শিরোনাম
◈ নতুন কমিশন বরণে প্রস্তুত ইসি, আস্থা ফিরবে তো? ◈ নেদারল্যান্ডস ও স্পেনের ম্যাচ দিয়ে শুরু হবে নেশন্স লিগের কোয়ার্টার ফাইনাল ◈ সংসদ নির্বাচনের আগে স্থানীয় সরকার নির্বাচন চায় সংস্কার কমিশন (ভিডিও) ◈ নির্বাচন যত দেরি হবে, তত ষড়যন্ত্র বৃদ্ধি পাবে: তারেক রহমান (ভিডিও) ◈ সমালোচকেরা মনে করছেন, ক্ষমতায় গেলে বিএনপি আরেকটি ‘আওয়ামী লীগে’ পরিণত হতে পারে ◈ হোয়াটসঅ্যাপ আনলো চমকপ্রদ ফিচার ◈ এক বছরেই ভোট চান ৬১.১ শতাংশ মানুষ, সংস্কার শেষে ৬৫.৯ শতাংশ ◈ বিশ্ববাজারে সোনার দামে ব্যাপক অস্থিরতা, : বড় পতনের পর সোনার দামে বড় লাফ ◈ রবিবার ১০ ঘণ্টা গ্যাস থাকবে না যেসব এলাকায় ◈ বড় পরিবর্তন আসছে প্রাথমিকে, সৃষ্টি হচ্ছে শিক্ষকের নতুন ২০ হাজার পদ

প্রকাশিত : ১২ অক্টোবর, ২০২৪, ০১:২৫ রাত
আপডেট : ২১ নভেম্বর, ২০২৪, ০৬:০০ বিকাল

প্রতিবেদক : নিউজ ডেস্ক

আগামীর রাজনীতি কেমন হবে ?

মহসিন কবির : শেখ হাসিনার পতনের পর দেশের রাজনীতি অনেকটা পাল্টে গেছে। রাজনীতিতে গুণগত পরিবর্তন আনার কথা বলছেন সবাই। রাজনীতিবিদরাও সতর্ক হয়েছেন। 

১৯৭১ সালে স্বাধীনতার পর ১৯৭৫ সালে রক্তাক্ত সামরিক অভ্যুত্থান। ১৯৯০ সালে গণঅভ্যুত্থান। ২০০৭ সালের সেনাসমর্থিত জরুরি সরকার। সবশেষ ২০২৪ সালে ‘আগস্ট বিপ্লব’ দেশের রাজনীতিতে নতুন মাত্রা যোগ হয়েছে। 

এ চারটি ঘটনা কেবল প্রবল ক্ষমতাধর শাসকদের গদিচ্যুতই করেনি, বরং এ চারটি রাজনৈতিক পরিবর্তন আমাদের রাজনীতিকদের উপকরণ হয়ে গেছে। 

বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা জিয়াউর রহমানের মৃত্যুর পর তার দলটি বার বার জনরোষানলে পড়েছে। লাখ লাখ মামলার কাঁদে দিয়ে বেরিয়েছে নেতাকর্মীরা। এখন মামলা চলামান আচে। ভোটের রাজনীতিতে বিএনপি ২০০৯ সালের পর থেকে এখন পর্যন্ত জনপ্রিয়তা করতে পারেনি। 

বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান বলেছেন, গণঅভ্যুত্থানের চেতনা ও লক্ষ্য সুসংহত করতে হলে বিতাড়িত গণবিরোধী শক্তিকে আইনের মুখোমুখি করার পাশাপাশি জনগণের রাজনৈতিক এবং অর্থনৈতিক ক্ষমতায়ন নিশ্চিত করা জরুরি। জনগণের রাজনৈতিক ক্ষমতায়নের প্রধান হাতিয়ার হচ্ছে প্রতিটি নাগরিকের ভোট প্রয়োগের অধিকার নিশ্চিত করা। 

তারেক রহমান বলেছেন, গণহত্যাকারী হাসিনার পলায়নের মধ্য দিয়ে ১৫ বছরের ফ্যাসিবাদী শাসনের অবসানের পথ উন্মুক্ত হয়েছে। তাই, দেশে জবাবদিহিতামূলক গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠার এখনই সময়। লাঞ্চিত বঞ্চিত অধিকারহারা মানুষ একটি স্বাধীন, নিরাপদ এবং মর্যাদাকর জীবনের প্রত্যাশায় উন্মুখ হয়ে রয়েছেন। জনপ্রত্যাশা পূরণের জন্য একটি নিরাপদ এবং মানবিক বাংলাদেশ গড়ার এখনই সময়।

কোটার আন্দোলন থেকে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে ব্যাপক মৃত্যু চতুর্থবারে ক্ষমতায় আসীন আওয়ামী লীগকে ভাসিয়ে নিয়ে গেছে। ছিন্নছাড়া নেতাকর্মীরা বিকিবিধিক ছুটছেন। কোন কিনারা করতে পারেননি। কারন আরওয়ামী লীগের নেতারা জুলাই অভ্যুত্থানে নিহতের সব দোষ শেখ হাসিনার কাঁধে দিয়েছেন। এ থেকে সহজে পরিত্রাণ পাওয়া যাবে না। 

