শিরোনাম
◈ বিগত সময়ে চাকরিচ্যুত পুলিশ সদস্যদেরকে রাস্তা অবরোধ করে জনদুর্ভোগ সৃষ্টি না করার আহ্বান ◈ বিয়ে করলেন সারজিস আলম, পাত্রী কে? ◈ কীভাবে রাজনীতির রং লাগলো অরাজনৈতিক তাবলীগে? ◈ ট্রাম্প ভারতের বন্ধু না শত্রু, এমন প্রশ্নে যা বললেন জয়শঙ্কর (ভিডিও) ◈ কানাডা ও মেক্সিকোর পণ্যে কাল থেকেই ২৫ শতাংশ শুল্ক: ডোনাল্ড ট্রাম্প ◈ ঢাকায় সেনা অভ্যুত্থান নিয়ে আনন্দবাজারের সংবাদটি ভুয়া: প্রেস উইং ◈ বাংলাদেশি হয়ে নিউইয়র্ক পুলিশে সর্বোচ্চ পদ পাওয়া কে এই আব্দুল্লাহ ◈ বিশ্ব ইজতেমায় তিন মুসল্লির মৃত্যু, ময়দানেই জানাজা ◈ 'আমরা ব্রিটিশ পুলিশ না, কাউকে মারতেও চাই না মরতেও চাই না' (ভিডিও) ◈ ইসলাম গ্রহণ করলেন ক্রীড়া সাংবাদিক দেব চৌধুরী

প্রকাশিত : ৩১ জানুয়ারী, ২০২৫, ০৫:২০ বিকাল
আপডেট : ৩১ জানুয়ারী, ২০২৫, ০৭:০০ বিকাল

প্রতিবেদক : নিউজ ডেস্ক

আওয়ামী লীগকে প্রতিহতের ঘোষণা, রাজপথে থাকবে ছাত্রদলসহ বিরোধীরা

ড. মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বাধীন অন্তর্বর্তী সরকারের পদত্যাগের দাবিতে আগামী ১৬ ও ১৮ ফেব্রুয়ারি হরতাল-অবরোধের ডাক দিয়েছে আওয়ামী লীগ। এমন একটি সময় আওয়ামী লীগ এই কর্মসূচি ঘোষণা দিয়েছে যখন মাঠে নেই কোন নেতা। কার কমান্ড শুনবে কর্মীরা। এদিকে আওয়ামী লীগ নেতাকর্মীরা মাঠে নামছে প্রতিহতের ঘোষণা দিয়েছে ছাত্রদলসহ বিরোধীরা। 

রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা বলেছেন, আওয়ামী লীগের আরও সময় নিয়ে কর্মসূচী ঘোষণা করা উচিৎ ছিলো। এভাবে কর্মসূচি দিলে হাস্যকরে পরিণত হবে। 

আওয়ামী লীগের ডাকা হরতাল প্রসঙ্গে বিএনপির জ্যেষ্ঠ সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী বলেছেন, ‘হরতালের ডাক দিলেন আর মানুষ লাফ দিয়ে পড়বে- এমনটা হবে না। বরং মানুষ আপনাদের শাস্তির জন্য অপেক্ষা করছে।’

বৃহস্পতিবার দুপুরে রাজধানীর নয়াপল্টনে রিজভী আরও বলেন, ‘জুলাই বিপ্লবে নিহত-আহতরা বিচার চায়। আহনাফের মতো ছেলেকে যারা গুলি করেছে, তাদের আত্মা রক্তপিপাসু নেকড়ের আত্মা। শেখ হাসিনার কাছে নারী-শিশুর কোনো মূল্য নেই, একটাই মূল্য সিংহাসন। তিনি কতজনকে সন্তানহারা করেছে হদিস নেই। গুলি ছিল শেখ হাসিনার কাছে একটা খেলা। ক্রসফায়ার ছিল আনন্দের বিষয়। বিরোধী পক্ষের লাশ দেখলে খুশি হতেন হাসিনা। তিনি মানসিকভাবে অসুস্থ এক নারী।’

