শিরোনাম
◈ পলিথিন ব্যাগ নিষিদ্ধ পহেলা নভেম্বর থেকে ◈ আবারও নীতি সুদহার বাড়াল কেন্দ্রীয় ব্যাংক, কার্যকর যেদিন থেকে   ◈ ব্রাহ্মণবাড়িয়ার সরাইলে তুচ্ছ ঘটনায় দু'দল গ্রামবাসীর মধ্যে টেঁটা নিয়ে সংর্ঘষ, আহত ২০ ◈ অপারেশনে যাওয়ার আগে রাত ১১ টায় বোনের কাছে ক্ষমা চেয়েছিলেন তানজিম ◈ ক্রীড়া সংগঠকরা চান বাফুফের সভাপতি হিসেবে তরফদারকে, অনেকের পছন্দ তাবিথকে ◈ পিকনিকের কথা বলে শিক্ষার্থীদের কোর্টে নিয়ে সাক্ষ্য দেয়ালেন প্রধান শিক্ষক! ◈ শেয়ার কারসাজির অভিযোগে ৫০ লাখ টাকা জরিমানা সাকিবকে ◈ কক্সবাজারে সন্ত্রাসী হামলায় যেভাবে মারা গেলেন সেনা কর্মকর্তা, জানাল আইএসপিআর ◈  বিশ্বজুড়ে যে সংস্থাগুলো রয়েছে তার সংস্কার প্রয়োজন: মোদি ◈ নদীবন্দরে সতর্ক সংকেত : ৯ অঞ্চলে সন্ধ্যার মধ্যে ঝড়ের পূর্বাভাস

প্রকাশিত : ২৩ সেপ্টেম্বর, ২০২৪, ০৭:৫৬ বিকাল
আপডেট : ২৪ সেপ্টেম্বর, ২০২৪, ০৪:০৩ দুপুর

প্রতিবেদক : নিউজ ডেস্ক

আওয়ামী লীগের ভবিষ্যৎ কী? কর্মীরা দিশেহারা, রাজনীতি ছাড়ছেন কেউ কেউ

এম এইচ বাচ্চু : শেখ হাসিনার পতনের পর আওয়ামী লীগের সব ছন্ন ছাড়া হয়ে গেছে। দিক-বিদিক ছুঁটছেন নেতাকর্মী। জীবন বাঁচানোর জন্য ঝুঁকি নিয়ে পাড়ি দিচ্ছে অন্যদেশে। কেউ কেউ ‘দেশ ছাড়ার চেষ্টাকালে’ গ্রেপ্তার হয়েছেন।  কেউ কেউ পালাতে পেরেছেন। কারো জীবনও চলে গেছে। এ অবস্থায় রাজনীতিও ছেড়েছে কেউ কেউ। শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে প্রায় দুইশত মামলা হয়েছে। এর মধ্যে বেশিভাগই হত্যা মামলা। গ্রেপ্তারকৃত দলের নেতাদের একের পর এক মামলায় গ্রেপ্তার দেখানো হচ্ছে। দলের হাল ধরার মতো কেউ নেই। সবার একই প্রশ্ন কি হবে আওয়ামী লীগের অবস্থা। 

দল ক্ষমতা হারানোর পর গত একমাসে ঢাকাসহ অনেক জেলাতে আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের বাড়িঘর ও ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে হামলা, ভাংচুর, লুটপাট ও অগ্নিসংযোগের ঘটনা ঘটনা ঘটেছে। চাঁদপুর, কিশোরগঞ্জ, লালমনিরহাটসহ বেশ কয়েকটি জেলায় গণপিটুনি ও আগুনে পুড়ে বেশ কয়েকজন মারা গেছেন। সবশেষে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে মারধরের শিকার সাবেক ছাত্রলীগ নেতা শামীম আহমেদ ওরফে শামীম মোল্লা চিকিৎসাধীন ১৮ সেপ্টেম্বর অবস্থায় মারা গেছেন।

সরকার পতনের পর থেকে আওয়ামী লীগের শীর্ষ থেকে শুরু করে তৃণমূলের নেতাকর্মীরা এক অর্থে উধাও হয়ে গেছেন। আত্মগোপনে থেকে সম্পাদকমণ্ডলীর এক নেতা গণমাধ্যমকে বলেছেন, “আগে বাঁচা মরা, পরে রাজনীতি।” 

আওয়ামী লীগের এখনকার অবস্থার জন্য দলের সিনিয়র নেতাদের দায়ী করছেন তৃণমূলের কর্মী-সমর্থকরা। ফরিদপুরের এক আওয়ামী লীগ কর্মী বলছেন, ক্ষমতা হারালে এমন অবস্থা যে হতে পারে, সেটা তো নেতাদের অজানা থাকার কথা না। তারাই তো এর জন্য দায়ী। এলাকা ছেড়ে একমাস আগে তিনি ঢাকায় এক আত্মীয়ের বাড়িতে আশ্রয় নিয়েছেন।

