সম্প্রতি চিলির উপকূলে ঘটে গেল এক অবিশ্বাস্য ঘটনা! চিলির প্যাটাগোনিয়া অঞ্চলের বরফশীতল পানিতে এক বাবা-ছেলের কায়াকিং অ্যাডভেঞ্চার রীতিমতো দুঃস্বপ্নে পরিণত হয়। হঠাৎ করেই একটি বিশাল হাম্পব্যাক তিমি এসে ছেলেটিকে গিলে ফেলে!
জানা যায়, ২৪ বছর বয়সি ওই ছেলেটির নাম অ্যাড্রিয়ান সিমানকাস। সম্প্রতি বাবা ডেলের সঙ্গে সাগরে কায়াকিং অ্যাডভেঞ্চারে গিয়েছিলেন তিনি।
ঘটনার এক ভিডিওতে দেখা যায়, অ্যাড্রিয়ানের বাবা ডেল যখন দারুণ সব ঢেউয়ের ভিডিও করছিলেন, তখনই আচমকা বিশাল এক তিমি উঠে আসে তার কাছে। মুহূর্তেই তিমিটি অ্যাড্রিয়ানকে তার নৌকাসহ মুখের ভেতরে টেনে নেয়!
তবে কয়েক সেকেন্ডের মধ্যেই দেখা যায়, তাকে আবার বের করে দিয়েছে তিমিটি।
অবিশ্বাস্য এ ঘটনার অনুভূতি প্রকাশ করে ২৪ বছরের টগবগে অ্যাড্রিয়ান বলেন, আমি অনুভব করলাম যেন একটা বিশাল অন্ধকার গহ্বর আমাকে ঢেকে ফেলল। আমার নাকেমুখে ও শরীরে কেমন একটা পিচ্ছিল অনুভূতি হলো। মনে হলো, আমি বোধহয় আর বাঁচব না!
কিন্তু ভাগ্যক্রমে তিমিটি কয়েক সেকেন্ড পরই তাকে ছেড়ে দেয় এবং অ্যাড্রিয়ানও তার লাইফ জ্যাকেটের সাহায্যে পানির ওপরে ভেসে ওঠেন। পরে তিমিটিও তাকে ছেড়ে দিয়ে চলে যায়।
কেন ঘটল এমনটা?
এ বিষয়ে বন্যপ্রাণী বিজ্ঞানী ভেনেসা পিরোত্তা ব্যাখ্যা করেছেন, হাম্পব্যাক তিমিরা মানুষের মতো বড় কিছু খাওয়ার জন্য তৈরি হয়নি। এটি আসলে লাং-ফিডিং (Lunge Feeding) করছিল। যার মানে হলো- তারা একবারে প্রচুর পরিমাণে পানির সঙ্গে মাছ ও ক্রিল গিলে ফেলে।কায়াকটি (রাবারের বোট জাতীয়) তার খাবারের সঙ্গে চলে আসায় সে ভুলবশত এটিকে গিলে ফেলে। কিন্তু বুঝতে পেরেই ছেড়ে দেয়।
তিমি কি মানুষকে গিলে ফেলতে পারে?
এমন প্রশ্নের জবাবে ভেনেসা বলেন, না! তিমিদের ঘাড়ের গঠন ও সরু খাদ্যনালী মানুষের মতো বড় কিছু গেলার উপযোগী নয়। তাই এটি নিছক দুর্ঘটনা ছিল!
এদিকে এমন একটি দুর্ঘটনার পরও অ্যাড্রিয়ান ও তার বাবা ডেল ফের কায়াকিংয়ে যাবেন কিনা জানতে চাইলে, তারা দু’জনেই একসঙ্গে হেসে বললেন—হ্যাঁ! অবশ্যই!
এর আগেও ঘটেছে এমন ঘটনা!
এটিই প্রথমবার নয়। ২০২১ সালে দক্ষিণ আফ্রিকায় এক ডুবুরিকে একইভাবে গিলে ফেলে একটি তিমি। তবে কয়েক সেকেন্ড পরই তাকে বের করে দেয়।
বিশ্বজুড়ে বিরল হলেও এ ধরনের ঘটনা সামুদ্রিক পরিবেশে মাঝেমধ্যে ঘটে থাকে। তবে চিলির এই ঘটনাটি বৈজ্ঞানিক গবেষণার জন্য এক বড় রহস্য হয়ে উঠেছে! সূত্র: সিএনএন
আপনার মতামত লিখুন :