শিরোনাম
◈ যে কারণে বাংলাদেশকে লাখ লাখ ডলার জরিমানা দিতে হচ্ছে ◈ পলাতক পুলিশ সদস্যদের বেতন বন্ধ, হচ্ছে মামলা, বেশির ভাগই ভারতে অবস্থান করছেন ◈ আওয়ামী লীগ এখনই নিষিদ্ধ নয়, তবে রাজনীতি করার অধিকার হারিয়েছে : উপদেষ্টা নাহিদ ◈ ক্ষমতার ভারসাম্য, একজন দুই মেয়াদের বেশি প্রধানমন্ত্রী নয় : বিএনপির সংস্কার প্রস্তাব ◈ ড. ইউনূসকে নিয়ে ১০ বছর আগে যা বলেছিলেন নরেন্দ্র মোদি ◈ জামায়াত কাদের সঙ্গে জোট করবে, জানালেন সেক্রেটারি গোলাম পরোয়ার ◈ ৫৩ বছর দেখেছি, আমরা আরও দু-এক বছর ড. ইউনূসের নেতৃত্বাধীন অন্তর্বর্তী সরকারকে দেখতে চাই:  নুরুল হক (ভিডিও) ◈ নবীনগরে বিপনী মার্কেটে আগুন, পুড়ে ছাই ১২ দোকান ◈ ‘ওরেশনিক’ রাশিয়ার নতুন ক্ষেপণাস্ত্র নিয়ে যা জানা গেল ◈ ফেসবুকে দাবি ‘মুগ্ধ ও স্নিগ্ধ একই ব্যক্তি’, যা বলছে ফ্যাক্ট চেক

প্রকাশিত : ১১ নভেম্বর, ২০২৪, ০৯:২১ রাত
আপডেট : ২০ নভেম্বর, ২০২৪, ০৫:০০ সকাল

প্রতিবেদক : নিউজ ডেস্ক

ট্রাম্পের ছবি নিয়ে হাসিনার রাজনীতি, ব্যাপক সমালোচনা

মহসিন কবির :আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের ছবি নিয়ে মিছিল করায় রাজনীতিবিদরা ব্যাপক সমালোচনা করেছেন। কেউ কেউ বলছেন আওয়ামী লীগের রাজনৈতি দৈন্যতা এমন পর্যায়ে পৌঁছেছে এখন ট্যাম্পে ছবি নিয়ে মিছিল করা লাগে। তারা যে রাজনৈতিকভাবে ধ্বংস হয়ে গেছে, এটাই প্রমাণ করে। 

মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের ক্ষমতায় আশার দ্বিতীয় দিনের মাথায় ফাঁস হলো শেখ হাসিনার আরেকটি অডিও কল। সেই অডিও কলের অপর প্রান্তে কে ছিল তা অবশ্য এখনো নিশ্চিত হওয়া যায় নি। অডিও কলে ট্রাম্পের ছবি নিয়ে মিছিল করার নির্দেশ দিলেন শেখ হাসিনা। কলটি ছিলো ১ মিনিট ৫৩ সেকেন্ড।

শেখ হাসিনা বলেন, ওরা যদি হামলা করে ট্রাম্পেরে ছবির ওপরতো হামলা করবে, ওই ছবি আবার ধরে রাখবা। তখন আমি এটা ট্রাম্পের কাছে পা দিব, আমার সাথে তো ট্রাম্পের লিংক আছে যোগাযোগ আছে।

এ ঘটনার সঙ্গে সুর মিলিয়ে ইন্ডিয়া টুডে একটি প্রতিবেদন প্রকার করেছে। প্রতিবেদনে বলা হয়, সংখ্যালঘুদের ওপর হামলা নিয়ে ডোনাল্ড ট্রাম্প সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে পোস্ট করায় বাংলাদেশে তাঁর সমর্থকদের বিজয় মিছিলে বাধা দেওয়া হয়েছে এবং ফেস্টুন-ব্যানার জব্দ করা হয়েছে।

ইন্ডিয়া টুডের ওই প্রতিবেদনে আরও বলা হয়, ডেনাল্ড ট্রাম্প মার্কিন প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হলে বাংলাদেশে তাঁর সমর্থকরা বিজয় মিছিল করতে চাইলে দেশটির আইনশৃঙ্খলা বাহিনী তাদের বাধা দেয়। কারণ হিসেবে তারা বলছে, মার্কিন নির্বাচনের কয়েকদিন আগে ট্রাম্প বাংলাদেশে সংখ্যালঘুদের ওপর হামলার নিন্দা জানিয়েছিলেন।

ইন্ডিয়া টুডের দাবি, তাদের কাছে এ জাতীয় ভিডিও পৌঁছেছে। সেখানে দেখা যাচ্ছে, দেশটির আইনশৃঙ্খলা বাহিনী কিছু ব্যানার জব্দ করেছে। সেখানে ট্রাম্প, শেখ মুজিবুর রহমান, শহীদ নূর হোসেনের ছবি সংবলিত ফেসটুন আছে। ট্রাম্পের ছবি সংবলিত ফেস্টুনে লেখা আছে, ‘ডোনাল্ড ট্রাম্প, বাংলাদেশে থেকে ভালোবাসা জানাই।’ বাংলাদেশ সেনাবাহিনী ও পুলিশ ৭ নভেম্বর রাতে অভিযান চালিয়ে বেশ কয়েকজনকে আটক করে। আটক ব্যক্তিদের কোনো রাজনৈতিক সংযোগ নেই এবং তাঁরা সাধারণ নাগরিক।

