শিরোনাম
◈ ‘গোয়েন্দা প্রতিবেদন বলছে চুরি ছিনতাই ডাকাতির সাথে যারা যুক্ত হচ্ছে এদের অনেকেই কিশোর গ্যাং’ ◈ সীমান্তে ভারতীয়রা আইন না মানলে আরও কঠোর হবে বিজিবি: বিজিবি মহাপরিচালক (ভিডিও) ◈ শৈলকুপায় দু’দল গ্রামবাসীর সংঘর্ষে ৫০ জন আহত ◈ নোয়াখালীতে প্রবাসীর বাড়িতে ফিল্মি স্টাইলে হামলা-ভাংচুর, লুটপাট, আটক ১ ◈ যা হয়েছে, সেটা ছিল একটি অনিচ্ছাকৃত ভুল : হাসনাত আব্দুল্লাহ ◈ মধ্যরাতে সড়কে গাছ ফেলে অস্ত্রের মুখে ২০টি গাড়িতে ডাকাতি (ভিডিও) ◈ পবিত্র মাহে রমজানের ফজিলত সম্পর্কে ৭ হাদিস ◈ তরুণদের নতুন দল, কীভাবে দেখছেন রাজনীতিবিদরা ◈ ট্রাম্পের কোন কথায় খেপে গেলেন জেলেনস্কি (ভিডিও) ◈ ব্রাহ্মণবাড়িয়ার সরাইলে জাফর খাল খননকাজে অনিয়মের অভিযোগ ঠিকাদারের বিরুদ্ধে!

প্রকাশিত : ০১ মার্চ, ২০২৫, ১১:০৮ দুপুর
আপডেট : ০১ মার্চ, ২০২৫, ০২:৪২ দুপুর

প্রতিবেদক : নিউজ ডেস্ক

সর্বাগ্রে জাতীয় সংসদ নির্বাচন দিতে হবে, সৎ ত্যাগী নেতাকর্মীদের মূল্যায়ন করা হবে:বিএনপি

ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে বিএনপির বর্ধিত সভায় গৃহীত সিদ্ধান্তে দলের সৎ ও ত্যাগী নেতাকর্মীদের যথাযথ মূল্যায়ন করে বিজয়ের পথে এগিয়ে চলার দৃঢ় প্রত্যয় ঘোষণা করা হয়েছে। একই সঙ্গে একটি অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচন অনুষ্ঠানের জন্য প্রয়োজনীয় সংস্কার সম্পন্ন করে যথাশীঘ্র সম্ভব সর্বাগ্রে জাতীয় সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠানের জন্য অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রতি আহ্বান জানানো হয়েছে। গতকাল শুক্রবার বিএনপির সিনিয়র যুগ্মমহাসচিব রুহুল কবির রিজভীর স্বাক্ষরিত এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়। বৃহস্পতিবার বর্ধিত সভায় লন্ডন থেকে ভার্চুয়ালি অংশ নিয়ে বক্তৃতা করেন বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়া ও ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান। সভায় সারা দেশ থেকে ৩ হাজারের বেশি কেন্দ্রীয় ও তৃণমূলের নেতারা অংশ নেন। সাত বছর পর অনুষ্ঠিত এই বর্ধিত সভায় ১০টি সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।

