি পালনের জেরে ৮ শিক্ষার্থীকে বহিষ্কারের প্রতিবাদ জানিয়ে মানববন্ধন ও স্মারকলিপি প্রদান করেছে জাতীয়তাবাদী ছাত্রদলের নেতাকর্মীরা। এসময় তারা ওই ৮ শিক্ষার্থীর বহিষ্কারাদেশ প্রত্যাহারে দাবি জানান।
আজ শনিবার সকাল ১১টার দিকে কলেজ গেটে ঘণ্টাব্যাপী এ মানববন্ধনের নেতৃত্ব দেন ছাত্রদলের সিনিয়র যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক শ্যামল মালুম। মানববন্ধন শেষে কলেজের অধ্যক্ষ বরাবর স্মারকলিপি প্রদান করা হয়।
মানববন্ধনে ছাত্রদলের সিনিয়র যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক শ্যামল মালুম বলেন, “১৫ বছর ধরে আওয়ামী লীগ বাংলাদেশের জনগণের মৌলিক অধিকার হরণ করে একদলীয় ফ্যাসিবাদী শাসন কায়েম করেছিল। যদিও গত জুলাই-আগস্টের গণঅভ্যুত্থানে শেখ হাসিনার স্বৈরাচারী শাসনের পতন ঘটে, তবুও তার অনুসারীরা এখনো বহাল তবিয়তেই আছে।”
তিনি বলেন, “এই মেডিকেল কলেজের ইতিহাস দীর্ঘ। আশির দশকে মুক্তিযোদ্ধা কল্যাণ ট্রাস্টের জায়গায় ‘উম্মাহ মেডিকেল’ নামে একটি চিকিৎসাকেন্দ্র স্থাপিত হয়। ১৯৯৫ সালে উম্মাহ মেডিকেল কলেজ হিসেবে শিক্ষা কার্যক্রম শুরু হয়। এরপর বিভিন্ন সময়ে রাজনৈতিক পালাবদলে প্রতিষ্ঠানটির নাম পরিবর্তন হয়ে সর্বশেষ আওয়ামী লীগের শাসনামলে শহীদ মনসুর আলী মেডিকেল কলেজ নামকরণ করা হয়। এরপর থেকেই মোহাম্মদ নাসিমের পরিবার—তাঁর স্ত্রী লায়লা আরজুমান্দ, ছেলে তমাল মনসুর এবং তানভীর শাকিল—এটি দখল করে রাজনৈতিক কার্যালয়ের মতো ব্যবহার করতে থাকেন।”
শ্যামল মালুম আরও বলেন, “গত গণঅভ্যুত্থানের সময় এই হাসপাতালের গেট বন্ধ করে অসংখ্য আহত ছাত্র-জনতাকে চিকিৎসা থেকে বঞ্চিত করা হয়। যার ফলে অনেকে প্রাথমিক চিকিৎসার অভাবে মৃত্যুবরণ করেন।”
তিনি অভিযোগ করে বলেন, “শেখ হাসিনা দেশত্যাগের পরও কলেজের দেয়ালে দীর্ঘদিন ধরে শেখ মুজিবুর রহমানের ছবি টানিয়ে রাখা হয়। ১৯ নভেম্বর সচেতন কিছু ছাত্র-জনতা ছবি অপসারণ করলে নাসিম পরিবার এবং তাদের পোষ্য কর্মকর্তাদের দিক থেকে সাধারণ শিক্ষার্থীদের ওপর দমন-পীড়ন শুরু হয়। পরবর্তীতে মিথ্যা মামলার পাশাপাশি ৮ জন শিক্ষার্থীকে ছয় মাসের জন্য বহিষ্কার করা হয়।”
ছাত্রদল এ বহিষ্কারাদেশকে “মিথ্যা ও ভিত্তিহীন” দাবি করে অবিলম্বে তা প্রত্যাহারের দাবি জানায়। শ্যামল মালুম বলেন, “শিক্ষার পরিবেশ রক্ষা এবং মৌলিক অধিকার ফিরিয়ে আনতে ছাত্রদল অঙ্গীকারবদ্ধ।”
স্মারকলিপিতে বলা হয়, আগামীকাল ২০ এপ্রিল, রোববার দুপুর ১২টার মধ্যে অধ্যক্ষ তাদের দাবির ব্যাপারে সঠিক সিদ্ধান্ত না নিলে আন্দোলনের কর্মসূচি আরও কঠোর হবে।
মানববন্ধনে আরও উপস্থিত ছিলেন— ছাত্রদল কেন্দ্রীয় সংসদের সহ-সভাপতি রেহেনা আক্তার শিরিন ও রেজওয়ানুল হক সবুজ, যুগ্ম-সম্পাদক তারিকুল ইসলাম তারিক, গাজী মোহাম্মদ সাদ্দাম হোসেন, নুরুজ্জামান চন্দন, মহানগর উত্তর ছাত্রদলের সভাপতি সালাহউদ্দিন আহমেদ, সাধারণ সম্পাদক মাহফুজুর রহমান লিপকন, বেসরকারি মেডিকেল ও ডেন্টাল কলেজ ছাত্রদলের সভাপতি রাকিবুল ইসলাম আকাশ ও ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক তানজিম রুবায়েত আফিফসহ শতাধিক নেতাকর্মী।▫️