মহসিন কবির : আওয়ামী লীগের প্রভাবশালী নেতা ওবায়দুল কাদের কেথায় আছেন সঠিক কোন তথ্য পাওয়া যাচ্ছে না। সর্বশেষে তথ্যে জানা যায় তিনি ভারতের মেঘালয়ে আছেন।
ওবায়দুল কাদের তাঁর ভেরিফায়েড ফেসবুক পেজে সর্বশেষ পোস্ট দেন গত ৫ জুলাই। ওই দিন তিনি পদ্মা সেতু প্রকল্পের সার্ভিস এরিয়া-১ নামের এলাকায় নানা ভঙ্গিমায় নিজের ১২টি ছবি পোস্ট করেন। এই পোস্টে এক লাখের বেশি লাইক, লাভ, হা হা রিয়েক্ট হয়। এর মধ্যে ৫২ হাজারের মতো হা হা রিয়েক্ট। কমেন্ট করেন ৩৮ হাজারের বেশি মানুষ। শেয়ার হয় সাড়ে সাত হাজারের বেশি। এরপর আর কোনো পোস্ট নেই ওই ফেসবুক পেজে।
গত ৫ আগস্ট ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে শেখ হাসিনার পতনের পর আওয়ামী লীগের অসংখ্য নেতাকর্মী আত্মগোপনে চলে যান। অনেকেই ইতিমধ্যে ধরা পড়েছেন। কেউ কেউ বিদেশে পাড়ি দিয়েছেন।
ওবায়দুল কাদের সম্পর্কে কেউ কেউ বলছিল দেশত্যাগ করেছেন আবার কেউ কেউ বলছিল তিনি দেশেই আছেন। তবে গুঞ্জন ছড়িয়েছে, ওবায়দুল কাদের দেশ ছেড়েছেন। তিনি যশোর সীমান্ত হয়ে অবৈধভাবে ভারতে গেছেন। সেখান থেকে তার সংযুক্ত আরব আমিরাতের দুবাইয়ে গেছেন।
কেউ কেউ বলছেন, সিঙ্গাপুর কিংবা থাইল্যান্ডে গেছেন। আবার কারো ধারণা, ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানের পর সেতুমন্ত্রী দেশ ছাড়ার সুযোগ পাননি। তিনি দেশেই আছেন। সীমান্তবর্তী একটি জেলায় অবস্থান করছেন। সুযোগ পেলেই যে কোনো মুহূর্তে ভারতে যাবেন।
নেতাকর্মী দলের সাধারণ সম্পাদকের অবস্থান জানার চেষ্টা করছেন। ভারত, আমেরিকা, ইংল্যান্ড, কানাডা, বেলজিয়ামসহ বিভিন্ন দেশে আত্মগোপনে থাকা নেতারাও ওবায়দুল কাদেরের খোঁজ নেওয়ার চেষ্টা করছেন।
আওয়ামী লীগের এক কেন্দ্রীয় নেতা গণমাধ্যমকে বলেছেন, ওবায়দুল কাদের যেকোনোভাবে গণমাধ্যমের প্রচারের আলোয় থাকতে পছন্দ করতেন। কী পরিস্থিতিতে তিনি তিন আড়াই মাস গণমাধ্যম ও নেতা-কর্মীদের থেকে দূরে আছেন, তা তিনিই ভালো জানেন।
সবশেষ বৃহস্পতিবার (১৪ নভেম্বর) একটি জাতীয় দৈনিকের খবরে বলা হয়। ছাত্র-জনতার প্রবল আন্দোলনের মুখে সরকার পতনের তিন মাস পর চলতি মাসের প্রথম সপ্তাহে সিলেট সীমান্ত দিয়ে ভারতের মেঘালয়ে পালিয়ে যেতে সক্ষম হয়েছেন তিনি। পালিয়ে ভারতে আশ্রয় নেওয়া আওয়ামী লীগের একাধিক কেন্দ্রীয় নেতাও এর সত্যতা নিশ্চিত করেছেন।
গত দুই মাসে দেশের বিভিন্ন স্থানে ওবায়দুল কাদেরকে আটকের জন্য অভিযান চালিয়েছে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী। চট্টগ্রামে অভিযান চালিয়ে তার স্ত্রীর ভাইকে আটক করা হয়। জিজ্ঞাসাবাদ করে পরে তাকে ছেড়েও দেওয়া হয়েছে। রোববার (১০ নভেম্বর) রাতে ঢাকার কেরানীগঞ্জ থেকে তার ব্যক্তিগত সহকারী আবদুল মতিনকে আটক করেছে পুলিশ।
ওবায়দুল কাদেরকে অপরাজনীতি চর্চার মূল হোতা হিসেবে অভিযুক্ত করে মাঠ পর্যায়ের ওই কর্মী-সমর্থকরা বলেন, এসব নেতাকে শোধরানোর জন্য বিচার হওয়া উচিত। আওয়ামী লীগকে পরিশুদ্ধ হতে হবে।
ইতোমধ্য দেশের বিভিন্ন স্থানে হত্যা মামলাসহ প্রায় দুই শতাধিক মামলায় আসামি করা হয়েছে ওবায়দুল কাদেরকে।
আপনার মতামত লিখুন :