শিরোনাম
◈ সংশোধিত এডিপি অনুমোদন, ব্যয় কমল ৪৯ হাজার কোটি টাকা ◈ বাংলাদেশে প্রতিশোধমূলক সহিংসতা তদন্তে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে জাতিসংঘের প্রতিবেদন: ফলকার টুর্ক ◈ রমজানের শুভেচ্ছা বার্তায় যা বললেন ট্রাম্প ◈ সাংবাদিক জিল্লুর রহমানের অভিযোগের জবাব দিলেন হাসনাত আব্দুল্লাহ ◈ নুরুল হক নুরের নতুন দলে যোগ দেওয়া প্রসঙ্গ, যা বলল গণ অধিকার পরিষদ ◈ কমেছে বৈদেশিক বিনিয়োগ, অভ্যন্তরীণ সমস্যাকেই দায়ী করছেন ব্যবসায়ীরা ◈ মজুদকৃত প্রায় ১২ হাজার লিটার সয়াবিন তেল জব্দ ◈ ট্রাম্পের ২৯ মিলিয়ন ডলার নিয়ে করা দাবি সত্য নয়: পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় ◈ কারও লাশ যেন বেওয়ারিশ হিসেবে না থাকে: প্রধান উপদেষ্টা (ভিডিও) ◈ 'কী না করেছি পুলিশের জন্য', সাবেক আইজিপি শহীদুলের আক্ষেপ

প্রকাশিত : ০৩ মার্চ, ২০২৫, ০৭:৪৩ বিকাল
আপডেট : ০৪ মার্চ, ২০২৫, ০২:০০ রাত

প্রতিবেদক : নিউজ ডেস্ক

সোয়া ৩ লাখ কোটি ডলার মাত্র ২৪ জনের হাতে

বিশ্বে ধনীদের সম্পদ বাড়ছে তো বাড়ছেই। এতে তৈরি হচ্ছে অতিধনীদের গোষ্ঠীতন্ত্র। এ রকম বিলিয়নিয়ার বা শতকোটিপতিদের খবর বিশ্বের সংবাদমাধ্যমগুলো ফলাও করে প্রচার করছে। এই শতকোটিপতিদের মধ্যে আরেকটি শ্রেণি হলো সুপার বিলিয়নিয়ার, যাঁরা পাঁচ হাজার কোটি ডলার বা তার চেয়ে বেশি সম্পদের মালিক, তাঁরা এই শ্রেণিভুক্ত।

বাস্তবতা হলো, বিশ্বের অর্থনৈতিক কার্যক্রম এখন এই সুপার বিলিয়নিয়ারদের হাতে সীমাবদ্ধ হয়ে পড়ছে বলে ওয়াল স্ট্রিট জার্নাল-এর এক সংবাদে বলা হয়েছে। তাঁদের হাতে যেমন সম্পদ বেশি জড়ো হচ্ছে, তেমনি বিশ্বের অর্থনৈতিক কার্যক্রমের গতিপ্রকৃতিও এখন তাঁরাই নির্ধারণ করছেন। উদ্ভাবনী কাজের নেতৃত্বও দিচ্ছেন তাঁরা। এক কথায়, বিশ্ববাজারের রাশ তাঁদের হাতে।

আগে দেখে নেওয়া যাক, এই সুপার বিলিয়নিয়ারদের হাতে কী পরিমাণ অর্থ আছে। এঁদের সংখ্যা মাত্র ২৪। বিশ্বের শতকোটিপতিদের হাতে যে পরিমাণ সম্পদ আছে, তার ১৬ শতাংশই তাঁদের হাতে, যা ২০১৪ সালে ছিল ৪ শতাংশ।

এই ২৪ জনের সম্মিলিত সম্পদের পরিমাণ ৩ দশমিক ৩ ট্রিলিয়ন বা ৩ লাখ ৩০ হাজার কোটি মার্কিন ডলার। এটা প্রায় ফ্রান্সের জিডিপি বা মোট দেশজ উৎপাদনের সমপরিমাণ। তার চেয়েও গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হলো, এই তালিকায় কারা কারা আছেন এবং বিশ্বে তাঁরা কত ক্ষমতাধর।

শীর্ষে ইলন মাস্ক: বর্তমানে বিশ্বের অতিধনীদের তালিকায় শীর্ষস্থানে অধিষ্ঠিত আছেন ইলন মাস্ক, যিনি বর্তমান বিশ্বের সবচেয়ে ক্ষমতাবান মানুষ মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের ডান হাত। ট্রাম্প প্রশাসন যেসব পরিবর্তনে হাত দিয়েছে, তার অনেকগুলোরই সূত্রধর ইলন মাস্ক। ফলে তাঁর গুরুত্ব সম্পর্কে আর কিছু বলার প্রয়োজন হয় না।

