চীনের একজন ব্যক্তি হঠাৎই রেলস্টেশনে হার্ট অ্যাটাকে আক্রান্ত হন। সম্বিৎ ফেরার পর তিনি যা করেছেন তা দেখে হতবাক সোশ্যাল মিডিয়ার সবাই। হার্ট অ্যাটাকে আক্রান্ত ব্যক্তি সাধারণত হাসপাতালে দৌড়ান, মনে মনে ভাবতে থাকেন আদৌ বাঁচবো তো! কিন্তু এই চীনা ব্যক্তি জ্ঞান ফেরার পরেই বলে উঠেছেন, ‘আমাকে এখনি কাজে যেতে হবে।’
ঘটনাটি গত ৪ ফেব্রুয়ারির। আট দিনের বসন্ত উৎসবের ছুটির শেষ দিনে, যখন হুনান প্রদেশের চাংশাতে একটি রেলওয়ে স্টেশনের প্ল্যাটফর্মে ট্রেনে ওঠার জন্য লোকেরা ভিড় করে দাঁড়িয়ে তখনি হৃদরোগে আক্রান্ত হন ওই ব্যক্তি। জিয়াওকিয়াং মর্নিং হেরাল্ড জানিয়েছে, রেলওয়ে স্টেশনের বেশ কয়েকজন কর্মী এবং একটি প্রধান স্থানীয় স্বাস্থ্য কেন্দ্রের একজন ডাক্তার তার কাছে ছুটে আসেন। ৪০ বছর বয়সী ওই ব্যক্তির জ্ঞান ফেরে ২০ মিনিট পর। জ্ঞান ফেরার পর উঠে বসেই তিনি সবাইকে চমকে দেন। তিনি হাসপাতালে যাওয়ার প্রয়োজন মনে করেননি, উল্টে বলে বসেন ‘কাজে যাওয়ার জন্য আমাকে এখনি ট্রেন ধরতে হবে’।
ঘটনাস্থলের উপস্থিত ডাক্তার লোকটিকে দেখে জানান যে, তিনি পড়ে গিয়ে আঘাত পেয়েছিলেন, যার অর্থ হাসপাতালে শারীরিক পরীক্ষা করা তার জন্য অত্যাবশ্যক ছিল। অনেক কাকুতি মিনতির পর ওই ব্যক্তি অবশেষে অ্যাম্বুলেন্সে উঠতে রাজি হন। চীনে যেখানে বেকারত্বের হার ক্রমেই ঊর্ধ্বমুখী সেখানে এই ব্যক্তির জীবনকে তোয়াক্কা না করার গল্প অনেক ইন্টারনেট ব্যবহারকারীর মনে আঘাত করেছে। কেউ কেউ লিখেছেন, ‘তিনি এই সমাজে একা নন। গৃহঋণ থেকে শুরু করে সন্তানদের পড়ালেখা পর্যন্ত আমাদের অধিকাংশকেই প্রবল মানসিক চাপ বহন করতে হয়। এটা সবার জন্য সহজ নয়।’
সাম্প্রতিক বছরগুলোতে চীনের বেকারত্বের হার উচ্চ পর্যায়ে রয়েছে। ন্যাশনাল ব্যুরো অফ স্ট্যাটিস্টিকস অনুসারে, ১৬ থেকে ২৪ বছর বয়সী লোকদের জন্য বেকারত্বের হার গত বছরের নভেম্বরে ছিল ১৬.১ শতাংশ, যা অক্টোবরের ১৭.১ শতাংশ থেকে কিছুটা কম।
ওভারটাইমের কারণে কর্মচারীর আকস্মিক মৃত্যুর ঘটনা প্রায়শই খবরের শিরোনামে আসে। ২০২২ সালে সাংহাইয়ের একটি শীর্ষ ডিজিটাল কোম্পানির একজন আইটি ইঞ্জিনিয়ার, যার বয়স ছিল মাত্র ৩০ বছর, তিনি একটি জিমে গিয়ে হঠাৎ মারা যান। তার অন্তঃসত্ত্বা স্ত্রী মাসে ২০ হাজার ইউয়ান (২৭০০ মার্কিন ডলার ) হোম লোন থেকে ছাড় পেয়েছিলেন। সূত্র : সাউথ চায়না মর্নিং পোস্ট
আপনার মতামত লিখুন :