নারায়ণগঞ্জের সিদ্ধিরগঞ্জে আধিপত্য বিস্তার ও ঝুট ব্যবসার নিয়ন্ত্রণকে কেন্দ্র করে বিএনপি ও ছাত্রদলনেতার অনুসারীদের মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে।
বৃহস্পতিবার বিকেলে আদমজী এলাকায় দফায় দফায় এ সংঘর্ষে গুলি চালানোর ঘটনাও ঘটে বলে জানান প্রত্যক্ষদর্শীরা।
এতে উভয়পক্ষের অন্তত ১০ জন আহত হয়েছেন বলে জানা গেছে।
সিদ্ধিরগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শাহীনূর আলম দ্য ডেইলি স্টারকে সংঘর্ষের তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
পুলিশ ও প্রত্যক্ষদর্শী সূত্রে জানা যায়, নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশনের ৬ নম্বর ওয়ার্ড বিএনপির সাবেক সাধারণ সম্পাদক মনির হোসেন ও মহানগর ছাত্রদলের সাবেক সভাপতি রাকিবুর রহমান সাগরের অনুসারীদের মধ্যে এ সংঘর্ষ হয়।
বিকেল সোয়া ৪টার দিকে সাগরের কয়েকজন অনুসারীকে আদমজী ইপিজেডের ভেতরে একটি পোশাক কারখানার সামনে মারধর করেন মনিরের অনুসারীরা। পরে উভয়পক্ষের মধ্যে ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়া হয় ও একপর্যায়ে সংঘর্ষে রূপ নেয়।
এ সময় উভয়পক্ষের মধ্যে গুলি বিনিময় হয় বলেও জানান প্রত্যক্ষদর্শীরা। পরে পুলিশ ও সেনাবাহিনী ঘটনাস্থলে এলে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আসে।
সংঘর্ষে একজন স্থানীয় সাংবাদিকও আহত হয়েছেন। আহত সাংবাদিক তোফাজ্জল হোসেন নারায়ণগঞ্জ ৩০০ শয্যা হাসপাতালে চিকিৎসাধীন আছেন।
সংঘর্ষ চলাকালে কয়েকটি মোটরসাইকেলে আগুন দেওয়া হয়, দোকানপাট ভাঙচুর করা হয়।
যোগাযোগ করা হলে ছাত্রদল নেতা রাকিবুর রহমান সাগর দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, 'আওয়ামী লীগের নেতারা এলাকা ছেড়ে পালিয়ে গেলেও তাদের দালালরা এখনো সন্ত্রাসীদের নিয়ন্ত্রণ করছে। তারা মানুষকে ব্যবসা করতে দিচ্ছে না। বিকেলে ইপিজেডের ভেতরে আমাদের কয়েকজন ছাত্রদল নেতার ওপর হামলা করে সন্ত্রাসীরা। হামলাকারীরা বিএনপি নেতা মনির হোসেনের অনুসারী। পরে এলাকাবাসী তাদের প্রতিহত করে।'
সংঘর্ষে নারায়ণগঞ্জ মহানগর ছাত্রদলের সাবেক সহসভাপতি মানিক মিয়া, সাবেক সহসাংগঠনিক সম্পাদক মো. মোহন, সিদ্ধিরগঞ্জ থানা ছাত্রদলের সাবেক জ্যেষ্ঠ সহসভাপতি মো. আরিফ আহত অবস্থায় হাসপাতালে চিকিৎসাধীন বলে জানান সাগর।
বিএনপি নেতা মনির হোসেনের সঙ্গে যোগাযোগ করা সম্ভব না হলেও তার ভাগ্নে রুহুল আমিন নিজেকে বিএনপি কর্মী পরিচয় দিয়ে ডেইলি স্টারকে বলেন, 'ইপিজেড আগে নিয়ন্ত্রণ করতেন যুবলীগ নেতা ও নাসিকের সাবেক কাউন্সিলর মতিউর রহমান। এখন ইপিজেডের নিয়ন্ত্রণ নিতে চান ছাত্রদল নেতা সাগর। ইপিজেডের ভেতরে আমাদের লোকজনের সঙ্গে সাগরের লোকজনের হাতাহাতি হয়। পরে সাগর ও তার দলবল আগ্নেয়াস্ত্র ও ধারালো অস্ত্র নিয়ে আমাদের ওপর হামলা চালায়।'
সংঘর্ষে তাদের অনুসারী রবিউল, ইব্রাহিম, সাকিব, সাব্বির, ইকবাল, রনি ও রাসেলসহ কয়েকজন আহত হন বলেও জানান রুহুল।
সংঘর্ষের বিষয়ে জানতে চাইলে সিদ্ধিরগঞ্জ থানার ওসি শাহীনূর আলম দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, 'ইপিজেডের ঝুট ব্যবসার নিয়ন্ত্রণ নেওয়াকে কেন্দ্র করে উভয়পক্ষের মধ্যে প্রথমে হাতাহাতি হয়। পরে তা সংঘর্ষে রূপ নেয়। এ সময় আগ্নেয়াস্ত্র থেকে গুলি চালানোর খবরও আমরা পেয়েছি।'
সংঘর্ষে উভয়পক্ষের অন্তত ১০ জন আহত হয়েছে বলে প্রাথমিকভাবে জানা গেছে। সেনাবাহিনী ও পুলিশ উভয়পক্ষকে ধাওয়া দিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে বলে জানান ওসি।
এ ঘটনায় তদন্তের পর আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলেও জানান এই পুলিশ কর্মকর্তা।