বিশ্ব অর্থনীতির অন্যতম প্রধান খাত এখন বৈদ্যুতিক গাড়ি। সেই বৈদ্যুতিক গাড়ির বাজারের নেতৃত্ব দিচ্ছে ইলন মাস্কের কোম্পানি টেসলা। একই সঙ্গে তিনি স্টার লিঙ্ক ও এক্সের (সাবেক টুইটার) মতো বৈশ্বিক প্রতিষ্ঠানের মালিক। এক্স হাতে আসার পর অনেক ক্ষেত্রেই নিয়মকানুন শিথিল করেছেন ইলন মাস্ক। বিশেষ করে পোস্টের সত্যাসত্য নির্ধারণে। তার প্রভাব এখন অন্যান্য সামাজিক মাধ্যমেও পড়েছে, যেমন ফেসবুকও সম্প্রতি নিয়মকানুন শিথিল করেছে।

এখন প্রযুক্তির দুনিয়ার সবচেয়ে আকর্ষণীয় ও সম্ভাবনাময় খাত হচ্ছে এআই বা কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা। ওপেন এআই চ্যাটজিপিটি বিশ্ববাজারকে তাক লাগিয়ে দিয়েছে। ওপেনআইতে ইলন মাস্ক ছিলেন। কিন্তু চ্যাটজিপিটি বাজারে আসার আগে তিনি কোম্পানিটি ছেড়ে যান। এখন তিনি নিজেই একটি কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা কোম্পানি চালু করেছেন।

তবে চ্যাটজিপিটিতে বিনিয়োগ আছে প্রযুক্তি খাতের আরেক মহিরুহ কোম্পানি মাইক্রোসফটের। বাস্তবতা হলো, এখন বিশ্বের সব প্রযুক্তি কোম্পানি এআই খাতে বিনিয়োগ করতে প্রতিযোগিতায় লিপ্ত হয়েছে। কারণ হিসেবে তারা মনে করছে, ভবিষ্যৎ এখন এআইয়ের হাতে। ফলে কেউ আর এআইয়ের প্রতিযোগিতা থেকে দূরে থাকতে চায় না।

এখন দেখে নেওয়া যাক, এই সুপার বিলিয়নিয়ারদের ব্যবসা-বাণিজ্য প্রধানত কোন কোন খাতে বিস্তৃত। প্রযুক্তি থেকে শুরু করে বিলাসবহুল পণ্য, মহাকাশ গবেষণা, কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা ও আর্থিক খাত—এমন অনেক খাতেই তাঁদের ব্যবসা আছে।

জেফ বেজোস: বিশ্বের অন্যতম শীর্ষ ধনী ও সুপার বিলিয়নিয়ার গোষ্ঠীর অন্যতম আরেকজন হলেন প্রযুক্তিভিত্তিক বৈশ্বিক ই-কমার্স প্রতিষ্ঠান অ্যামাজনের প্রধান নির্বাহী জেফ বেজোস। মূলত অনলাইনে বই বিক্রির মাধ্যমে তিনি অ্যামাজনের ব্যবসা শুরু করেছিলেন। এখন দুনিয়াজুড়ে এমন কোনো পণ্য নেই, যা এই অ্যামাজনে পাওয়া যায় না। বিশ্বের প্রায় সবখানেই তারা সেবা দিয়ে থাকে। বর্তমানে অনলাইনে পণ্য বিক্রি সারা বিশ্বেই তুমুল জনপ্রিয়। সাশ্রয়ী মূল্যে পণ্য পাওয়ার পাশাপাশি এসব অনলাইন থেকে মানুষ ভোগান্তি ছাড়াই ঘরে বসে কেনাকাটা করতে পারে। ফলে আধুনিক পৃথিবীতে ই-কমার্স ব্যবসার গুরুত্ব বাড়ছে।

এবার দেখে নেওয়া যাক, এই সুপার বিলিয়নারদের মধ্যে কারা কারা আছেন এবং তাঁদের সম্পদের পরিমাণই বা কত। এই তালিকায় সবার ওপরে আছেন ইলন মাস্ক; তাঁর সম্পদমূল্য ৪১৯.৪ বিলিয়ন বা ৪১ হাজার ৯৪০ কোটি ডলার। দ্বিতীয় স্থানে আছেন অ্যামাজনের প্রধান নির্বাহী জেফ বেজোস; তাঁর সম্পদমূল্য ২৬৩.৮ বিলিয়ন বা ২৬ হাজার ৩৮০ কোটি ডলার। তৃতীয় বার্নার্ড আর্নল্ট; তার সম্পদমূল্য ২৩৮ দশমিক ৯ বিলিয়ন বা ২৩ হাজার ৮৯০ কোটি ডলার। ২৩৭ বিলিয়ন বা ২৩ হাজার ৭০০ কোটি ডলারের সম্পদ নিয়ে চতুর্থ স্থানে আছেন লরেন্স এলিসন।

