মহসিন কবির: রমজান মাসে দিনের বেলা হোটেল-রেস্তোরাঁ বন্ধসহ সব ‘অশ্লীলতা’ বন্ধে কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহণ করতে অন্তর্বর্তী সরকারের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন জামায়াতে ইসলামীর আমির ডা. শফিকুর রহমান। একইসঙ্গে দেশবাসীর প্রতি মাহে রমজানের পবিত্রতা বজায় রাখার আহ্বান জানিয়েছেন তিনি। শুক্রবার গণমাধ্যমে পাঠানো এক বিবৃতিতে শফিকুর রহমান এসব কথা বলেন।
তিনি বলেন, পবিত্র মাহে রমজান রহমত, মাগফিরাত ও নাজাতের সওগাত নিয়ে আমাদের সামনে সমাগত। এ মাসের শেষ দশ দিনের মধ্যে রয়েছে পবিত্র লাইলাতুল ক্বদর নামে একটি বরকতময় মহিমান্বিত রাত যা হাজার মাসের চেয়েও উত্তম। এ মাস তাক্বওয়া, সহনশীলতা ও পরস্পরের প্রতি সহানুভূতি প্রদর্শনের মাস। জাতি এমন এক সময় পবিত্র মাহে রমজান পালন করতে যাচ্ছে যখন দেশ ফ্যাসিবাদ থেকে মুক্ত হয়েছে। দীর্ঘ সাড়ে ১৫ বছরের জগদ্দল পাথরের ন্যায় চেপে বসা জালিমের হাত থেকে মুক্ত হয়ে দেশের জনগণ মুক্ত বাতাসে শ্বাস নিতে পারছে।
দেশের নাগরিকরা ভোটাধিকারসহ সকল মৌলিক মানবাধিকার ফিরে পাবার প্রত্যাশায় আছে। অন্যদিকে পতিত স্বৈরাচারের দোসররা দেশকে অস্থিতিশীল করার পাঁয়তারা করছে। দেশবাসীকে ঐক্যবদ্ধভাবে ফ্যাসিবাদের দোসরদের সকল চক্রান্ত-ষড়যন্ত্র মোকাবেলা করতে হবে। শান্তি-স্বস্তির নতুন বাংলাদেশ গঠিত না হওয়া পর্যন্ত আমাদের আন্দোলন-সংগ্রাম চালিয়ে যেতে হবে।
জামায়াত আমির আরও বলেন, ফ্যাসিবাদের দোসর অসৎ ব্যবসায়ীরা নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্য ও ইফতার সামগ্রীর মূল্য বৃদ্ধি করার সুযোগ যেন না পায় সেদিকে অন্তর্বর্তী সরকারকে কঠোর ব্যবস্থা নিতে হবে। অসৎ ব্যবসায়ীদের সকল সিন্ডিকেট ভেঙে দিতে হবে। সুষ্ঠু ও সুপরিকল্পিত বাজার ব্যবস্থাপনা গড়ে তুলতে হবে। দরিদ্র লোকরা যেন পবিত্র মাহে রমজানের সিয়াম অনায়াসে পালন করতে পারে সেদিকে খেয়াল রাখতে হবে। এজন্য ভর্তুকি দিয়ে হলেও চাল, ডাল, তেল, মাছ, গোশত, তরি-তরকারি, চিনি, খেঁজুর, ছোলা, মুড়ি ইত্যাদি দ্রব্যের মূল্য জনগণের ক্রয় সীমার মধ্যে নিয়ে আসতে হবে।
জামায়াত আমিরের বক্তব্যে ব্যাপক প্রতিক্রিয়া জানিয়েছে বিভিন্ন পেশার মানুষ। নিউজের মমেন্ট বক্স ও ফেসবুকে।
শহিদুল মল্লিক নামে নামে দৈনকি পত্রিকার অনলাইনে পোষ্ট করা কমেন্ট বক্সে লিখেছেন- কেন কাকা? আল্লাহ রাব্বুল আল-আমিন কি আপনাদেরকে হোটেল বন্ধ রাখার ঠিকাদারি দিয়েছেন নাকি! এদেশে কি অন্য ধর্মের মানুষ থাকেনা? তারা কি হোটেলে খেতে পারবেনা? নাকি জোর পূর্বক আপনাদের সাথে তাদেরকেও রোজা রাখতে বাধ্য করবেন। নিজেদের সংযমের জোর এত কম কেন?