গৃহীত সিদ্ধান্তসমূহ হলো—বিএনপির এবং সকল অঙ্গ দল ও সহযোগী সংগঠনের সকল পর্যায়ের নেতাকর্মীদের জনবান্ধব কর্মসূচি নিয়ে জনগণের মাঝে সক্রিয় হওয়ার এবং কথা ও কাজে জনগণের শ্রদ্ধা ও ভালোবাসা অর্জনের নির্দেশ দিচ্ছে। একই সঙ্গে এই সভা দলীয় নীতি, আদর্শ, কর্মসূচি বাস্তবায়নে অবহেলা এবং দুর্নীতি-অনাচারসহ গণবিরোধী সকল কর্মকাণ্ড ও আভ্যন্তরীণ দ্বন্দ্ব থেকে বিরত থাকার জন্যও সকলকে কঠোর নির্দেশ প্রদান করছে। গৃহীত সিদ্ধান্তে আরো বলা হয়, অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের জনকল্যাণমূলক সকল দৈনন্দিন কর্মকাণ্ডের সাফল্য নিশ্চিত করতে সর্বাত্মক সহযোগিতা করা এবং এই সরকারের প্রধান দায়িত্ব জনগণকে তাদের নির্বাচিত সরকার প্রতিষ্ঠার মাধ্যমে গণতন্ত্র ফিরিয়ে দেওয়ার লক্ষ্যে সর্বাগ্রে অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ জাতীয় সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠানে সর্বাত্মক সহযোগিতা করা সকল গণতন্ত্রকামী দেশপ্রেমিক নাগরিকের দায়িত্ব। ফ্যাসিবাদী শাসনের মাধ্যমে দীর্ঘদিন ধরে গুম, খুন, গায়েবি মামলাসহ সীমাহীন গণবিরোধী ও মানবতাবিরোধী অপরাধের মূল অবৈধ সরকার প্রধানসহ তার চিহ্নিত সহযোগীরা কীভাবে নির্বিঘ্নে দেশ থেকে বেরিয়ে গেলেন এবং এখনো অসংখ্য অপরাধী অবাধে বিচরণ করছে তার একটি সুস্পষ্ট ব্যাখ্যা এই সভা সরকারের কাছে দাবি করছে। একই সঙ্গে সভা এই সব অপরাধীর বিরুদ্ধে সুস্পষ্ট প্রমাণ এবং দেশি-বিদেশি প্রতিষ্ঠানের নির্ভরযোগ্য অভিযোগ থাকার পরেও তাদের বিচার ও শাস্তিদানে বিলম্বে ক্ষোভ ও অসন্তুষ্টি প্রকাশ করছে। এই সভা মনে করে যে, বিদেশে অবস্থান করে যারা দেশের স্বাধীনতা, সার্বভৌমত্ব ও শান্তি-শৃঙ্খলার বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র করছে এবং অপপ্রচার চালাচ্ছে তাদের এবং তাদের দেশীয় সহযোগীদের বিরুদ্ধে কার্যকর কূটনৈতিক ও আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণে সরকারের আরো উদ্যোগী হওয়া প্রয়োজন। একই সঙ্গে এই সভা পতিত ফ্যাসিবাদী সরকার এবং তাদের সহযোগী ১/১১’র সরকারের দায়ের করা সকল মিথ্যা ও গায়েবি মামলা দ্রুত প্রত্যাহারের জোর দাবি জানাচ্ছে।  

গৃহীত সিদ্ধান্তে আরো বলা হয়, একটি অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের মাধ্যমে জনগণ ভোট দিয়ে রাষ্ট্র পরিচালনার জন্য তাদের প্রতিনিধি নির্বাচনের মাধ্যমেই শুধু গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা করে থাকে। এই মৌলিক অধিকার থেকে এদেশের জনগণকে প্রায় দেড় যুগ বঞ্চিত রাখা হয়েছে। ফলে এই বঞ্চনার মেয়াদ দীর্ঘায়িত করার কোনো অজুহাত তাদের কাছে গ্রহণযোগ্য নয়।

গৃহীত সিদ্ধান্তে আরো বলা হয়, তারেক রহমান ঘোষিত ৩১ দফা রাষ্ট্রকাঠামো মেরামতের রূপরেখার আলোকে রাষ্ট্র সংস্কার কর্মসূচি বাস্তবায়নে ফ্যাসিবাদবিরোধী সকল দল/সংগঠনের সঙ্গে মিলে অব্যাহতভাবে কাজ করা সময়ের দাবি। ঐকমত্যে গৃহিত যেসব সংস্কার প্রস্তাব নির্বাচনের আগে বাস্তবায়ন সম্ভব তা অবিলম্বে বাস্তবায়ন এবং যেসব সংস্কারের জন্য আইন কিংবা সংবিধান পরিবর্তন প্রয়োজন তা নির্বাচিত জাতীয় সংসদে অনুমোদনের লক্ষ্যে পেশ করার জন্য এই সভা প্রস্তাব করছে।

বেগম খালেদা জিয়া এবং সভার সভাপতি সময়ের সাহসী ও সফল নেতা তারেক রহমানের বক্তব্যের আলোকে মহান স্বাধীনতার ঘোষক বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা শহিদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমান বীর উত্তমের ঘোষিত-‘ব্যক্তির চেয়ে দল বড়, দলের চেয়ে দেশ বড়’ এই আদর্শকে ধারণ করে এই সভা ‘ঐক্যেই শক্তি-ঐক্যেই মুক্তি’ এই আপ্তবাক্যকে বাস্তবায়নের মাধ্যমে দলের সৎ ও ত্যাগী নেতাকর্মীদের যথাযথ মূল্যায়ন করে বিজয়ের পথে এগিয়ে চলার দৃঢ় প্রত্যয় ঘোষণা করছে।