মার্ক জাকারবার্গ: সম্পদমূল্যে পঞ্চম স্থানে আছেন ফেসবুকের সহপ্রতিষ্ঠাতা মার্ক জাকারবার্গ; তাঁর সম্পদমূল্য ২২০ দশমিক ৮ বিলিয়ন বা ২২ হাজার ৮০ কোটি ডলার।

সুপার বিলিয়নিয়ারদের তালিকায় ষষ্ঠ স্থানে আছেন সের্জেই ব্রিন; তাঁর সম্পদমূল্য ১৬০ দশমিক ৫ বিলিয়ন বা ১৬ হাজার ৫০ কোটি ডলার। সপ্তম স্থানে থাকা স্টিভ বালমারের সম্পদমূল্য ১৫৭ দশমিক ৪ বিলিয়ন বা ১৫ হাজার ৭৪০ কোটি ডলার।

ওয়ারেন বাফেট: ১৫৪ দশমিক ২ বিলিয়ন বা ১৫ হাজার ৪২০ কোটি ডলার নিয়ে অষ্টম স্থানে আছেন ‘বিনিয়োগ গুরু’ খ্যাত ওয়ারেন বাফেট। নবম স্থানে রয়েছেন জেমস ওয়ালটন; তাঁর সম্পদমূল্য ১১৭.৫ বিলিয়ন বা ১১ হাজার ৭৫০ কোটি ডলার। দশম স্থানে থাকা স্যামুয়েল ওয়ালটনের সম্পদমূল্য ১১৪ দশমিক ৪ বিলিয়ন বা ১১ হাজার ৪৪০ কোটি ডলার।

তালিকায় ১১তম স্থানে আছেন আমানিকো ওর্তেগা; তাঁর সম্পদমূল্য ১১৩ বিলিয়ন বা ১১ হাজার ৩০০ কোটি ডলার। ১১০ বিলিয়ন বা ১১ হাজার কোটি ডলার নিয়ে ১২তম স্থানে এলিস ওয়ালটন। ১৩তম স্থানে থাকা জেনসেন হুয়ানের সম্পদমূল্য ১০৮ দশমিক ৪০ বিলিয়ন বা ১০ হাজার ৮৪০ ডলার।

বিল গেটস: ১০৬ বিলিয়ন বা ১০ হাজার ৬০০ কোটি ডলার মূল্যের সম্পদ নিয়ে ১৪তম স্থানে আছেন বিল গেটস। ১৫তম স্থানে থাকা মাইকেল ব্লুমবার্গের সম্পদের মূল্য ১০৩ দশমিক ৪ বিলিয়ন বা ১০ হাজার ৩৪০ কোটি ডলার। ১০০ দশমিক ৯ বিলিয়ন বা ১০ হাজার ৯০ কোটি ডলারের সম্পদের মালিক লরেন্স পেইজ আছেন ১৬তম স্থানে।

মুকেশ আম্বানি: তালিকায় ১৭তম স্থানে আছেন ভারতের মুকেশ আম্বানি; তাঁর সম্পদমূল্য ৯০ দশমিক ৬ বিলিয়ন বা ৯ হাজার ৬০ কোটি টাকা ডলার। ১৮তম স্থানে থাকা চার্লস কোচের সম্পদমূল্য ৬৭ দশমিক ৪ বিলিয়ন বা ৬ হাজার ৭৪০ কোটি ডলার। ১৯তম স্থানে আছেন জুলিয়া কোচ; তাঁর সম্পদের মূল্য ৬৫ দশমিক ১ বিলিয়ন বা ৬ হাজার ৫১০ কোটি ডলার।

সুপার বিলিয়নিয়ারদের মধ্যে ২০তম স্থানে আছেন ফ্রাঁসোয়া মেয়ার্স; যাঁর সম্পদমূল্য ৬১ দশমিক ৯ বিলিয়ন বা ৬ হাজার ১৯০ কোটি ডলার।

গৌতম আদানি: ২১তম স্থানে থাকা ভারতের গৌতম আদানির সম্পদের মূল্য ৬০ দশমিক ৬ বিলিয়ন বা ৬ হাজার ৬০ কোটি ডলার। ৫৯ দশমিক ৮ বিলিয়ন বা ৫ হাজার ৯৮০ কোটি ডলার নিয়ে ২২তম স্থানে আছেন মাইকেল ডেল। ২৩তম স্থানে থাকা ঝং শ্যানশ্যানের সম্পদমূল্য ৫৭ দশমিক ৭ বিলিয়ন বা ৫ হাজার ৭৭০ কোটি ডলার। ৫৫ দশমিক ৪ বিলিয়ন বা ৫ হাজার ৫৪০ কোটি ডলার নিয়ে ২৪তম স্থানে আছেন প্রোজোগো পাংগেতসু। উৎস: প্রথম আলো।

 

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়