তিনি বলেন, ‘ঢাকা শহরে বিভিন্ন জায়গায় সন্ত্রাসীরা তাণ্ডব চালাচ্ছে, তাদের বিরুদ্ধে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর কোনও পদক্ষেপ দেখি না। যারা আহনাফ, আবু সাঈদ, মুগ্ধকে হত্যা করেছে তারা আইনের লোক। তাদেরকে কারা আইনের হাত থেকে রক্ষা করছে? সবাইকে শাস্তির আওতায় আনা উচিত। জুলাই গণ-অভ্যুত্থানে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর অপরাধীদের বিরুদ্ধে রাষ্ট্রকেই বাদী হয়ে মামলা করা উচিত।’

ছাত্রদলের কেন্দ্রীয় সাধারণ সম্পাদক নাছির উদ্দীন নাছির বলেছেন, ‘নিষিদ্ধ সংগঠন ছাত্রলীগের হাত থেকে ছাত্র-জনতার নিরাপত্তা নিশ্চিত করার দায়িত্বও সরকারের। সরকার তাদের দায়িত্ব পালন করতে ব্যর্থ হলে ছাত্রজনতা জুলাই-আগস্টের মতোই আবারও রাজপথে নেমে ছাত্রলীগকে প্রতিরোধ করবে।’

ফেসবুক পেজে উদ্দীন নাছির আরও বলেন,  জুলাই-আগস্টের ছাত্র-জনতার গণঅভ্যুত্থানে যে দুই হাজারের অধিক মুক্তিকামী মানুষ শহীদ হয়েছে, তাদের সবাইকে পুলিশ বা সরকারি বাহিনী হত্যা করেনি। নিষিদ্ধ ঘোষিত সন্ত্রাসী সংগঠন ছাত্রলীগের ক্যাডাররা প্রকাশ্যে আগ্নেয়াস্ত্র দিয়ে অসংখ্য মানুষ খুন করেছে। জুলাই-আগস্টের গণঅভ্যুত্থান চলাকালীন গণহত্যায় ফ্যাসিস্ট পলাতক খুনি হাসিনার নির্দেশে কসাই-জল্লাদের ভূমিকা পালন করেছে ছাত্রলীগ। গণহত্যার আগেও সারাদেশে বিশ্বজিৎ-আবরার থেকে শুরু করে ছাত্রলীগ যত হত্যাকাণ্ড ঘটিয়েছে, সবগুলো নিষিদ্ধ জঙ্গি সংগঠন মিলেও এত মানুষ খুন করেনি।

তিনি আরও বলেন, দুঃখজনক হলেও সত্য যে, অন্তর্বর্তীকালীন সরকার ছাত্রলীগকে নামে মাত্র নিষিদ্ধ করে দায় সেরেছে। ছাত্রলীগের খুনি, সন্ত্রাসীদের বিচারের আওতায় আনার কোনো জোরালো তৎপরতা গ্রহণ করেনি। ছাত্রলীগের শীর্ষ কোনো নেতাকে বা সন্ত্রাসী ক্যাডারকে এখনও গ্রেপ্তার করতে পারেনি। ছাত্রজনতা নিজেরা কয়েকজনকে আইনের হাতে তুলে দিয়েছে। সরকারের এই ব্যর্থতার কারণেই নিষিদ্ধ খুনি সংগঠন ছাত্রলীগ প্রকাশ্যে রাজনৈতিক কর্মসূচি ঘোষণা করার সাহস পেয়েছে। খুনিদের বিচারের ক্ষেত্রে সরকারের নির্লিপ্ত আচরণের কারণেই তারা আবার মাথাচাড়া দিয়ে উঠতে চাচ্ছে।

