শিরোনাম
◈ ডাকাত ও ছিনতাইকারীর কবলে অসহায় জীবন ◈ বিকেলে চ্যাম্পিয়নস ট্রফিতে অস্ট্রেলিয়া-ইংল্যান্ড মুখোমুখি ◈ শহীদ মিনার ভাঙার ভিডিও ভাইরাল, যা জানা গেল (ভিডিও) ◈ মাঠে নেমেছে চীন - তিস্তা নিয়ে ভারতের দাদাগিরি যেভাবে শেষ হচ্ছে ◈ বাংলাদেশ-ভারত ম্যাচ সম্প্রচারের সময় পাকিস্তানের নাম বাদ, আইসিসির কাছে ব্যাখ্যা চেয়েছে পিসিবি ◈ সশস্ত্র বাহিনী প্রধানকে বরখাস্ত করলেন ট্রাম্প ◈ খিলগাঁও গ্যারেজপট্টির আগুনে ২৪ গাড়ি পুড়ে ছাই! ◈ ডিসেম্বরে নির্বাচন আয়োজনে ইসি কতটা প্রস্তুত? ◈ ব্যবসায়ী ট্রাম্পের ‌‘লেনদেনভিত্তিক কূটনীতিকে’ মেনে নিয়েই কাজ করছে বাংলাদেশ ◈ যেসব সিদ্ধান্ত এলো বিজিবি-বিএসএফের সীমান্ত সম্মেলন থেকে 

প্রকাশিত : ২১ ফেব্রুয়ারি, ২০২৫, ০৬:৪৫ বিকাল
আপডেট : ২২ ফেব্রুয়ারি, ২০২৫, ১২:০০ দুপুর

প্রতিবেদক : মাসুদ আলম

ফলক থেকে নাম মুছে দিয়েই ভাষা আন্দোলনে গোলাম আযমের অবদান মুছে ফেলা যাবে না : জামায়াত 

মাসুদ আলম : ’৫২-এর ভাষা আন্দোলন জাতি হিসাবে আমাদের জন্য গর্বের এবং প্রেরণার উৎস’ বলে মন্তব্য করেছেন বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল ও সাবেক এমপি এএইচএম হামিদুর রহমান আযাদ। 

তিনি শুক্রবার সকাল ১০টায় রাজধানীর কাকরাইলস্থ ইনস্টিটিউশন অব ডিপ্লোমা ইঞ্জিনিয়ার্স বাংলাদেশ (আইডিইবি) ভবনের কাউন্সিল হলে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী ঢাকা মহানগরী উত্তর আয়োজিত শহীদ দিবস ও আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস উপলক্ষে আলোচনা সভা ও দোয়া অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন। 

কেন্দ্রীয় নির্বাহী পরিষদ সদস্য ও ঢাকা মহানগরী উত্তরের আমীর মোহাম্মদ সেলিম উদ্দিনের সভাপতিত্বে এবং কেন্দ্রীয় মজলিসে শূরা সদস্য ও ঢাকা মহানগরী উত্তরের সহকারী সেক্রেটারি মাহফুজুর রহমানের সঞ্চালনায় আলোচনা সভায় বক্তব্য রাখেন কেন্দ্রীয় মজলিস শূরা সদস্য ও ঢাকা মহানগরী উত্তরের নায়েবে আমীর ইঞ্জিনিয়ার গোলাম মোস্তফা, কেন্দ্রীয় মজলিসে শূরা সদস্য ও ঢাকা  মহানগরী উত্তরের সহকারী সেক্রেটারি নাজিম উদ্দীন মোল্লা ও মাওলানা ইয়াছিন আরাফাত এবং কেন্দ্রীয় মজলিসে শূরা সদস্য মোহাম্মদ জামাল উদ্দীন,মোস্তাফিজুর রহমান ও প্রচার-মিডিয়া সম্পাদক মু. আতাউর রহমান সরকার প্রমূখ।

এএইচএম হামিদুর রহমান আযাদ বলেন, ভাষা আন্দোলনের কথা আসলে ১৯৫২-এর ২১ ফেব্রুয়ারি কথা উঠলেও এর পেছনেও রয়েছে অনেক অজানা ইতিহাস। রাষ্ট্রভাষা বাংলার প্রথম দাবি ওঠে বৃটিশ শাসনামলে ১৯১১ সালে। মূলত, রংপুর শিক্ষা সম্মেলনে নওয়াব আলী চৌধুরী বৃটিশ সরকারের কাছে প্রথম এ দাবি উপস্থাপন করেন। এরপর ১৯১৮ সালে শান্তি নিকেতনে রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর হিন্দিকে ভারতের রাষ্ট্রভাষা করার দাবি উত্থাপন করেন। ড. মুহাম্মদ শহীদুল্লাহ এ দাবির প্রতিবাদ করে বাংলাকে রাষ্ট্রভাষার জোরালো দাবি উত্থাপন করেন। ১৯৩৬ সালে একই দাবি উত্থাপন করেন মাওলানা আকরাম খাঁ। ১৯৪৬ সালে আলীগড় বিশ্ববিদ্যালয়ে উপাচার্য জিয়াউদ্দীন উর্দ্দুকে রাষ্ট্রভাষা করার দাবি উত্থাপন করলে ড.  মুহাম্মদ শহীদুল্লাহ এ প্রস্তাবের প্রতিবাদ করে বাংলাকে রাষ্ট্রভাষার মর্যাদা দেওয়ার জোরালো দাবি করেন। ঔপনিবেশিক শাসনের অবসানের পর পাকিস্তানের প্রতিষ্ঠাতা মোহাম্মদ আলী জিন্নাহ এবং পরবর্তীতে পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী লিয়াকত আলী খান উর্দ্দুকে  পাকিস্তানের একমাত্র রাষ্ট্রভাষা করার প্রস্তাব করলে জনগণ বিক্ষুদ্ধ হয়ে ওঠে। দুর্বার ছাত্র আন্দোলন গড়ে ওঠে।

