শিরোনাম

প্রকাশিত : ১৬ জুন, ২০২২, ০২:০৬ দুপুর
আপডেট : ১৬ জুন, ২০২২, ০২:০৬ দুপুর

প্রতিবেদক : নিউজ ডেস্ক

গেজেটভুক্তির জটিলতা

দুর্নীতি ও অবহেলার শিকার বীরাঙ্গনারা

টিআইবি

মাজহারুল ইসলাম: ২০১৫ সালে ‘নারী মুক্তিযোদ্ধা (বীরাঙ্গনা)’ হিসেবে রাষ্ট্রীয় স্বীকৃতি ও অধিকার পান মুক্তিযুদ্ধে নির্যাতনের শিকার হওয়া নারীরা। কিন্তু মুক্তিযুদ্ধের কয়েক দশক পরেও গেজেটভুক্তির জটিল প্রক্রিয়া ও প্রশাসনিক সহায়তা না থাকায় বীরাঙ্গনারা অনেকক্ষেত্রে অনিয়ম ও দুর্নীতির শিকার হচ্ছেন। আবার অনেক ক্ষেত্রে মিথ্যা সাক্ষ্য প্রমাণ ও দলিলের ভিত্তিতে বিতর্কিত ব্যক্তিদের গেজেটভুক্ত করা হয়েছে। ঢাকা পোস্ট

বৃহস্পতিবার (১৬ জুন) ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশের (টিআইবি) ‘বীরাঙ্গনা মুক্তিযোদ্ধাদের রাষ্ট্রীয় স্বীকৃতি ও অধিকার: সুশাসনের চ্যালেঞ্জ এবং উত্তরণের উপায়’ শীর্ষক গবেষণা প্রতিবেদনে এসব তথ্য-উপাত্ত উঠে আসে। টিআইবির গবেষণায় বলা হয়, বীরাঙ্গনা মুক্তিযোদ্ধারা গেজেটভুক্তির বিভিন্ন ধাপে ও আবাসন সুবিধা পাওয়ার ক্ষেত্রে অনিয়মের শিকার হলেও পরবর্তী জটিলতা এড়ানোর জন্য দুর্নীতির অভিযোগ করা থেকে বিরত থাকেন। অভিযোগ গৃহীত হলে শাস্তির ব্যবস্থা থাকলেও অনিয়ম চিহ্নিত করার জন্য কোনো বিশেষ ব্যবস্থা নেই।

সামাজিক-সাংস্কৃতিক প্রেক্ষাপটের কারণে সৃষ্ট নেতিবাচক মনোভাব থেকে বীরাঙ্গনা, তাদের পরিবার পরিজন সর্বোপরি সাধারণ মানুষদেরকে বের করে আনার জন্য কোনো পদক্ষেপ নেই। স্বীকৃতি প্রাপ্তি ও সুযোগ-সুবিধার সমস্যা রয়েছে। সরকারি স্বীকৃতি প্রাপ্তির পরও পরিবার ও সমাজের দ্বারা হেনস্থার শিকার হওয়ার প্রমাণ পাওয়া গেছে।

টিআইবি’র নির্বাহী পরিচালক ড. ইফতেখারুজ্জামান বলেন, মুক্তিযুদ্ধের চার দশক পরে হলেও মুক্তিযোদ্ধা হিসেবে বীরাঙ্গনাদের রাষ্ট্রীয় স্বীকৃতি ও সুযোগ-সুবিধা প্রদান সরকারের একটি অনন্য পদক্ষেপ। তবে বীরাঙ্গনাদের চিহ্নিত করা থেকে শুরু করে রাষ্ট্রীয় স্বীকৃতি ও সুযোগ-সুবিধা প্রদানের পুরো প্রক্রিয়ায় নানা ঘাটতি বিদ্যমান। 

বীরাঙ্গনাদের রাষ্ট্রীয় স্বীকৃতি ও অধিকার প্রাপ্তির প্রক্রিয়া যেখানে সর্বোচ্চ গুরুত্বের সাথে বাস্তবায়ন করা আবশ্যক, সেখানে পরিকল্পনাহীনতা, প্রাতিষ্ঠানিক সক্ষমতার ঘাটতি, কাঠামোগত জটিলতা, অনিয়ম-দুর্নীতির সুযোগ, জবাবদিহি ব্যবস্থা ও সংবেদনশীলতায় ঘাটতি প্রক্রিয়াটিকে জটিল করে তুলেছে। তার সঙ্গে সামাজিক সচেতনতা ও সংবেদনশীলতার ঘাটতিও লক্ষণীয়। স্বাধীনতার এতো বছর পরও সামাজিক মূল্যবোধে অনেকাংশেই স্থবিরতা রয়ে গেছে। স্থানীয় পর্যায়ে সামাজিক-সাংস্কৃতিক নেতিবাচক মনোভাবের কারণে বীরাঙ্গনারা এখনো প্রান্তিকীকরণের শিকার। বীরাঙ্গনাদের নিয়ে বিভিন্ন বেসরকারি ও নারী বিষয়ক প্রতিষ্ঠান এবং মিডিয়ার নির্দিষ্ট কিছু সংখ্যক কাজ থাকলেও তা নারী বিষয়ক অন্য যেকোনো কাজের তুলনায় বেশ অপ্রতুল। 

টিআইবির প্রতিবেদন অনুযায়ী, এখন পর্যন্ত গেজেটভুক্ত মোট বীরাঙ্গনা মুক্তিযোদ্ধার সংখ্যা ৪৪৮ জন। মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের এমআইএসে গেজেটভুক্ত বীরাঙ্গনার সংখ্যা হালনাগাদ নয়। অনেক গেজেটে নাম-ঠিকানায় ভুল রয়েছে। তাছাড়া কতজনের আবেদন বর্তমানে মন্ত্রণালয়ের কাছে বা বিবেচনাধীন রয়েছে এই বিষয়ক কোনো তথ্য পাওয়া যায়নি।

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়