মনিরুল ইসলাম: বিএনপির স্থায়ী কমিটির অন্যতম সদস্য মির্জা আব্বাস বলেছেন, আওয়ামী লীগের ধূর্ত কর্মীরাই এখন বিএনপি-জামায়াতসহ বিভিন্ন দলে ঢুকে পড়েছে। বিভিন্ন রাজনৈতিক ব্যক্তির ছত্রছায়ায় তার টিকে থাকার চেষ্টা করছে। তারা ছদ্মবেশ পরিবর্তন করে চাঁদাবাজি, দখলবাজিসহ বিভিন্ন ধরনের অপকর্মে লিপ্ত হচ্ছে। এরা অপকর্ম করে বিএনপির কর্মীদের নামে অপবাদ ছড়াচ্ছে। এদেরকে চিহ্নিত করে বিতাড়িত করতে হবে।
তিনি বলেন, আমাদের ১শ কর্মী থাকলে এরমধ্যে দুই-একজন খারাপ লোক থাকতেই পারে। কিন্তু এই দুই-একজনের জন্য বাকি ৯৮জনকে কলঙ্কিত করতে পারি না। জননিরাপত্তার জন্য হুমকি কাউকে ছাড় দেওয়া হবে না।
বুধবার বিকালে শাহজাহানপুরস্থ রেলওয়ে অফিসার্স ক্লাব মাঠে থানা বিএনপি আয়োজিত তারেক রহমান প্রদত্ত "রাষ্ট্র সংস্কারে ৩১ দফা" প্রশিক্ষণ বিষয়ক কর্মশালায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
তিনি বলেন, তারেক রহমান দেশকে অর্থনৈতিকভাবে স্বাবলম্বী করতে এবং রাজনৈতিক সহবস্থান নিশ্চিত করতে ৩১ দফা রূপরেখা দিয়েছেন। নির্বাচন সামনে রেখে সংস্কার চলছে। আমি বর্তমান অন্তবর্তী সরকারকে বলবো, ৩১ দফা দেখেন- এখানে সংস্কারের সব বিষয়ই উল্লেখ আছে। শুধুমাত্র সংস্কারের কথা বলে নির্বাচন পিছানোর যুক্তি গ্রহণযোগ্য নয়। যে কাজটি ৭ দিনে করা সম্ভব সেটি কেনো সাত মাস সময় লাগাবে, যে কাজ একদিনে সম্ভব সেটি কেনো একমাস লাগাবে?
তিনি বলেন, কিছু লোভী রাজনৈতিক দল আছে তারা নির্বাচনের বিরোধিতা করছেন। তারা সবসময়ই বিরোধিতা করেন। ৪৭ সাল থেকে পাকিস্তান, পাকিস্তান আমল থেকে এখন পর্যন্ত শুধু বিরোধিতায় করে যাচ্ছেন। তারা নির্বাচনকে ভয় পায়। তারা জানে, নির্বাচনে তাদের ভরাডুবি হবে। এটা না হলে ওটা করা যাবে না, ওটা না হলে এটি করা যাবে না। আরে ১৭ বছর অনেকের ফাঁসি হয়েছে, জীবন দিয়েছে, জেল খেটেছে.. এত ত্যাগ শিকার কেন করেছে? কথা বলার অধিকারের জন্য করেছি, ভোটের অধিকার ফিরে পাওয়ার জন্য করেছি। ভোটের অধিকার যদি পাওয়া না যায় তাহলে কেনো হাজার হাজার মানুষ জীবন দিয়েছে। আজকে বলছে এটি না হলে নির্বাচন হবে না!
মির্জা আব্বাস বলেন, আজকে অনেকে বড় বড় কথা বলছেন। জুলাই বিপ্লবে আপনাদের কতজন শহীদ হয়েছে? খোদ বিএনপিরই ৪২২ জন জীবন বিলিয়ে দিয়েছে। আওয়ামী লীগ দেশকে তাদের তালুকদারী মনে করেছিলো। আপনারাও কি তাই মনে করছেন? কথা মেপে বলবেন। এমন কোন কথা বলবেন না যাতে আমাদের বেহিসাবি কথা বলতে হয়।
বিএনপির এই সিনিয়র নেতা বলেন, সাংবাদিকরা অনেক কিছু লিখে না। কয়েকটি দলের দখল ও চাঁদাবাজি দৃশ্যমান হলেও কেউ লিখছেন না। বিএনপির বিরুদ্ধে লিখতে অভ্যস্ত হয়ে গেছে। বিএনপির বিরুদ্ধে গণমাধ্যমে, ফেসবুকে, ইউটিউবে লেখে মজা লাগে। আসলে এ দেশে জনগণ ছাড়া আমাদের কোনো বন্ধু নেই।
কর্মশালায় সভাপতিত্ব করেন ঢাকা মহানগর দক্ষিণ বিএনপির আহবায়ক রফিকুল আলম মজনু। সদস্য সচিব তানভীর আহমেদ রবিনের সঞ্চালনায় এতে বক্তব্য রাখেন বিএনপির কেন্দ্রীয় নেতা হাবিবুর রশিদ হাবিব, মির্জা খোকন নগর দক্ষিণ বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক লিটন মাহমুদ, কে সিকান্দার কাদির, সাইদুর রহমান মিন্টু, ফরহাদ হোসেন, বীর মুক্তিযোদ্ধা গোলাম হোসেন, ইউনুস মৃধা, শাহজাহানপুর থানার আহবায়ক ফজলে রুবাইয়াত পাপ্পু, যুবদল দক্ষিণের আহবায়ক খন্দকার এনামুল হক এনাম, কৃষক দল দক্ষিণের সভাপতি হাজী কামাল হোসেন, মহিলা দল দক্ষিণের সভাপতি রুমা আকতার, শ্রমিক দল দক্ষিণের সাধারণ সম্পাদক বনরুল আলম সবূজ প্রমুখ।