শিরোনাম

প্রকাশিত : ২১ মার্চ, ২০২৫, ১২:১৫ রাত
আপডেট : ২১ মার্চ, ২০২৫, ০৪:০০ দুপুর

প্রতিবেদক : মাসুদ আলম

বিগত সরকারের পতন থেকে বর্তমান সরকারও শিক্ষা নিচ্ছে না : জিএম কাদের

মাসুদ আলম : জাতীয় পার্টি চেয়ারম্যান গোলাম মোহাম্মদ কাদের বলেন, সরকারের অন্যায় ও অবিচারের বিরুদ্ধে আমি কথা বলছি। তাই, আজ আমার বিরুদ্ধে দূর্ণীতির অভিযোগ দায়ের হয়েছে। ২০১৮ সালের যে অভিযোগ তোলা হয়েছে তখন আমাদের নেতা পল্লীবন্ধু হুসেইন মুহম্মদ এরশাদ জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান ছিলেন। জাতীয় পার্টির রাজনীতি ও নীতি নির্ধারণী বিষয় সিদ্ধান্ত নিতেন হুসেইন মুহম্মদ এরশাদ। তখন নাকি আমি দূর্ণীতি করেছি। যে অভিযোগ তোলা হয়েছে তা সম্পূর্ণ ভিত্তিহীন। আমি এমপি থাকা অবস্থায় গম সহ বিভিন্ন যে সহায়তা দেয়ার যে বিধান রয়েছে তাতে স্থানীয় জেলা ও উপজেলা প্রশাসনের মাধ্যমেই বাস্তবায়ন করা হয়েছে।

এক্ষেত্রে আমাদের কোন দায়-দায়িত্ব নেই বা ছিল না। আমাদের নেতা পল্লীবন্ধু হুসেইন মুহম্মদ এরশাদের মুখ বন্ধ করার জন্য দূর্ণীতির মামলা দেয়া হয়েছিল।  তিনি আরও বলেন, এরশাদ সাহেবের বিরুদ্ধে খুনের মামলা দেয়া হয়েছিল। আমার নামেও দূর্ণীতি ও খুনের মামলা দেয়া হয়েছে। কিন্তু, কোন নির্বাচনে আমাদের নেতা হুসেইন মুহম্মদ এরশাদ পরাজিত হননি। আমরাও সত্যের পক্ষে আছি ও থাকবো। জাতীয় পার্টির বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র শুরু হয়েছে, জাতীয় পার্টির ঘুরে দাঁড়ানোর সময় এসেছে। এখন জাতীয় পার্টি সামনের দিকে আরো এগিয়ে যাবে।

সামনে আমাদের সুদিন আসছে, জনগণ আমাদের সাথে আছে। জনগণ আমাদের কথা শুনতে চায়। ফ্যাসিবাদ থেকে দেশকে মুক্তি দিতে যে পথে যেতে হয় আমরা সে পথেই এগিয়ে যাবো। আমাদের নেতা এরশাদ সাহেবকে ৬ বছর জেলে আটকে রাখা হয়েছিল। আমাদের জেলে নেয়া হলে যাবো। ফাঁসি দিলে দেবে। এরশাদের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্রমূলক মামলা জনগণ মেনে নেয়নি, আমাদের বিরুদ্ধে দেয়া মামলাগুলোও জনগণ মেনে নেবে না। আমাদের নেতা এরশাদ সাহেব আমাকে বলেছিলো “ তোর বিরুদ্ধে যে দূর্ণীতির মামলা দেবে, সে ঘৃণিত হবে”। মানুষ এই মামলা নিয়ে হাসাহাসি করবে। আমরা এই মামলা মোকাবেলা করবো। সত্য সবসময় বিজয়ী হয়, আমরাও বিজয়ী হবো। তিনি বলেন, ইতিহাস থেকে কেউ শিক্ষা নেয় না, বর্তমান সরকারও বিগত সরকার থেকে শিক্ষা নেয়নি। বিগত সরকারের পতন থেকে বর্তমান সরকারও শিক্ষা নিচ্ছে না। এই দিন না আরো দিন আছে এই দিনেরে নিয়ে যাবো সেই দিনেরও কাছে।

বৃহস্পতিবার  সন্ধ্যায় জাতীয় পার্টি কেন্দ্রীয় কার্যালয় (কাকরাইল) মিলনায়তনে জাতীয় পার্টির প্রতিষ্ঠাতা ও সফল সাবেক রাষ্ট্রপতি পল্লীবন্ধু হুসেইন মুহুম্মদ এরশাদের জন্মদিন উপলক্ষ্যে কেক কেটে আলোচনা সভা ইফতার মাহফিল শেষে গণমাধ্যমকর্মীদের এসব  কথা বলেন।

