এম এইচ বাচ্চু : রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের সাবেক নেতা আব্দুল্লাহ আল মাসুদকে হত্যার নিন্দা জানিয়েছে আওয়ামী লীগ। রোববার (৮ সেপ্টেম্বর) দলের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আ ফ ম বাহাউদ্দিন নাছিম এক বিবৃতিতে এ নিন্দা জানান। তিনি নির্বিচারে একের পর এক দলীয় নেতাকর্মীদের হত্যার ঘটনা জাতিকে বিপর্যয়ের দিকে নিয়ে যাচ্ছে বলে মন্তব্য করেছেন।
আ ফ ম বাহাউদ্দিন নাছিম বলেন, ‘শনিবার রাতে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের সাবেক নেতা আব্দুল্লাহ আল মাসুদকে নির্মমভাবে পিটিয়ে হত্যা করা হয়েছে।
এক দশক আগে ২০১৪ সালে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে এক হামলায় মাসুদের পায়ের গোড়ালি বিচ্ছিন্ন হয়ে যায়। এরপর থেকে একটি কৃত্রিম পায়ের সাহায্য নিয়ে পঙ্গু জীবনযাপন করছিলেন মাসুদ। মাত্র ৫ দিন আগে মাসুদ প্রথম কন্যা সন্তানের বাবা হন। তিনি গতকাল সেই কন্যার জন্য ওষুধ কিনতে বাসা থেকে বের হয়েছিলেন।
ঠিক সে সময়েই হামলার শিকার হন। প্রথমে তাকে বস্তায় ভরে পেটানো হয়। এরপর রাজশাহীর বোয়ালিয়া থানায় নিয়ে তাকে ফেলে রাখা হয়। চিকিৎসার জন্য তাকে হাসপাতালে নিতে যেতে দেওয়া হয়নি।
আবদুল্লাহ আল মাসুদের হত্যাকারীদের গ্রেফতার ও দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানিয়েছেন আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনার ছেলে সজীব ওয়াজেদ জয়।
সোমবার (৯ সেপ্টেম্বর) বাংলাদেশ সময় ভোরে নিজের ভেরিফায়েড ফেসবুক পেজে এক স্টাটাসের মাধ্যমে এ দাবি করেন তিনি।
মাসুদের নিহতের ঘটনায় সোমবার (৯ সেপ্টেম্বর) নিজের ফেসবুকে নির্মাতা মোস্তফা সরয়ার ফারুকী লেখেন, ‘রাজশাহীর ঘটনাটা মনটা দুমড়ে মুচড়ে দিল। ছোট বাচ্চাটার দিকে কি আমরা তাকাতে পারব? যদি তার বাবা অপরাধ করেও থাকে কে মবকে লাইসেন্স দিল বিচার করার?’
এরপর ফারুকী লিখেছেন, ‘মবরাজ থামান। শৃঙ্খলা আনেন। না হলে কোনো সংস্কার কাজে আসবে না।’
এই নির্মাতা আরও লেখেন, ‘আমি জানি পুলিশ বাহিনীকে দুর্বল করে দেওয়া হয়েছে। কিন্তু এর সমাধানের পথে তো হাঁটতে হবে। সবাই ঐক্য ধরে রেখে মববাজি থামাতে হবে। পুলিশকে আরও কনফিডেন্স দিয়ে এঙ্গেজ করতে হবে।’
সবশেষে ফারুকী বলেন, ‘বিপ্লবের কৃতিত্ব কার, কে ক্রিম খাবে, কাকে ঠেকিয়ে কাকে ওঠাতে হবে এটা পরেও করা যাবে। এখন এটা নিয়ে বিজি থাকলে বিশৃঙ্খলাই কেবল বাড়বে। ফ্যাসিস্ট শক্তি এটাই চায়। এখন ভাবেন তার চাওয়া পূরণ করবেন নাকি ইফেকটিভ সরকার কায়েম করবেন। প্লিজ।’
নিহত মাসুদের স্ত্রী বিউটি আরা গভীর রাতে তার মৃত্যুর খবর শুনে মুষড়ে পড়েন। চারদিনের এই শিশু সন্তান নিয়ে পড়েছেন অথই দুঃখের সাগরে। নিহত মাসুদের স্ত্রী বিউটি বলছেন, মেয়ের নাম মাসুদের সঙ্গে মিলিয়ে রাখতে চেয়েছিলেন মাসুমা। এখন আমার আর মেয়ের দায়িত্বকে নেবে? শোকে চোখের পানি শুকিয়ে গেছে তার।
মরদেহ নিতে মর্গে এসেছেন মাসুদের মামা ও আত্মীয়রা। পরিবারের সদস্যদের দাবি রাজনৈতিক কারণেই এই হত্যাকাণ্ড হয়ে থাকতে পারে। এক পা না থাকা একটি পঙ্গু মানুষ কিভাবে ৫ আগস্ট শিক্ষার্থীদের ওপর হামলা চালাবে? এটি তারা বুঝতে পারছেন না।
এইচ এম নামজুল নামে একজন ফেসবুকে লিখেছেন, ছাত্র কিংবা আমজনতা একজন পঙ্গুকে মারতে মারতে মেরেই ফেললো!! সে তো কোন সহিংসতায় যায়নি। ওষুধ আনতে গেছিলো।
সারওয়ার জাহান বাদল নামে একজন লিখেছেন, এখন নোংরা রাজনীতি শুরু হয়েছে।এটার শুরু হলেও শেষ কবে হবে সেটা সবার ই অজানা।
মির্জা আলী নামে একজন লিখেছেন, এমন ঘটনা সমর্থন করি না। এতটুকু বলছি বিগত সময়ে যে নির্মম নির্যাতন চালিয়েছে স্বৈরাচার মাফিয়া লীগ, সেটা অনেক বড়ো জুলুম নির্যাতন ছিলো।
রেহানা সুলতানা মনি নামে একজন লিখেছেন, কেউ কোন অপরাধ করলে তাকে আইনের মাধ্যমে বিচার করতে হবে। এ ধরনের হত্যাযজ্ঞ কোনভাবেই কাম্য নয়। যে বা যারা এই হত্যার সাথে জড়িত অবিলম্বে তাদের শাস্তির আওতায় আনা হোক।
আপনার মতামত লিখুন :