রিয়াদ হাসান: [২] কোটা সংস্কার আন্দোলন নিয়ে সরকারের টালবাহানা, ২০১৮ সালের আন্দোলনকারীসহ বর্তমান আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীদের বিরুদ্ধে বিদ্বেষপূর্ণ বক্তব্যের প্রতিবাদে সংবাদ সম্মেলনে করেছেন কোটা সংস্কার আন্দোলন-২০১৮ এর নেতারা।
[৩] সোমবার (১৫ জুলাই) এক সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন কোটা সংস্কার আন্দোলন-২০১৮ এর সংগঠক মো. রাশেদ খাঁন।
[৪] লিখিত বক্তব্যে তিনি বলেন, সরকার পরিকল্পিতভাবে ২০১৮ সালের মীমাংসিত বিষয় সামনে এনে চলমান লুটপাট, আর্থিকখাতের বিপর্যয়, আজীজ- বেনজীর- মতিউরদের দুর্নীতি, ভারতের সঙ্গে রেল চুক্তি ইত্যাদি বিষয়গুলো থেকে জনগণের দৃষ্টি ভিন্ন খাতে নেওয়ার চেষ্টা করছে।
[৫] রাশেদ খাঁন বলেন, ক্ষমতাসীনদের ছাত্রসংগঠন ছাত্রলীগের সভাপতি গত ১৩ জুলাই বলেছেন, ২০১৮ সালে কোটা আন্দোলনকারীদের একজনও বিসিএস পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হতে পারেননি। আর ছাত্রলীগের সভাপতি ৯ বছরে গ্রাজুয়েশন শেষ করেছে। এরমধ্যে ৫ বছরই তিনি ফেল করেছেন। বিশ্ববিদ্যালয়ের নিয়ম অনুযায়ী যার ছাত্রত্বই থাকার কোন সুযোগ নেই, তিনি কোটা সংস্কার আন্দোলনকারীদের কেউ চাকরি পায়নি বলে মিথ্যাচার করেছে। সারাদেশে লাখ লাখ শিক্ষার্থী কোটা সংস্কার আন্দোলন করেছে, তাদের অধিকাংশ এখন চাকরি করছে।
[৬] তিনি আরও বলেন, রোববার সংবাদ সম্মেলনে প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, মহান মুক্তিযুদ্ধ ও বীর মুক্তিযোদ্ধাদের বিরুদ্ধে এতো ক্ষোভ কেন? মুক্তিযোদ্ধার নাতি-নাতনিরা কোটা পাবে না, তাহলে কি রাজাকারের নাতিরা কোটা পাবে? সরকারের দায়িত্বশীল জায়গায় থেকে এমন বক্তব্য কখনোই গ্রহণযোগ্য নয়। ২০১৮ সালে যারা কোটা সংস্কার আন্দোলন করেছে, তারাই পরবর্তীতে মেধা ও যোগ্যতায় চাকরি পেয়েছে।
[৭] ২০১৮ সালে যারা আন্দোলন করেছে, ২০২৪ সালে যারা আন্দোলন করছে, তাদের কারওই মুক্তিযুদ্ধ ও মুক্তিযোদ্ধাদের প্রতি ক্ষোভ নেই জানিয়ে রাশেদ খাঁন ্বলেন, সরকার তার নিজের সুবিধার জন্য বৈষম্য সৃষ্টি করেছে। প্রকৃত মুক্তিযোদ্ধা ও তাদের সন্তানদের জন্য সুযোগ সুবিধা বৃদ্ধি করার দাবি আমরা সবসময় জানিয়েছি। বিদ্যমান বাস্তবতায় মুক্তিযোদ্ধার সন্তানদের জন্য কোটা যৌক্তিকহারে সংস্কার করা যেতে পারে। কিন্তু প্রজন্মের পর প্রজন্ম কোটা সুবিধা বাস্তবসম্মত নয়। এছাড়া সংবিধানের ১৯(১), ২৯(১),২৯(২) অনুচ্ছেদে চাকরির ক্ষেত্রে সকল নাগরিকের সমান সুযোগের কথা বলা আছে। সুতরাং কোটা ব্যবস্থা সংবিধানের সঙ্গে সাংঘর্ষিক।
[৮] দেশের বিভিন্ন জায়গায় কোটা সংস্কার আন্দোলনকারীদের উপর হামলার বিষয়ে নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়ে এই নেতা বলেন, ২০১৮ সালে আমাদের উপর হামলা হলে আমরা প্রতিরোধ গড়ে তুলেছিলাম। যেকারণে তারা পিছু হটতে বাধ্য হয়। যেকোন প্রতিকূল পরিস্থিতি ঐক্যবদ্ধভাবে মোকাবেলা করুন। আপনারা সংখ্যায় বেশি। আপনাদের প্রতিরোধ গড়ে তুলতে পারলে বিজয় আপনাদেরই হবে, ইনশাআল্লাহ।
[৯] সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন কোটা সংস্কার আন্দোলন-২০১৮ এর সংগঠক শাকিল উজ্জামান, শহিদুল ইসলাম ফাহিম, আব্দুজ জাহের, শহিদুল ইসলাম, কাওসার আলি প্রমুখ। সম্পাদনা: কামরুজ্জামান
আরএইচ/কে/এনএইচ
আপনার মতামত লিখুন :