অজয় কুমার দাস নামে একজন লিখেছেন, অন্য ধর্মের জনগণেরও তো অধিকার থাকা উচিত।
কাজী হেলাল নামে একজন ফেসবুকে লিখেছেন, আমরা যে ধর্মান্ধ তা স্পষ্ট। এরকম করলে ভিন্ন ধর্মের মানুষ কি করবে?। তানজিনা বাহার তন্নি এক ফেসবুকে লিখেছেন, অসাম্প্রদায়িক একটা দেশে এমন দাবি করা, আর এর সমর্থন করা দুইটাই বোকামি। কে রোজা রাখবে, কে বাইরে খাবে এইসব ব্যাপারও কি এখন রাজনৈতিক দলের দ্বারা নির্ধারিত হবে নাকি!!!!
রায়হান কবির নামে একজন ফেসবুকে লিখেছেন, এত শক্ত ঈমান
খাবার দেখলেই রোজা ভেঙে যাবার ভয় আবার রাজনীতির নরম নরম বয়ান দেন।
সারাহ্ নামে একজন ফেসবুকে লিখেছেন, দেশে কি শুধু মুসলমান বাস করে নাকি? জোর করে ধর্ম পালন করার মানে কি। ধর্ম ভালো হতে হবে মন থেকে জোর করে পালন করলে সেটা আল্লাহর উপরে সেজদা হলো নাকি না যে ব্যক্তি আদেশ দিয়েছে তার ভয়ে হল? এসব বাড়াবাড়ির কারণেই জামাতে ইসলাম ভোট পায়না।
মেহেদী হাসান নামে একজন ফেসবুকে লিখেছেন, শুধুমাত্র হিন্দুভাইরা ছাড়া মুসলিমরা যেনো ঢুকতে না পারে সে ব্যাবস্থা করুন। ফয়সাল রেজা নামে একজন ফেসবুকে লিখেছেন, হোটেল রেষ্টুরেন্ট বন্ধ রাখতে হবে কেন?
কি কারন?এখনই এতো শক্ত ক্ষমতা পাইলে না জানি কি করে?
এম এইচ সুমন নামে একজন ফেসবুকে লিখেছেন, খাবে আর কে ঘুমাবে এইটা এখন রাজনীতিবিদ ঠিক করবে? এইজন্য রাজনীতি শুনলেই মানুষ মুখ ফেরায়।
শাহরিয়ার ফাহিম নামে একজন ফেসবুকে লিখেছেন, হোটেল, রেস্টুরেন্ট বন্ধ থাকলে এর সাথে জড়িত মানুষগুলোর বেতনের কি হবে? ইনকাম না হলে হোটেল, রেস্টুরেন্টের মালিক তাঁদের বেতন দিবে? ঈদে বোনাস দিবে?।
এন এস হৃদয় নামে একজন ফেসবুকে লিখেছেন, জোর না করে ওই আবেগটা মুসলমানদের মনে ধারণ করার জন্য কাজ করে যান,ওই আবেগ তৈরি না হলে জোর করে কিছু করা যায় না।
আল ইমরান হোসেন মীর একজন ফেসবুকে লিখেছেন, আপনি আমি রোজাদার, আপনি আমি হোটলে খাওয়ার দরকার নাই, খাবো না, ভিন্ন ধর্মাবলম্বী মানুষ,বেরোজাদার, খেটে খাওয়া রিক্সাচালক,মজুররা দুস্থ, অসুস্থ, শিশু, যারা রোজা থাকতেে পারছেনা তাদের গতি কি হবে বলেন, যাহারা হোটেলের কাজের সাথে সম্পৃক্ত অমন লক্ষাধিক মানুষের রোজার এক মাসের উপার্জন ব্যবস্থার কি হবে? তাদের পরিবার, সন্তান, বাবা মাকে কি খাওয়াবে? তাদের পূর্নবাসনেরর ব্যবস্থা কি করেছেন? মৌলবাদী চিন্তা বর্জন করেন, তার চেয়ে বলেন, প্রকাশ্যে না করে শতভাগ গোপনীয়তা রক্ষা করে, রোজাদারদের যাতে কোন ক্ষতি না হয়, সেভাবে হোটেল রেস্তোরা চালু করতে, সে ব্যাপারে কঠোর হোন, আমরা ইসলামি নীতির প্রতি অন্তর হৃদয় হতে শ্রদ্ধাশীল। মনে রাখবেন আপনারা কেহ কিন্তু এখনো ক্ষমতায় যাননি।