ভাষা আন্দোলনে শহীদ অধ্যাপক গোলাম আযমের অবদানের কথা উল্লেখ করে তিনি আরও বলেন, অধ্যাপক গোলাম আযম ছিলেন ভাষা আন্দোলনের সম্পূখ সারির নেতা। তিনি রাষ্ট্রভাষা বাংলার দাবিতে ডাকসুর নির্বাচিত জিএস হিসাবে লিয়াকত আলী খানের কাছে স্মারক লিপিও পেশ করেছিলেন। তিনি ভাষা আন্দোলনে নেতৃত্ব দেওয়ার কারণে বারবার গ্রেফতার, কারাবরণ ও কলেজের চাকুরী হারিয়েছিলেন। কিন্তু হীনমন্যতার কারণে তাকে মূল্যায়ন করা হয়নি বরং ডাকসুর জিএসদের নাম ফলক থেকে তার নাম মুুছে ফেলা হয়েছে। কিন্তু ফলক থেকে নাম মুছে ফেলেই দেশ, জাতি ও ভাষা আন্দোলনে তার অবদান মুছে ফেলা যাবে না। তিনি হীন্যমনতা পরিহার করে সরকারকে অধ্যাপক গোলাম আযমের প্রাপ্য সম্মান দেওয়ার আহবান জানান। 

তিনি বলেন, ৫ আগস্ট ছাত্র-জনতার ঐক্যবদ্ধ বিপ্লবের মাধ্যমে দেশ ও জাতি নতুন দিশা পেলেও দেশ এখনো বৈষম্যমুক্ত হয়নি। এমন দিশা আমরা ১৯৭৫ সালের ৭ নভেম্বর পেয়েছিলাম। সেদিন সিপাহী-জনতা ঐক্যবদ্ধ হয়ে দেশকে আধিপত্যবাদ মুক্ত করেছিলো। কিন্তু সে ধারাবাহিকতা রক্ষা হয়নি। বিগত প্রায় সাড়ে ১৫ বছর দেশ ও জাতির ঘাড়ে আওয়ামী স্বৈরাচারের জগদ্দল পাথর চেপে বসেছিলো। দেশকে পরিণত করা হয়েছিলো জুলুম- নির্যাতন, খুন-ধর্ষণ এবং দুর্নীতি-লুটপাটের অভয়ারণ্যে। কথিত বিচারের নামে প্রহসন করে জাতীয় নেতাদের একের পর এক হত্যা করা হয়েছিলো। কিন্তু আগস্ট বিপ্লবের পরও আজও বৈষম্য দূর হয়নি। সকল রাজবন্দী মুক্তি লাভ করলেও অসুস্থ জননেতা এটিএম আজহারুল ইসলাম এখনো কারাগারে অন্তরীণ রয়েছেন। তিনি আবিলম্বে জননেতা এটিএম আজহারুল ইসলামের নিঃশর্ত মুক্তি, দলীয় নিবন্ধন ও প্রতীক ফিরে দিতে সরকারের প্রতি জোর দাবি জানান। অন্যথায় দুর্বার গণআন্দোনের মাধ্যমে জনগণ দাবি আদায় করেই ছাড়বে।

হামিদ আযাদ বলেন, আওয়ামী- ফ্যাসীবাদীরা পতনের আগের রাষ্ট্রের সকল অবকাঠামো ধ্বংস করে দিয়েছে। তাই রাষ্ট্রের প্রয়োজনীয় সংস্কারের আগে কোন নির্বাচন অবাধ, নিরপেক্ষ ও গ্রহণযোগ্য হবে না। সংস্কার ছাড়া নির্বাচন হলে অর্জিত বিপ্লব ও বিজয় ব্যর্থ হবে। তাই সবার আগে দরকার রাষ্ট্রীয় সংস্কার এবং স্থানীয় সরকার নির্বাচন। একই সাথে সংখ্যানুপাতিক নির্বাচন পদ্ধতি চালু করতে হবে। বিশ্বের ৬২ টি দেশে এ পদ্ধতি চালু আছে এবং তারা এর সুফল পাচ্ছে। এ পদ্ধতির মাধ্যমে দক্ষ সাংসদের মাধ্যম সংসদ সমৃদ্ধ হবে। তিনি সুখী, সমৃদ্ধ, ক্ষুধা, দারিদ্র, অপশাসন ও দুঃশাসন মুক্ত নতুন বাংলাদেশ গড়তে সকলকে একদফায় ঐক্যবদ্ধ হওয়ার আহবান জানান। 

সভাপতির বক্তব্যে মোহাম্মদ সেলিম উদ্দিন বলেন, স্বাধীনতা পরবর্তী সময়ে ভাষা আন্দোলনের ইতিহাস বিকৃত করা হয়েছে। ভাষা আন্দোলনের অগ্রসৈনিক অধ্যাপক গোলাম আযম হলেও তাকে অবমূল্যায়ন করে ইতিহাসের এক কালো অধ্যায়ের  সৃষ্টি করা  হয়েছে। তাকে ‘২১ পদক থেকেও বঞ্চিত করা হয়েছে। তিনি সকল প্রকার হীনমন্যতা পরিহার করে শহীদ অধ্যাপক গোলাম আযমকে তার প্রাপ্য সম্মান দেওয়ার আহবান জানান।

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়