এদিকে বাংলাদেশে যুক্তরাষ্ট্রের নবনির্বাচিত প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের সমর্থকদের কোনো গ্রেপ্তার বা দমন অভিযানের ঘটনা ঘটেনি। ভারতীয় একটি গণমাধ্যমে এ ধরনের প্রকাশিত সংবাদকে জাল বলে দাবি করেছে অন্তর্বর্তী সরকারের প্রেস উইং ফ্যাকটস। রোববার (১০ নভেম্বর) দিবাগত রাতে সিএ প্রেস উইং ফ্যাকটস-এর ভেরিফায়েড ফেসবুক পেজে দেওয়া এক পোস্টে এমন দাবি করা হয়েছে।

ফেসবুক পোস্টে বলা হয়েছে, রাজধানীতে নাশকতামূলক কর্মকাণ্ডের পরিকল্পনার অভিযোগে রোববার দেশে গণহত্যা, দুর্নীতি ও কোটি কোটি ডলার পাচারের অভিযোগে আওয়ামী লীগের কয়েক ডজন নেতাকর্মী, কর্মকর্তা ও সদস্যদের ঢাকা থেকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।

ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ এ বিষয়ে একটি বিবৃতি দিয়েছে। সেখানে বলা হয়েছে, পলাতক আওয়ামী লীগ নেতা শেখ হাসিনা তার সমর্থকদের ডোনাল্ড ট্রাম্পের পোস্টার বহন করার এবং গ্রেপ্তারের বিরুদ্ধে ঢাল হিসেবে ব্যবহার করার নির্দেশ দেওয়ার কারণে তারা সেগুলো বহন করছিল। আটকরা পুলিশকে বলেছে যে, তারা মার্কিন রাজনীতি অনুসরণ করে না, শুধু হাসিনার নির্দেশে ট্রাম্পের পোস্টার বহন করেছিল।

প্রেস উইং আরো জানায়, আগস্টে অভূতপূর্ব বিপ্লবের পর শেখ হাসিনা ক্ষমতাচ্যুত হওয়ার পর থেকে কিছু ভারতীয় সংবাদপত্র ছাত্র নেতৃত্বাধীন গণ-অভ্যুত্থান সম্পর্কে আক্রমণাত্মকভাবে ভুল তথ্য প্রচার করছে। তারা বিপ্লবোত্তর দিনগুলোতে সংখ্যালঘুদের বিরুদ্ধে সহিংসতার ঘটনাগুলোকে ব্যাপকভাবে অতিরঞ্জিত করেছে। আজকে আওয়ামী লীগ সমর্থকদের গ্রেপ্তারের ঘটনায়ও তারা একইভাবে অতিরঞ্জিত করেছে।

এবিষয়ে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী বলেছেন, দেশের মানুষ যখন আপনাকে বিতাড়িত করে, আপনি একেক সময় একেক মোড়কে আসতে চান। কোনো সময় হিন্দু-মুসলিম ইস্যুটা নিয়ে আসবে। কিছু সময় হিন্দুদের ওপর নির্যাতনের চিত্র নিয়ে আসবে। এখন আবার ট্রাম্পের (যুক্তরাষ্ট্রের নবনির্বাচিত প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প) চিত্রে আসছে। আসলে তাদের অস্তিত্ব এখন বিলীন হয়ে গেছে। অন্য কোনো বেশে তারা দেশের মধ্যে আসতে চাচ্ছে। এটা হচ্ছে তাদের রাজনৈতিক দৈন্যতা। তারা যে রাজনৈতিকভাবে ধ্বংস হয়ে গেছে, এটাই প্রমাণ করে। 

বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য হাফিজ উদ্দিন আহমদ বলেছেন, শেখ হাসিনা এখন আরেক দেশে বসে ট্রাম্পের ছবি আশ্রয় করে বাঁচতে চাইছেন।  শেখ হাসিনার উদ্দেশে হাফিজ উদ্দিন বলেন, ‘আসেন না বাংলাদেশে, এত বড় বড় কথা বলেন...বাংলাদেশে আসেন। গত ১৬ বছর কঠিন সময় ছিল। বিএনপি এবং অঙ্গসংগঠনগুলো কঠিন আন্দোলনে লিপ্ত ছিল। আওয়ামী লীগ কত নিষ্ঠুর, নির্মম, সেটা বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সময় প্রকাশ পেয়েছে।

বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির সাধারণ সম্পাদক সাইফুল হক বলেছেন, পতিত আওয়ামী লীগ রাজনৈতিক দিক থেকে এতখানি দেউলিয়া যে তাদের এখন ট্রাম্পের ছবি ঝুলিয়ে ফিরে আসার চেষ্টা করতে হচ্ছে।

সাইফুল হক আরও বলেন, চোরাগোপ্তা পথে ট্রাম্প বা মোদিকে নিয়ে আওয়ামী লীগের পুনর্বাসিত হওয়ার কোনো সুযোগ নেই। হাজারও ছাত্র শ্রমিক জনতা হত্যায় অভিযুক্ত আওয়ামী লীগ ও তাদের নেতাদের বিচার না হলে ’৮৭ সালের শহীদ নূর হোসেন থেকে শুরু করে ২০২৪ সালের গণঅভ্যুত্থানের শহীদদের আত্মা শান্তি পাবে না।

ভারতের সংবাদ প্রতিদিন পত্রিকায় সুমিত মিত্র লিখেছেন, ডোনাল্ড ট্রাম্প হয়তো যথার্থই পছন্দ করেন ভারতের প্রধানমন্ত্রীকে, কিন্তু কূটনীতির পিচ্ছিল পথে দু’টি দেশের সুসম্পর্ক স্থাপন বরাবরই জটিল প্রক্রিয়া।

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়