গণহত্যা, হত্যাকাণ্ড এবং দুর্নীতির জন্য ক্ষমা না চাওয়া পর্যন্ত আওয়ামী লীগকে বিক্ষোভ করতে দেওয়া হবে না বলে জানিয়েছেন প্রধান উপদেষ্টার প্রেসসচিব শফিকুল আলম। বুধবার (২৯ জানুয়ারি) নিজের ফেরিফায়েড ফেসবুক আইডিতে এক পোস্টে এ বিষয়ে জানান তিনি।

পোস্টে তিনি লেখেন, ‘যতক্ষণ না আওয়ামী লীগ এই গণহত্যা, হত্যাকাণ্ড এবং দুর্নীতির জন্য ক্ষমা না চায়, যতক্ষণ না তার নেতা-কর্মীরদের বিচার না হয় এবং যতক্ষণ না আওয়ামী লীগ তার বর্তমান নেতৃত্ব এবং ফ্যাসিবাদী আদর্শ থেকে নিজেকে আলাদা করে, ততক্ষণ পর্যন্ত তাদের বিক্ষোভ করার কোনও সুযোগ নেই।’

কর্মসূচি পালনের নামে আওয়ামী লীগ মাঠে নামার চেষ্টা করলে সেটি প্রতিহত করার ঘোষণা দিয়েছেন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতারা। বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের অন্যতম সমন্বয়ক আব্দুল হান্নান মাসুদ বিবিসি বাংলাকে বলেছেন, তারা যদি আবার এখানে এসে অস্থিতিশীলতা সৃষ্টির চেষ্টা করে, কোনো ধরনের সন্ত্রাসী কার্যক্রম করার চেষ্টা করে, তাহলে এদেশের মানুষই তাদের প্রতিহত করবে। 

জুলাই অভ্যুত্থানে নেতৃত্ব দেওয়া শিক্ষার্থীদের এই প্ল্যাটফর্মটি গত কয়েক মাস ধরেই বলে আসছে, শেখ হাসিনাসহ হত্যা মামলায় অভিযুক্ত আওয়ামী লীগ নেতাদের বিচার না হওয়া পর্যন্ত দলটিকে তারা রাজনীতি করতে দেবেন না।

নিষিদ্ধ সংগঠন ছাত্রলীগের কর্মসূচির বিরুদ্ধে বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা বিক্ষোভ মিছিল করেছেন। ‘সাধারণ শিক্ষার্থী’র ব্যানারে গতকাল বুধবার রাত ১০টার দিকে এ কর্মসূচি পালিত হয়। মিছিলটি ক্যাম্পাসের বিভিন্ন সড়ক প্রদক্ষিণ করে প্রশাসনিক ভবনের নিচতলায় এসে শেষ হয়। পরে সেখানে সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়।

সমাবেশে বক্তারা বলেন, ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে ফ্যাসিস্ট আওয়ামী লীগ সরকারের পতন হয়েছে। এখন তারা আবার দেশের রাজনীতিতে শামিল হওয়ার জন্য নানাভাবে ষড়যন্ত্র করছে। এই ষড়যন্ত্রের অংশ হিসেবে আগামী ১ ফেব্রুয়ারি থেকে বিভিন্ন কর্মসূচি ঘোষণা করেছে। কিন্তু ছাত্র-জনতার রক্তের ওপর এই ফ্যাসিস্টদের আর কোনো উত্থান হতে দেওয়া হবে না। ছাত্রলীগ যদি ক্যাম্পাসে কোনো কর্মসূচি দেওয়ার চেষ্টা করে, তা প্রতিহত করা হবে।

উল্লেখ্য, জুলাই-অগাস্টের সহিংসতা ও প্রাণহানির ঘটনায় আওয়ামী লীগের শীর্ষ নেতাদের বিরুদ্ধে কয়েকশ’ হত্যা মামলা দায়ের করা হয়েছে। ওইসব মামলায় দলের কয়েক ডজন নেতাকে ইতোমধ্যে গ্রেফতার করে কারাগারেও পাঠিয়েছে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল।

এছাড়া আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনাসহ বিদেশে অবস্থানরত ও পলাতক অর্ধশতাধিক নেতার বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করা হয়েছে।

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়