শিরোনাম
◈ দেশে চালু করা হচ্ছে স্যাটেলাইট ইন্টারনেট ◈ অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধ ঢাকা সিটি কলেজে, অনিশ্চয়তায় ১১ হাজার শিক্ষার্থী ◈ মহিষের বীর্য বিক্রি করে মাসে আয় ৭ লাখ টাকা! ◈ আজিমপুরে দিনেদুপুরে ডাকাতি করতে ঢুকে মালামালের সঙ্গে শিশুকেও নিয়ে গেল দুর্বৃত্তরা ◈ দুই ম্যাচ হাতে রেখেই ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিরুদ্ধে সিরিজ জিতলো ইংল্যান্ড ◈ শিল্পাঞ্চলসমূহে সেনাবাহিনীর নাম ব্যবহার করে প্রতারণা ◈ শেখ হাসিনার বক্তব্যে অস্বস্তিতে সরকার ও রাজনৈতিক দলগুলো, জবাব চাওয়া হলে উত্তর মেলেনি ◈ বক্তব্য প্রত্যাহার করেছেন নুরুল হক নুর ◈ ১৫ বছরের শাসনকে কয়েক সপ্তাহে মোকাবিলা করা সহজ নয়: আসিফ নজরুল ◈ আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ে উদ্বেগ, কী পদক্ষেপ নিচ্ছে সরকার?

প্রকাশিত : ১৫ নভেম্বর, ২০২৪, ০৫:৫৩ বিকাল
আপডেট : ১৫ নভেম্বর, ২০২৪, ০৭:০০ বিকাল

প্রতিবেদক : নিউজ ডেস্ক

শেখ হাসিনার বক্তব্যে অস্বস্তিতে সরকার ও রাজনৈতিক দলগুলো, জবাব চাওয়া হলে উত্তর মেলেনি

মহসিন কবির :শেখ হাসিনার রাজনৈতিক বক্তব্যে অস্বস্তিতে রয়েছে অন্তর্বর্তী সরকার ও রাজনৈতিক দলগুলো। হাসিনার বক্তব্য ভালেোভাবে নিচ্ছে না বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকার। গণআন্দোলনের মুখে ক্ষমতা হারানোর তিন মাস পরেও নিজেদের কৃতকর্মের বিষয়ে আওয়ামী লীগে কোনো অনুশোচনা নেই। বরং পুরো বিষয়টিকে এখনো 'ষড়যন্ত্র' হিসেবেই মনে করে দলটি।

অন্তর্বর্তী সরকারের প্রাথমিক তালিকা অনুযায়ী, ছাত্র-জনতার আন্দোলন চলাকালে তিন সপ্তাহে সাড়ে আটশ’র বেশি মানুষ নিহত হয়েছেন, যাদের বেশিরভাগই মারা গেছেন গুলিতে। এছাড়া আহত হয়েছেন ২০ হাজারেরও বেশি। তাদের মধ্যে অনেকেই হাত, পা এবং চোখ হারিয়েছেন, পঙ্গুত্বও বরণ করেছেন কেউ কেউ।

কিন্তু হতাহতের এসব ঘটনার পুরো দায় নিতে চায় না আওয়ামী লীগ। ‘শুরু থেকেই আমরা বলে আসছিলাম যে, এই আন্দোলনে একটা তৃতীয়পক্ষ রয়েছে, যাদের গুলিতে সাধারণ মানুষ নিহত হয়েছে, বিবিসি বাংলাকে এসব কথা কথা বলেছেন আওয়ামী লেগের নেতরা।

মিডিয়ার শেখ হাসিনার বক্তব্য প্রসঙ্গে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র তৌফিক হাসান বলেছেন, পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় একাধিকবার বাংলাদেশে নিযুক্ত ভারতীয় হাইকমিশনার এবং ভারত সরকারকে এটি জানিয়েছে। তাদের এটি স্পষ্টভাবে বলা হয়েছে, সাবেক প্রধানমন্ত্রী ৫ আগস্ট গণঅভ্যুত্থানের সময় ভারতে পালিয়ে যাওয়ার পর সেখানকার বিভিন্ন গণমাধ্যমে ধারাবাহিকভাবে রাজনৈতিক বিবৃতি বা বক্তব্য দিচ্ছে; সেটি আমাদের বাংলাদেশ সরকার ভালোভাবে নিচ্ছে না।’

তৌফিক হাসান বলেন, ‘এ ব্যাপারে সরকারের তীব্র অসন্তুষ্টি প্রকাশের পাশাপাশি সাবেক প্রধানমন্ত্রীকে বিবৃতি প্রদান থেকে বিরত রাখার জন্য ভারত সরকারকে আহ্বান জানানো হয়েছে। একইসঙ্গে এটি বলা হয়েছে, আমাদের দুই দেশের মধ্যে যে ঐতিহাসিক সম্পর্ক, পারস্পরিক শ্রদ্ধাবোধ এটির জন্য আসলে এ ধরনের বক্তব্য থেকে তাকে (শেখ হাসিনা) বিরত রাখাটা খুবই জরুরি।’

