জাতীয় সংসদ নির্বাচন ও রাষ্ট্র সংস্কার বিষয়ে অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের সঙ্গে আবারও সাক্ষাৎ করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে বিএনপি। প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে সাক্ষাতের পর দলটি নির্বাচনী রোডম্যাপ ইস্যুতে পরবর্তী করণীয় নির্ধারণ করার কথা ভাবছে।
গত সোমবার রাতে রাজধানীর গুলশানে বিএনপি চেয়ারপারসনের কার্যালয়ে দলের জাতীয় স্থায়ী কমিটির বৈঠকে এ সিদ্ধান্ত হয় বলে জানা গেছে।
বৈঠকে ফিলিস্তিনে ইসরায়েলি বর্বরতার নিন্দা জানানো হয়েছে এবং সারা দেশে দলীয়ভাবে বাংলা নববর্ষ পহেলা বৈশাখ পালনের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।
বিএনপির স্থায়ী কমিটির এই বৈঠকে দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান লন্ডন থেকে ভার্চুয়ালি যুক্ত হয়ে সভাপতিত্ব করেন।
দলের নীতিনির্ধারকরা জানান, বিএনপি গত ২৩ মার্চ জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের কাছে পাঁচটি সংস্কার কমিশনের ওপর দলীয় মতামত জমা দিয়েছে। দলের নেতারা মনে করেন, সরকারের উচিত নির্বাচনের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট সংস্কারগুলো দ্রুত সম্পন্ন করে চলতি বছরের ডিসেম্বরের মধ্যে নির্বাচন অনুষ্ঠান করা।
তবে নির্বাচনের সময়সীমা নিয়ে সরকারের কথাবার্তায় আশ্বস্ত নয় বিএনপি।
দলটি নির্বাচন প্রলম্বিত করার আশঙ্কা ব্যক্ত করেছে। সরকারের তরফ থেকে সর্বশেষ বলা হয়েছে, চলতি বছরের ডিসেম্বর থেকে আগামী বছরের জুনের মধ্যে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। বিএনপি মনে করে, এটি কোনো সুনির্দিষ্ট রোডম্যাপ নয়। এ জন্য নির্বাচন নিয়ে সরকার আসলে কী ভাবছে কিংবা তাদের অবস্থান কী, সেটা সুস্পষ্টভাবে জানতে শিগগিরই প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে দেখা করবে তারা।
জানা গেছে, বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর সিঙ্গাপুরে চিকিৎসা শেষে দেশে ফিরলে দলের স্থায়ী কমিটি প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে সাক্ষাৎ করতে যাবে।
ইসরায়েলি বর্বরতার প্রতিবাদে কর্মসূচি
স্থায়ী কমিটির বৈঠকে ফিলিস্তিনের ওপর ইসরায়েলের বর্বরতা ও গণহত্যার ঘটনায় তীব্র নিন্দা ও ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করে তা দ্রুত বন্ধের দাবি জানিয়েছে বিএনপি। একই সঙ্গে তারা এই হামলা ও গণহত্যার বিরুদ্ধে শিগগিরই ঢাকায় বড় ধরনের বিক্ষোভ করবে।
জানা গেছে, ফিলিস্তিন ইস্যুতে বিএনপির অঙ্গসংগঠনগুলো এরই মধ্যে নানা কর্মসূচি পালন করছে। আগামী ১২ এপ্রিল রাজধানীতে অনুষ্ঠেয় ‘মার্চ ফর গাজা’ কর্মসূচিতে সংহতি জানাবে বিএনপি; এবং দলটির নেতাকর্মীরা সেখানে অংশ নিতে পারেন।
পহেলা বৈশাখ পালন করা হবে
আগামী ১৪ এপ্রিল পহেলা বৈশাখে দেশীয় সংস্কৃতি ফুটিয়ে তুলতে দলীয়ভাবে নানা কর্মসূচি নেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে বিএনপির স্থায়ী কমিটি। বৈঠক সূত্রে জানা যায়, কর্মসূচিতে শোভাযাত্রা থেকে শুরু করে মেলাসহ সাংস্কৃতিক বিভিন্ন অনুষ্ঠান করার চিন্তা করছে দলটি। সারা দেশের জেলা ও উপজেলায় এই কর্মসূচি পালিত হবে।