জাতীয় পার্টি চেয়ারম্যান গোলাম মোহাম্মদ কাদের বলেন, আমাদের ন্যায়সঙ্গত ও শান্তিপূর্ণ কর্মসূচী বাধাগ্রস্ত করা হচ্ছে। আমাদের সাংবিধানিক অধিকার শান্তিপূর্ণ ও অহিংস কর্মসূচী পালন করতে দেয়া হচ্ছে না। জনগণের পক্ষে রাজনীতি চালু রাখার জন্য আমরা অন্যায়ের প্রতিবাদ করবোই। গতকাল আমাদের ইফতার পার্টিতে সন্ত্রাসী হামলা করে, আমাদের নেতাকর্মীদের গুরুতর আহত করা হয়েছে। সন্ত্রাসী হামলার হাত থেকে গণমাধ্যম কর্মীরাও রেহাই পায়নি। সাংবাদিক ও ক্যামেরাপার্সনদের মারধোর করে ক্যামেরা ভেঙে ফেলা হয়েছে। ইউটিউবারদের মোবাইল ফোন ছিনিয়ে নেয়া হয়েছে। সাধারণ পথচারীরাও হামলার শিকার হয়েছে। আমরা এই সন্ত্রাসী হামলার তীব্র নিন্দা জানাচ্ছি। একই সাথে দোষীদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেয়ার জোর দাবী জানাচ্ছি।

সরকারের দায়িত্ব হলো সাধারণ মানুষের জান-মালের নিরাপত্তা নিশ্চিত করা। আমরা দেখছি সরকার সাধারণ মানুষের নিরাপত্তা দিতে সম্পূর্ণ ব্যর্থ। পুলিশ বাহিনীকে অকার্যকর করে রাখা হয়েছে। আমরা গতকাল কয়েকবার পুলিশের কাছে সাহায্য চেয়েছি কিন্তু তারা আমাদের সাহায্য করতে এগিয়ে আসেনি। আমরা কৃতজ্ঞতা জানাচ্ছি বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর সদস্যদের প্রতি। তারা এসে সাধারণ মানুষের নিরাপত্তা নিশ্চিত করেছে। একই সাথে সন্ত্রাসীদের তাড়িয়ে দিতে সমর্থ হয়েছে।

তিনি বলেন, যতদিনে গণমানুষের অধিকার প্রতিষ্ঠা করতে না পারবো ততদিন আমাদের প্রচেষ্টা অব্যাহত থাকবে। আমরা গণমানুষের পক্ষে কথা বলবোই, যদি আমাদের জীবন দিতে হয় তাতেও আমরা পিছপা হবো না। আজ আমরা শান্তিপূর্ণভাবে হুসেইন মুহম্মদ এরশাদের জন্মদিন উদযাপন করতে পেরেছি এটা জনগণের বিজয়। নতুন যে ফ্যাসিবাদ চালু হয়েছে আমরা তার বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়িয়েছি। আজ আমরা প্রথম জয়লাভ করেছি। বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনে শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত আমরা সাথে ছিলাম। রংপুরের প্রথম শহীদ আবু সাঈদ এর কবর জিয়ারত ও তার মা বাবা কে শান্তনা ও সহায়তা আমরাই সবার আগে দিয়েছি। প্রতিদিন আমরা ছাত্র জনতার অহিংস আন্দোলনে সমর্থন দিয়ে কথা বক্তৃতা করেছি।

ছাত্রদের কোটা সংস্কার আন্দোলনের পক্ষে সবার আগে সংসদে আমি বক্তৃতা করেছি। এই আন্দোলন কোটা সংস্কার ছিল না, এই আন্দোলন ছিল বৈষম্যের বিরুদ্ধে। দেশের সকল মানুষের সাথে আমরা এই আন্দোলনে সক্রিয় ছিলাম। কিন্তু দুঃখের বিষয় হচ্ছে আন্দোলনে জয়লাভের পর মুষ্টিমেয় মানুষ এই জয়ের কৃতিত্বের দাবীদার হয়ে দাঁড়িয়েছে। অন্তর্বর্তীকালীন সরকারও তাদের সমর্থন দিয়ে যাচ্ছে। আরো দুঃখের বিষয় হচ্ছে তারা হঠাৎ করে আমাদের ফ্যাসিবাদের দোসর হিসেবে চিহ্নিত করতে শুরু করেছে। আমাদের সকল অহিংস রাজনৈতিক কর্মকান্ডে বাঁধা দেয়া শুরু করেছে। বিগত সরকারের আমলে আমরা শত বাধা ও ঝুঁকি নিয়ে জনগণের পক্ষে থেকে সমালোচনা করেছি। এখন দেখছি সেই বাধা আরো বড় হয়ে সামনে এসেছে। ফ্যাসিবাদ বিরোধী আন্দোলনে জনগণের যে প্রত্যাশা ছিল তা ধুলিস্যাৎ হয়ে যাচ্ছে। নব্য ফ্যাসিবাদ মাথাচাড়া দিয়ে উঠেছে। এর বিরুদ্ধে আমাদের রুখে দাঁড়াতে হবে। আমরা গতকালও বলেছি বর্তমান সরকার দেশের জনগণের জান-মালের নিরাপত্তা দিতে ব্যর্থ হয়েছে। দেশে নৃশংতার শেষ নেই। দেশের মানুষের সাথে জন্তু জানোয়ারের মতো ব্যবহার করা হচ্ছে। আমি আবারও বলছি, বর্তমান সরকার ব্যর্থ হয়েছে, আপনারা সরে দাঁড়ান। তিনি বলেন, আমেরিকার সরকার থেকে যে ইঙ্গিত পাওয়া যাচ্ছে তাতে বাংলাদেশের জন্য ভয়াবহ দুর্দিন আসতে পারে। আমাদের রপ্তানি বন্ধ হয়ে আয় ইনকাম বন্ধ হয়ে যেতে পারে। আমরা চাল উৎপাদনেও স্বয়ং সম্পূর্ণ নয়, সবকিছুই কিনতে হয়। তাই, রপ্তানিক আয় ও রেমিটেন্স বন্ধ হলে দেশে ভয়াবহ অবস্থা সৃষ্টি হবে। জঙ্গী ইস্যুতে আমেরিকা চাপ দিলে মধ্যপ্রাচ্য থেকেও আমাদের প্রবাসী আয় বন্ধ হয়ে যেতে পারে।