এদিকে শেখ হাসিনাকে বাংলাদেশের সাবেক প্রধানমন্ত্রী হিসেবে বিবেচনা করে বলে জানিয়েছে ভারত। ৭ নভেম্বর নয়াদিল্লিতে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সাপ্তাহিক ব্রিফিংয়ে মুখপাত্র রণধীর জয়সোয়াল এই কথা জানান। তিনি বলেন, ‘আমরা বারবার বলেছি যে তিনি (শেখ হাসিনা) বাংলাদেশের সাবেক প্রধানমন্ত্রী। এ বিষয়ে আমাদের অবস্থান এটাই।’

ব্রিফিংয়ে এক সাংবাদিক উল্লেখ করেন যে, ডোনাল্ড ট্রাম্প মার্কিন প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হওয়ায় তাকে শুভেচ্ছায় আওয়ামী লীগ যে বার্তা দিয়েছে, সেখানে শেখ হাসিনাকে ‘বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী’ বলা হয়েছে। বিষয়টি নিয়ে তিনি ভারতের মন্তব্য জানতে চাইলে জয়সোয়াল এই কথা জানান।

বাংলাদেশের বিরুদ্ধে ভারত প্রচারণা চালিয়েই যাচ্ছে, এ বিষয়ে সতর্ক না হলে বড় বিপদে পড়তে হবে বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। ঠাকুরগাঁও শহরের কালিবাড়ী এলাকায় নিজ বাসভবনে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে তিনি এ মন্তব্য করেন।

মির্জা ফখরুল বলেন, ‘ফ্যাসিবাদের প্রধান হোতা শেখ হাসিনা ভারতে অবস্থান করছেন এবং ভারত বাংলাদেশের বিরুদ্ধে প্রচারণা চালিয়েই যাচ্ছে, এটা বলতে আমার কোনো দ্বিধা নেই। এ বিষয়ে সবাইকে সতর্ক থাকা উচিত। নাহলে জাতি হিসেবে আমরা অনেক বড় বিপদের সম্মুখীন হব।’

ভারতের কাছে শেখ হাসিনাকে ফেরত চেয়ে জামায়াতে ইসলামীর আমির ডা. শফিকুর রহমান বলেছেন, ‘আমরা আমাদের প্রতিবেশীর প্রতি অনুরোধ করব শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে আদালতে মামলা হয়েছে। দেড়শোর অধিক মামলা। তার বিরুদ্ধে খুনের মামলা আছে, গুমের মামলা আছে। আমাদের বিচারালয় যখন চাইবে, মেহেরবানী করে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর হাতে আপনারা (ভারত) তাকে তুলে দেবেন। অপরাধী যদি অপরাধ করে শাস্তি না পায় তাহলে অন্য অপরাধীরা উৎসাহ পাবে। 

বিচারের জন্য শেখ হাসিনাকে প্রস্তুত হওয়ার আহ্বান জানিয়ে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর সেক্রেটারি জেনারেল অধ্যাপক মিয়া গোলাম পরওয়ার বলেন, ‘যে ট্রাইব্যুনালে মিথ্যা বিচার দিয়ে আমাদের নেতাদের ফাঁসি দিয়েছিলেন, সেই ট্রাইব্যুনালে আপনাদের বিচার হবে ইনশাআল্লাহ।’

১৪ নভেম্বর খুলনা মহানগরীর শিল্পাঞ্চল খালিশপুরস্থ বিআইডিসি রোডে শ্রমিক কল্যাণ ফেডারেশনের কার্যালয়ের সামনে খুলনা মহানগরী শ্রমিক কল্যাণ ফেডারেশনের উদ্যোগে শ্রমিক সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব সব কথা বলেন। জামায়াতে ইসলামীর সেক্রেটারি জেনারেল বলেন, ফ্যাসিবাদী শেখ হাসিনা পালিয়ে গিয়েই প্রমাণ করেছেন, তিনি অপরাধী।

আওয়ামী লীগের উদ্দেশে তিনি বলেন, ওদের হাতে গণতন্ত্র, বাক স্বাধীনতা, গণমাধ্যম কিছুই নিরাপদ নয়। যে কারণে ৫ আগস্ট ছাত্র-জনতার গণবিস্ফোরণের মুখে তাকে এমনভাবে পালিয়ে যেতে হয়েছিল, দুপুরের খাবার খাওয়ার সুযোগ পাননি শেখ । লাখ লাখ শ্রমজীবী মানুষের খাবার কেড়ে নিয়ে, মিল বন্ধ করে দিয়ে তাদের বেকার করে যে অপরাধ শেখ হাসিনা করেছেন, তার ফল তাকে ভোগ করতে হয়েছে।

ছাত্র-জনতার গণঅভ্যুত্থানের মুখে গত ৫ আগস্ট শেখ হাসিনা প্রধানমন্ত্রীর পদ থেকে পদত্যাগ করে গণভবন ছেড়ে ভারতে চলে যান। এরপর থেকে তিনি নয়াদিল্লিতে আছেন।

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়