ফ্যাসিবাদবিরোধী আন্দোলনে অংশগ্রহণকারী সকল রাজনৈতিক দল এবং শ্রেণি-পেশার সংগঠনকে আস্থায় নিয়ে সম্মিলিতভাবে পতিত সরকারের সৃষ্ট ও সুবিধাভোগী ব্যবসায়ী ও সিন্ডিকেটের পাশাপাশি অযৌক্তিক কারণে আন্দোলনের নামে জনজীবন বিপর্যস্থের অপচেষ্টাকারীদের বিরুদ্ধে গণপ্রতিরোধ গড়ে তোলা প্রয়োজন। চাঁদাবাজি, দখলদারিত্ব ও বিশৃঙ্খলায় জড়িতদের বিরুদ্ধে আইনানুগ কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহণে সরকারি ব্যর্থতা গ্রহণযোগ্য নয়। রাজনৈতিক প্রতিহিংসা চরিতার্থ করার জন্য অবৈধ সরকার বেগম খালেদা জিয়াকে মিথ্যা ও বানোয়াট অভিযোগে কারারুদ্ধ করার পর দেশের গণতন্ত্রকামী জনগণ, বিএনপি ও অঙ্গদল-সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মীরা যখন দেশ, দল ও জনগণের আন্দোলন এবং ভবিষ্যত্ নিয়ে দুঃশ্চিন্তাগ্রস্ত তখন স্বৈরাচারী সরকারের নীপিড়নের শিকার হয়ে অসুস্থ অবস্থায় প্রবাসে থাকতে বাধ্য হওয়া দলের সিনিয়র ভাইস চেয়ারম্যান তারেক রহমানকে অসীম সাহসিকতার সঙ্গে দেশের বৃহত্তম রাজনৈতিক দল বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান হিসেবে দায়িত্ব গ্রহণ করতে হয়। যখন দলের চেয়ারপারসন কারাগারে, দলের অসংখ্য নেতাকর্মী যখন গুম, বন্দি, আহত ও সীমাহীন নিপীড়নের শিকার এবং একটি গণবিরোধ সরকার যখন রাষ্ট্রক্ষমতা দখল করে স্বাভাবিক রাজনীতির পথ অবরুদ্ধ করে রেখেছে—তেমন এক কঠিন সময়ে দায়িত্ব গ্রহণ করে তারেক রহমান দিনরাত অবিশ্রান্ত পরিশ্রম করে, যৌথ সিদ্ধান্তে দল পরিচালনা করে এবং দল ও অঙ্গ দল-সহযোগী সংগঠনের সকল পর্যায়ের নেতাকর্মীর সঙ্গে নিয়মিত যোগাযোগ রেখে যেভাবে দলকে সুসংহত ও আন্দোলনকে বেগবান করেছেন তা অসম্ভবকে সম্ভব করার দৃষ্টান্ত। আন্দোলনকে সংহত, শক্তিশালী ও বিস্তৃত করে বিজয় নিশ্চিত করার লক্ষ্যে তার নেতৃত্ব ও দিকনির্দেশনায় বাংলাদেশে প্রথমবারের মতো ডান-বাম-মধ্যডান-মধ্যবাম অসংখ্য রাজনৈতিক দলের ঐক্য প্রতিষ্ঠা এবং এক দফা দাবি আদায় করে ৩১ দফা রাষ্ট্র কাঠামো মেরামতের রূপরেখা বাস্তবায়নের যুগপত্ আন্দোলন দেশের রাজনীতিতে এক নতুন ও সফল ধারার সূচনা করে। এই যুগপত্ আন্দোলনের পথ ধরেই ২০২৪ সালের জুলাই-আগস্টে হাজারো ছাত্র-শ্রমিক-জনতার আত্মত্যাগের বিনিময়ে গণঅভ্যুত্থান সফল হয়; অবৈধ সরকার প্রধান দেশ ছেড়ে পালিয়ে যায় এবং ফ্যাসিবাদের পতন ঘটে। ফ্যাসিবাদবিরোধী এই গণঅভ্যুত্থানের ভিত্তি স্থাপন ও শক্তিশালীকরণের মাধ্যমে বিজয়ী করার লড়াইয়ে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের কৌশলী, সক্রিয় ও গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা গণতন্ত্রকামী জনগণের প্রশংসা অর্জন করেছে।

দলের দুঃসময়ে দায়িত্ব গ্রহণ করে দলের কার্যক্রমকে শক্তিশালী, দলকে ঐক্যবদ্ধ ও সুসংহত করা, বৃহত্তর জাতীয় ঐক্য গড়ে তোলা এবং সর্বোপরি ফ্যাসিবাদ পতনে নিয়ামক ভূমিকা পালনের জন্য এই সভা তারেক রহমানের প্রতি গভীর শ্রদ্ধা জানাচ্ছে। একই সঙ্গে দীর্ঘস্থায়ী আন্দোলনে নিহত, আহত ও ক্ষতিগ্রস্ত নেতাকর্মীদের সহায়তার মাধ্যমে দেশের রাজনৈতিক ইতিহাসে তিনি যে মানবিক নেতৃত্ব প্রতিষ্ঠা করেছেন তার জন্যও এই সভা তাকে অভিনন্দন জানাচ্ছে।

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়