আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর অনেক সাবেক মন্ত্রী, প্রতিমন্ত্রী, এমপি ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর দাপুটে কর্মকর্তারা গ্রেপ্তার হয়ে এখন চৌদ্দ শিকের বাসিন্দা। জনমনে এখন কৌতুহল, যে রাজনৈতিক নেতা ও পুলিশ কর্মকর্তা গ্রেপ্তার হয়েছেন তাদের কে কোথায় কোন কারাগারে আছেন? ক্ষমতার দাপটে বিলাসী জীবন যাপনের পর পট পরিবর্তনে সাথে সাথে যাদের কারাগারে ঢুকতে হয়েছে, তাদের বেশিরভাগই ডিভিশন পেয়েছেন বলে কারা সূত্রে জানা গেছে। ফলে বিশেষ খাবার, ব্যক্তিগত কাজের লোক ও পত্রিকা সবই পাচ্ছেন তারা। সূত্র : চ্যানেল২৪
শেখ হাসিনার পতনের পর আওয়ামী লীগ নেতা, মন্ত্রী-এমপি ও প্রভাবশালী ব্যক্তিদের নামে মামলা হয়েছে শত শত। যাদের অনেকেই এখন জেলখানায়। একসময় যাদের কথায় সরকার চলতো এবং তাদের লাইফস্টাইল ছিল বিলাসী। এখন প্রশ্ন, জেলখানায় সেই তাদের দিনকাল এখন কেমন কাটছে? বন্দিদের বেশিরভাগের ঠাঁই হয়েছে কেরানীগঞ্জ কারাগারে। বিভিন্ন কারাগারে ডিভিশন পেয়েছেন ৪৭ জন। যাদের মধ্যে আছেন, সালমান এফ রহমান, আনিসুল হক, দীপু মনি, জুনাইদ আহমেদ পলক, রমেশ চন্দ্র সেন, এম এ মান্নানসহ আরও অনেকে।
বাদ যাননি আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর কর্মকর্তারাও। আওয়ামী সরকারের গুম খুনের মাস্টারমাইন্ড জিয়াউল হাসান পেয়েছেন প্রথম সারির ডিভিশন। এ তালিকায় আছেন সাবেক আইজিপি শহীদুল হক, আব্দুল্লাহ আল মামুন, সাবেক ডিএমপি কমিশনার আসাদুজ্জামান মিয়া, এডিসি কাফী ও এক সময়ের প্রতাবশালী র্যাব কর্মকর্তা সোহাইল। বিচারপতি শামসুদ্দিন চৌধুরী মানিকও পেয়েছেন ডিভিশন। মন্ত্রী না হয়েও অনেকের মিলেছে এ সুবিধা।
কারা সূত্র জানায়, তিনবেলা নিয়মমাফিক খাবার দেওয়া হচ্ছে বন্দিদের। ডিভিশন যারা পেয়েছেন তারা নিয়মিত নামাজ পড়া শুরু করেছেন। একে অন্যের সঙ্গে কথা বলছেন। নিজেদের ভুলের প্রায়শ্চিত্তের গল্প বলছেন একে অন্যের কাছে। আরেকটি কারা সূত্রে জানা যায়, ছাত্র-জনতার আন্দোলন দমাতে দেশের শীর্ষ ধনী সালমান এফ রহমান ও সাবেক আইনমন্ত্রী আনিসুল হকের বর্তমানে কেউ খোঁজ-খবর নিচ্ছেন না। এমনকি আত্মীয়-স্বজনরাও তেমন দেখা করতে আসছেন না।
কারা কর্তৃপক্ষ জানায়, ডিভিশন পাওয়া আসামিরা থাকেন আলাদা একটি রুমে। যেখানে থাকে একটি বিছানা, কাঁথা বালিশ, টেবিল, চেয়ার ও ফ্যান। মেলে ব্যক্তিগত টয়লেটের সুবিধাও। প্রতিদিন ২টি পত্রিকা দেয়া হয় তাদের। খাবারের তালিকায় সকালে থাকে রুটি, সবজি ও ডিম। দুপুরে ভাত-মাছ অথবা মাংস ও ডাল। রাতে ভাত, মাছ ও সবজি। কারা অধিদপ্তরের এআইজি জান্নাত উল ফরহাদ বলেন, অন্যান্য বন্দিদের মতো একই পরিমাণের খাবার পাচ্ছেন তারা। শুধু মাছ-মাংস দু’বেলা হয়।
মাসে একবার দেখা করতে পারেন পরিবারের সঙ্গে। সপ্তাহে একদিন ১০ টাকার বিনিময়ে মোবাইল ফোনে কথা বলতে পারেন ১০ মিনিট। এ ছাড়া তাদের দেখভাল করেন একজন কারাকর্মী। সার্বক্ষণিক নজরদারি ছাড়াও প্রতিটি রুমের দায়িত্বে থাকেন কারারক্ষী। এ ছাড়া অন্য বন্দিদের থেকে ভিআইপিদের মেডিকেল সুবিধাও আলাদা রয়েছে বলে জানা গেছে।
আপনার মতামত লিখুন :