জাতীয় পার্টির প্রতিষ্ঠাতা চেয়ারম্যান ও সাবেক সফল রাষ্ট্রপতি পল্লীবন্ধু হুসেইন মুহম্মদ এরশাদ এর জন্মদিন উপলক্ষে আলোচনা সভা, ইফতার ও দোয়া মাহফিল অনুষ্ঠানে প্রেসিডিয়াম সদস্য ও ঢাকা মহানগর দক্ষিণের আহ্বায়ক মীর আব্দুস সবুর আসুদ এর সভাপতিত্বে বক্তব্য রাখেন -  পার্টির মহাসচিব মোঃ মুজিবুল হক চুন্নু, উপস্থিত ছিলেন - প্রেসিডিয়াম সদস্য- এডভোকেট মোঃ রেজাউল ইসলাম ভূঁইয়া, লিয়াকত হোসেন খোকা , আলমগীর সিকদার লোটন, জহিরুল ইসলাম জহির, জহিরুল আলম রুবেল, মনিরুল ইসলাম মিলন, মোঃ জসিম উদ্দিন ভূঁইয়া, উপদেষ্টা- ডঃ নূরুল আজহার শামীম, মোঃ হারুন আর রশিদ, মোঃ খলিলুর রহমান খলিল, ভাইস-চেয়ারম্যান - আহাদ ইউ চৌধুরী শাহিন, মোঃ হেলাল উদ্দিন, এম এ সোবহান , মোঃ আকতার হোসেন দেওয়ান, যুগ্ম মহাসচিব - এবিএম লিয়াকত হোসেন চাকলাদার, মোঃ হেলাল উদ্দিন, জুবের আলম রবিন, চেয়ারম্যানের প্রেস সেক্রেটারী খন্দকার দেলোয়ার জালালী, সম্পাদক মন্ডলীর সদস্য- মোঃ সোহেল রহমান, মোঃ আঃ হান্নান, মাহমুদ আলম, এম এ রাজ্জাক খান, জহিরুল ইসলাম মিন্টু, ইঞ্জিনিয়ার এলাহান উদ্দিন, সাবেক সমাজকল্যাণ সম্পাদক মোঃ গোলাম মোস্তফা, যুগ্ম সম্পাদক মন্ডলীর সদস্য- আজাহারুল ইসলাম সরকার, এডভোকেট আবু ওয়াহাব, যুগ্ম সম্পাদক রমজান আলী, ইঞ্জিনিয়ার জুবায়ের, মোঃ ইউসুফ, জাহিদুল ইসলাম, কেন্দ্রীয় নেতা - জি এম বাবু,মিনি খান, মাহবুবুর রহমান খসরু,আলমগীর হোসেন, উজ্জ্বল চাকমা,সৈয়দ মনিরুজ্জামান, অঙ্গ সহযোগী সংগঠনের নেতৃবৃন্দের মধ্যে - শ্রমিক পার্টির আহ্বায়ক মেফতাহ উদ্দিন জসিম,মটর শ্রমিক পার্টির আহ্বায়ক মেহেদী হাসান শিপন,  মোঃ আঃ রহিম,তরুণ পার্টির সদস্য সচিব মোড়ল জিয়া উর রহমান, সাংস্কৃতিক পার্টির সাংগঠনিক সম্পাদক ওমর ফারুক সুজন, জাতীয় ছাত্রসমাজের আহ্বায়ক মারুফ ইসলাম তালুকদার প্রিন্স,যুগ্ম আহ্বায়ক নাজমুল হাসান রেজা,পল্লীবন্ধু পরিষদ এর সদস্য সচিব - মোঃ সাইফুর রহমান ইমন।

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়