“ক্রিম খাইলো নেতারা, কোটি কোটি টাকা বানাইলো তারা; আর তাদের পাপের শাস্তি ভোগ করতে হইতেছে আমাদের মতো তৃণমূলের নেতাকর্মীদের,” ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন ওই ব্যক্তি।

টানা সাড়ে ১৫ বছর ক্ষমতায় থাকার পর সরকারি চাকরিতে কোটা নিয়ে ৩৬ দিনের এক আন্দোলনে পতন ঘটেছে আওয়ামী লীগ সরকারের। সব মিলিয়ে বিপর্যয়ে পড়ে গেছে বাংলাদেশের স্বাধীনতার পর সবচেয়ে বেশি সময় ক্ষমতায় থাকা দলটি।

প্রথমবারের মত আন্দোলন মোকাবিলা করতে ব্যর্থ হওয়া দলটির আত্মগোপনে থাকা শীর্ষ নেতারা তৃণমূল পর্যায়ের নেতাকর্মীদের কাছে কোনো দিক নির্দেশনাও পাওয়া যায়নি এক মাস। 

আওয়ামী লীগ সরকার পতনের পর ২২ সেপ্টেম্বর প্রথম নিজেদের অফিসিয়াল পত্রে বিবৃতি দিয়েছে বাংলাদেশ ছাত্রলীগ। এতে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় (ঢাবি) ও জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়সহ (জাবি) দেশের বিভিন্ন স্থানে বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় উদ্বেগ প্রকাশ করেছে। ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় সভাপতি সাদ্দাম হোসেন এবং সাধারণ সম্পাদক শেখ ওয়ালী আসিফ ইনান স্বাক্ষরিত এক বিবৃতিতে এ উদ্বেগ জানানো হয়।

এতে বলা হয়, সম্প্রতি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে তোফাজ্জল হোসেন, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে শামীম মোল্লা এবং রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে আব্দুল্লাহ আল মাসুদসহ দেশের বিভিন্ন প্রান্তে সংঘটিত বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ডের বিষয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছে ছাত্রলীগ। এবং এর নিরপেক্ষ তদন্ত সাপেক্ষে জড়িতদের বিরুদ্ধে যথাযথ পদক্ষেপ গ্রহণের জন্য প্রশাসন ও আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর প্রতি আহ্বান জানাচ্ছে কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগ

তৃণমূলের নেতাকর্মীরাও ছিন্ন বিচ্ছিন্ন, পুলিশি ব্যবস্থা ভেঙে পড়ার পরেও গোপালগঞ্জ ছাড়া তারা রাজপথে সেভাবে সক্রিয় ছিলো নেতাকর্মীরা। 

একজন পুরনো রাজনীতিবিদ বলেছেন, ১৯৭৫ সালে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে সপরিবারে হত্যার পরও বিরুদ্ধ পরিবেশে আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক কার্যক্রম আর রাজপথের তৎপরতা এভাবে পুরোপুরি থমকে দাঁড়ায়নি।

ফেসবুকে স্ট্যাটাস দিয়ে সব ধরনের রাজনৈতিক কর্মকাণ্ড থেকে সরে দাঁড়ানোর ঘোষণা দিয়েছেন নোয়াখালীর সেনবাগ উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক জাহাঙ্গীর আলম। ২০ সেপ্টেম্বর বিকালে ফেসবুকে নিজের আইডিতে তিনি এই পোস্ট করেন।

ফেসবুক পোস্টে জাহাঙ্গীর আলম লিখেন, আমি একজন খাঁটি ব্যবসায়ী। ব্যবসা আর রাজনীতি একসঙ্গে যায় না। রাজনীতি আমার পেশাও না, নেশাও না। বর্তমানে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র-জনতার আন্দোলনের মাধ্যমে পটপরিবর্তনের পরেও যেভাবে রাজনীতি কলুষিত হচ্ছে এবং এক কর্তৃত্ববাদের পতন না হতেই আরেক কর্তৃত্ববাদ সৃষ্টি হওয়ার পথে যেভাবে এগোচ্ছে, সে কারণে এই প্রতিহিংসাপরায়ণ, নোংরা ও অসৎ রাজনীতি থেকে নিজেকে গুটিয়ে নেওয়া উত্তম বলে মনে করি। তাই সকল ধরনের রাজনৈতিক কর্মকাণ্ড থেকে অব্যাহতি নিলাম।

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়