জাতীয় পার্টিও কোনঠাসা। কারণ সাড়ে ১৫ বছর তারা আওয়ামী লীগের সঙ্গে ছিলেন। হালুয়া-রুটির বাগ খেয়েছেন। তাদের নেতাদের বিরুদ্ধেও মামলা হয়েছে। মামলাগুলো প্রাথমিক পর্যায়ে রয়েছে। 

জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান গোলাম মোহাম্মদ কাদের বলেছেন, একটা বিশাল পরিবর্তনের সুযোগ এসেছে। আমাদের জাতীয় জীবনে বিভিন্ন ক্ষেত্রে আমূল পরিবর্তনের নমুনা দেখা যাচ্ছে। সেখানে আমরা রাজনীতি কী করছি, অতীতে কী করেছি এবং ভবিষ্যতে কী করব তার একটা ধারণা থাকা দরকার।

আগামীতে নতুন বাংলাদেশ রচিত হবে। নতুন নেতৃত্বের মাধ্যমে নতুন রাজনীতি প্রতিষ্ঠিত হবে। সেই অঙ্গীকার নিয়েই গণঅধিকার পরিষদের রাজনৈতিক পথচলা বলে মন্তব্য করেছেন বাংলাদেশ গণঅধিকার পরিষদের সভাপতি ও ডাকসুর সাবেক ভিপি নুরুল হক নুর।

অতীতের পুনরাবৃত্তি ঠেকাতে দেশের রাজনৈতিক সংস্কৃতিতে পরিবর্তন আনতে হবে বলে মনে করে সুশাসনের জন্য নাগরিক (সুজন)। সংগঠনটির মতে, দেশে যেন একক ব্যক্তির স্বৈরাচারী শাসন ফিরে আসতে না পারে, সে জন্য প্রাতিষ্ঠানিক সংস্কার প্রয়োজন। সংস্কার ছাড়া সুষ্ঠু জাতীয় নির্বাচন আয়োজন করা কঠিন হবে।

সংবাদ সম্মেলনে সুজন সম্পাদক বদিউল আলম মজুমদার বলেন, অতীতে যা ঘটেছিল, সেগুলোর যেন পুনরাবৃত্তি না ঘটে। অপশাসন, বিচারহীনতা, দুর্নীতি, লুটপাট ও অর্থপাচার যেন না ঘটে। যারা এসব অন্যায় করেছে, তাদের বিচারের আওতায় আনতে হবে। বিচারের জন্য সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ তদন্ত শুরু করতে হবে।

শিক্ষাবিদ ও অধ্যাপক আবুল কাসেম ফজলুল হক জাতীয় দৈনিক পত্রিকার সাক্ষাৎকারে বলেছেন, দেশে রাজনৈতিক দলগুলো শুধু ক্ষমতায় যাওয়ার জন্য রাজনীতি করে। জনগণের সমস্যা কেউ সমাধান করতে চায় না। তাই কোনো আদর্শবাদী রাজনৈতিক ধারা গড়ে উঠছে না। গতানুগতিক ধারা বাদ দিয়ে রাজনীতিতে নতুন ও মৌলিক পরিবর্তন আনা দরকার; বিশেষ করে দুই রাজনৈতিক দল আওয়ামী লীগ ও বিএনপির রাজনীতিরও সংস্কার করতে হবে।

পুরোনো কায়দায় আর রাজনীতি করলে জনগণ মেনে নেবে না। আর রাজনৈতিক দল ও আদর্শ অবলম্বন করে দেশে যে গণতান্ত্রিক ব্যবস্থা টিকে থাকে, সেটা এখন অনেকটা অনুপস্থিত। রাজনীতির জন্য জ্ঞান ও শৃঙ্খলাবোধ দরকার। এ বিষয়গুলো কোনো দলে নেই। বিভিন্ন দলের নামে এখন যাঁরা রাজনীতি করছেন, বিশেষ করে তরুণেরা কিছু না বুঝেই স্লোগানের ভিত্তিতে রাজনীতি করছেন। একটি রাজনৈতিক দলের ভেতরে কী কী থাকা দরকার, সেটা আগে ঠিক করতে হবে। সব প্রশ্নের মীমাংসা এখন পাওয়া যাবে, সেটা নয়। তবে ভালো রাজনীতির জন্য অন্তত বছর দশেকের প্রস্তুতি লাগবে।

উত্তরণের পথ হলো, গণতান্ত্রিক পদ্ধতিতে মানুষের চাওয়া অনুসারে দেশ পরিচালনা করা। বৈষম্য কমানো, সর্বত্র সাম্য তৈরি করা। পুলিশ, সেনা, বিজিবি ও র‍্যাব নামিয়ে তো দীর্ঘকাল দেশ শাসন করা যাবে না। জনগণের সমস্যা সমাধানে তৎপর হলেই জনগণ সেই দলের প্রতি আস্থা পাবে। আর দরকার রাজনীতিতে মৌলিক পরিবর্তন।

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়