মনিরুল ইসলাম: ইসকনকে নিয়ে সৃষ্ট পরিস্থিতিতে উদ্বেগ জানিয়েছেন বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব অ্যাডভোকেট রুহুল কবির রিজভী।
তিনি বলেছেন, ‘ইসকন হঠাৎ উত্তপ্ত কেন, আগ্রাসী মনোভাব কেন? এরা কারা? এদের তো নতুন করে চিনতে হয়। কেন এই বিদ্বেষ পোষণ করছে তারা নিজেদের মধ্যে, হঠাৎ কেন ১০ জায়গায় সমাবেশ শেষ না হতেই ভারতের প্রতিক্রিয়া। তারা হুমকি দিচ্ছে আমাদের বিরুদ্ধে সার্জিক্যাল অপারেশন করবে, আমরা কি হাত গুটিয়ে বসে থাকব। এই পঞ্চম বাহিনী থেকে সতর্ক থাকতে হবে।’
শনিবার বিকালে নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে গানের মোড়ক উন্মোচন অনুষ্ঠানে তিনি এসব কথা বলেন।
অনুষ্ঠানে দেশে সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি আগের (আওয়ামী লীগ শাসনামল) তুলনায় অনেক ভালো বলে দাবি করেন রিজভী।
ভারতকে ইঙ্গিত করে তিনি বলেন, ‘পার্শ্ববর্তী দেশ পরিকল্পিতভাবে গণতন্ত্রের পথে হাঁটার সুযোগ নষ্ট করতে অপপ্রচার করছে। নিজস্ব শক্তিতেই বিকাশ লাভ করবে দেশ, কারো আনুগত্যে থাকার জন্য দেশ (বাংলাদেশ) স্বাধীন হয়নি। কারো চোখ রাঙানিতে আমরা ভয় পাই না।’
রিজভী বলেন, দেশকে পরাধীন করার চক্রান্ত চলছে। একটা অস্থিতিশীল পরিবেশ সৃষ্টির লক্ষ্যে দেশে ‘পঞ্চম বাহিনী’র উপদ্রব ব্যাপকভাবে বিস্তার লাভ করেছে।
তিনি বলেন, ‘ভারত যুদ্ধের মধ্য দিয়ে স্বাধীনতা লাভ করেনি। কিন্তু আমরা যুদ্ধ করে বাংলাদেশ স্বাধীন করেছি।’
ভারতে বাংলাদেশিদের চিকিৎসা বন্ধ করা প্রসঙ্গে রিজভী বলেন, ‘ভারতের লোকজন যে হিংসা-বিদ্বেষে ভোগেন, চিকিৎসা বন্ধের হুমকি দেওয়া তারই প্রমাণ। ভারতে না গেলে চিকিৎসা পাওয়া যাবে না, এটি ভুল ধারণা। অনেক যোগ্য ডাক্তার বাংলাদেশে রয়েছেন। ভারত না করলে আমরা চিকিৎসা পাব না বিষয়টি এমন নয়। দেশেও অনেক ভালো চিকিৎসক রয়েছে। আমরা কারো ওপর নির্ভরশীল না। ভারতের থেকে স্যানিটেশন অনেক উন্নত এখানে।’
ভারতের লোকেরা সাম্প্রদায়িক উসকানিমূলক বক্তব্য দেয় উল্লেখ করে বিএনপির এই নেতা বলেন, বাংলাদেশের ইসলামপন্থি রাজনীতিবিদরা উসকানিমূলক বক্তব্য দেয় না। দেশে সাম্প্রদায়িক কোনো সংঘাত ছিল না। কিন্তু হঠাৎ ইসকন কেন উগ্র হয়ে উঠছে, এমন প্রশ্নও রাখেন রিজভী।
তিনি আরও বলেন, অন্যায় ও অত্যাচার যখন রাষ্ট্রের ওপর চেপে বসে তখন শিল্প-সংস্কৃতির আন্দোলন বড় দায়িত্ব পালন করে। আন্দোলন যত তীব্র হয়, বিজয় তত এগিয়ে আসে। গণঅভ্যুত্থানে ইথুন বাবুর লেখা ও মৌসুমির গাওয়া ‘দেশটা তোর বাপের নাকি?’ গানটি নতুন মাত্রা যোগ করেছিল।
সমমর্যাদার ভিত্তিতে সাংস্কৃতিক বিনিময় হতে পারে উল্লেখ করে এ সময় রিজভী বলেন, কেউ যদি আমাদের তাদের অনুগত ভাবে, তা মেনে নেব না। শিল্পীরাই ভারতের সাংস্কৃতিক আগ্রাসন প্রতিরোধ করবে।
ইথুন বাবুর সভাপতিত্বে এ সময় আরও উপস্থিত ছিলেন বিএনপির কেন্দ্রীয় নেতা রশিদুজ্জামান মিল্লাত, মীর শরাফত আলী সপু, শাম্মী আক্তার প্রমুখ।
এর আগে দুপুরে বিএনপির নির্বাহী কমিটির সদস্য মো. ফোরকানী আলমকে দেখতে রাজধানীর মিরপুরে তার বাসায় যান রুহুল কবির রিজভী। তিনি বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চোয়ারম্যানের পক্ষ থেকে ফোরকানীর স্বাস্থ্যের খোঁজখবর নেন এবং আর্থিক সহায়তা প্রদান করেন। স্বাস্থ্যের খোঁজ নেওয়া এবং আর্থিক সহায়তা প্রদান করায় বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন ফোরকানী আলম। এ সময় বিএনপির নির্বাহী কমিটির সদস্য মাহবুবুল আলম, ডক্টরস অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের (ড্যাব) যুগ্ম মহাসচিব ডা. মনোয়ারুল কাদির বিটু, বিএনপি নেতা জাকির হোসেন, ছাত্রদলের কেন্দ্রীয় সহ-সভাপতি ডা. তৌহিদুর রহমান আউয়াল প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।
আপনার মতামত লিখুন :