জুলাই-আগস্টের আন্দোলন শুরু হয় সরকারি চাকরিতে কোটা বিলোপের দাবিতে। ধীরে ধীরে সরকার পতনের কঠোর কর্মসূচিতে যান তারা। এরপর এতে সফলও হন। প্রসঙ্গ আসে রাষ্ট্র মেরামতের।
অন্তর্বর্তী অরাজনৈতিক সরকার ধীরে ধীরে এগিয়ে যাবে নির্বাচনের দিকে। জনপ্রতিনিধিদের হাতে দায়িত্ব তুলে দেয়া হবে দেশ পরিচালনার। এবার সেখানে নিজেদের অবস্থান দেখতে চান আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীরা। নামতে চান ভোটের লড়াইয়ের।
জানা গেছে, আগামী ২ মাসের মধ্যে আত্মপ্রকাশ করছে জুলাই আন্দোলনে নেতৃত্ব দেয়া শিক্ষার্থীদের রাজনৈতিক দল। বিদ্যমান দলগুলোর তুলনায় বৈশিষ্ট্যে এই সংগঠন পৃথক হবে। দলের সম্ভাব্য নাম হতে পারে ‘জনশক্তি’। তবে সবার মতামত নিয়ে এটি পরিবর্তনও হতে পারে। ছাত্রনেতারা জানান, জনগণের আস্থা অর্জন করাই হবে নতুন দলের প্রধান লক্ষ্য।
এখন প্রশ্ন হচ্ছে, কেমন হতে পারে নতুন এ রাজনৈতিক প্লাটফর্ম? ছাত্রনেতারা বলছেন, এতদিন যে ধরনের রাজনীতি দেখে সবাই দেখেছেন, তারা তার ব্যতিক্রম হবেন। বিষয়টি নিয়ে জাতীয় নাগরিক কমিটির আহ্বায়ক নাসিরুদ্দিন পাটোয়ারী বলেন, নতুন এই দল হবে নতুন আঙ্গিকে। এখানে সাংবিধানিক ফ্যাসিবাদী কাঠামো থাকবে না। পুরনো যেসব সমস্যা- টেন্ডারবাজী, চাঁদাবাজী, জনআকাঙ্ক্ষার বিপরীতে গিয়ে কিংবা কোনো রাষ্ট্রের এজেন্ডা নিয়ে যেসব দল পরিচালিত হয়ে আসছে, আমরা সেসবের মধ্যে যাবো না।
জাতীয় নাগরিক কমিটির মুখপাত্র সারজিস আলম বলেন, নতুন যে রাজনৈতিক দল আসবে আমরা আশা করছি তারা কথার মধ্যে সীমাবদ্ধ থাকবে না। কাজের মাধ্যমে প্রমাণ দেবে। এই দলকে জনগণের প্রত্যাশা বুঝতে হবে। বিগত সময়ে ক্ষমতা কুক্ষিগত করে রাখার জন্য দলগুলো জনগণের প্রত্যাশা বুঝতো না। আশা করি, এই দল তেমন হবে না।
বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের আহ্বায়ক হাসনাত আবদুল্লাহ বলেন, দেশের মানুষ যদি চায় আমাদের রাজনৈতিক দল তৈরি করা উচিত তাহলে অবশ্যই আমরা এটি ভাববো।
নতুন দলে পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের পাশাপাশি যুক্ত হবেন প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যায়লের শিক্ষার্থীরা। আসছে সংসদ নির্বাচনেই অংশ নেয়ার পরিকল্পনাও তাদের।
বিষয়টি নিয়ে নাসিরুদ্দিন পাটোয়ারী বলেন, আগামীতে যে রাজনৈতিক প্রক্রিয়াগুলো আসছে সেখানে প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর প্রতিনিধিরা যুক্ত হবে। সেখানে তারা সর্বোচ্চ পর্যায়ে আসীন হবে। বলেন, আগামী নির্বাচনে আমরা প্রতিযোগিতা করবো। আমাদের উদ্দেশ্য ক্ষমতা নয়। দেশের কল্যাণসাধন করা। যদি গণহত্যার বিচারের আগেই নির্বাচন হয়, তবে আমাদের লক্ষ্য থাকবে যেকোনোভাবে খুনিদের বিচার করা।
কী হতে পারে দলের নাম? অর্থের উৎস হবে কী? এ নিয়ে নাসিরুদ্দিন পাটোয়ারী বলেন, আমরা আন্দোলনগুলোতে জনগণের মতামতকে গুরুত্ব দিয়েছি। তাদের কাছে নাম প্রস্তাব করবো। এরপর সেবিষয়ে সিদ্ধান্ত হবে। তিনি জানান, জনশক্তি নামে তাদের একটি নামের চিন্তাভাবনা রয়েছে। অর্থের উৎসের বিষয়ে তিনি বলেন, আমরা ক্রাউডফান্ডিংয়ের (মানুষের কাছ থেকে অর্থ সংগ্রহ) দিকেই যাবো। আন্তর্জাতিক বা দেশীয় যেসব ফোরাম রয়েছে সেগুলো নিয়ে বিশদ পড়ালেখা করছি।
নির্বাচনের ভোট যুদ্ধে ফল যাই হোক নিজেদের বিপ্লবী চেতনা ধরে রাখার অঙ্গীকার ছাত্র নেতাদের। জানালেন, রাজনৈতিক জোটেও যোগ দিতে পারেন তারা। নাসিরুদ্দিন জানান, জুলাই অভ্যুত্থানে অংশ নেয়া কয়েকটি দলের সঙ্গে তাদের আলোচনা-বোঝাপড়া চলছে। উৎস: যমুনা টেলিভিশন।
আপনার মতামত লিখুন :