শিরোনাম
◈ চিফ হিট অফিসার আতিককন্যা বুশরা কত টাকা বেতন পেতেন? ◈ জানলে চমকে যাবেন, সরকারের মেট্রোরেল মেরামতে সাশ্রয় হয়েছে কত টাকা?  ◈ নির্বাচনের সময় নিয়ে সরাসরি কথা বললেন আইন উপদেষ্টা আসিফ নজরুল ◈ সংস্কার নিয়ে সংলাপের চিন্তা: অগ্রাধিকার পাচ্ছে নির্বাচনি আইন ◈ (১৮ অক্টোবর) বাংলাদেশি টাকায় আজকের মুদ্রা বিনিময় হার  ◈ ফরিদপুরে বাস খাদে পড়ে আহত ৩০, অলৌকিকভাবে উদ্ধার নবজাতক ◈ বাংলাদেশের ওয়ার্ক পারমিট বৈধতা স্থগিত করল ইতালি (ভিডিও) ◈ ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে নিহত প্রত্যেকের পরিবারকে ৩০ লাখ টাকা দেওয়া হবে ◈ হাসিনা সরকার বাইডেন প্রশাসনকে জানিয়েছিল পিটার হাস্‌কে নিয়ে অস্বস্তির কথা ◈ পুলিশের আরও চার কর্মকর্তাকে গ্রেপ্তারের অনুমতি

প্রকাশিত : ০২ মার্চ, ২০২৪, ০২:৫৮ রাত
আপডেট : ০২ মার্চ, ২০২৪, ০২:৫৮ রাত

প্রতিবেদক : নিউজ ডেস্ক

সংকটের সাময়িক সমাধান, আর শর্টকার্টের ধান্ধা! 

পারভেজ আলম

পারভেজ আলম: যেকোনো ক্রাইসিসের সময় তিন ধরনের লোক দেখা যায়। একদল জাস্ট প্যাসিভ দর্শক, ওনারা স্পেক্টাকল দেখেন (এইটা দোষনীয় কিছু না, জাস্ট মানব স্বভাব)। আরেক দল আছেন, যারা ক্রাইসিস কেন হইল, তার কারণ চিহ্নিত করে সমালোচনা করেন (সমালোচনাও জরুরি, বিশেষ করে গঠনমূলক ও সমাধানমূলক)। আরেক ধরণের লোক থাকে, যারা স্বয়ংক্রিয়ভাবে তৎপর হয়ে ওঠেন। ক্রাইসিটা যথাসম্ভব কমাবার চেষ্টা করেন। মানুষের জীবন বাঁচাবার চেষ্টা করেন। আপনার সমাজে যদি খালি উপরের দুই গ্রুপের লোক দেখেন, কিন্তু শেষ গ্রুপটার অন্তর্ভুক্ত কাউকে খুঁজে না পান, তখন বুঝবেন যে এই শেষ বর্গভুক্ত মানুষগুলাকে হয় হত্যা করা হয়েছে, অথবা দেশত্যাগে বাধ্য করা হয়েছে।  

সমালোচকরা দুইভাগে ভাগ হয়ে যাবেন, তা জানি। এক ভাগ দোষ দেবেন ড্রেনের পানিতে চিপ্সের প্যাকেট ফেলা জনগণকে। আরেক দল দোষ দেবেন সরকারকে। কিন্তু আদতে এই কাঠামোগত গণহত্যার জন্যে সরকার বা জনগণের কোনো একদলকে বিচ্ছিন্নভাবে সমালোচনা করে লাভ নাই। কেননা সরকার ও জনগণ দুই পক্ষেরই একটা সাধারণ সীমাবদ্ধতা এই পরিস্থিতি তৈরি করেছে। আমি ঢাকার সন্তান। আমিতো চোখের সামনে এই নারকীয় ঢাকাটা তৈরি হতে দেখেছি (দুই দশক আগেও ঢাকা এমন ছিল না)। যেখানে একটা মহল্লার মানুষরা মিলেমিশে নিজেদের মহল্লাকে সবার জন্য বাসযোগ্য করে ডিজাইন করতে পারতেন, সেখানে আমরা প্রতিবেশীদের সাথে প্রতিযোগিতা করে কুৎসিৎ সব হাইরাইজ বিল্ডিং বানিয়েছি। নিজের হাঁটার রাস্তার জন্য জায়গা না ছাড়ার মতো স্টুপিড আচরণ করেছি। দুনিয়ার আর কয়টা নগরের মানুষ প্রতিবেশীদের সাথে অসুস্থ প্রতিযোগিতা করে নিজেকে এমন কংক্রিটের খাচায় আটক করেছে? আমাদের পরিবারগুলাইতো সন্তানদের দ্রুত কর্মক্ষম করতে গিয়া ভুল ক্যারিয়ারের পেছনে ছুটতে বাধ্য করে, এবং অতঃপর সন্তানদের জীবন ধ্বংস করে, নাকি?  

আমাদের রাজনীতিকদের মানসিক অবস্থা জনগণের চাইতে যে খুব আলাদা, তা তো না। এই যে আওয়ামী লীগ। ঐতিহ্যবাহী একটা দল। মুক্তিযুদ্ধে নেতৃত্ব দেয়া দল। অথচ এরা সামনের দিনগুলোতে পরিচিত হবে স্বৈরতন্ত্র, ফ্যাসিবাদ এবং বিদেশি উপনিবেশ কায়েম করা একটি রাজনৈতিক দলে। সামান্য দুই/তিন টার্ম ক্ষমতা ধরে রাখতে গিয়ে এরা নিজেদের পুরো ভবিষ্যতকে কবর দিয়ে দিলো। কারা করে এই কাজ? কোনো সুস্থ মস্তিষ্কের, যুক্তিবুদ্ধিসম্পন্ন লোকেরা নেতৃত্বে থাকলে একটা দল এমন কাজ করতে পারে? 

বিরোধী দলগুলোর কথা কী বলবো। এরা সবাই মুখে মুখে গণতন্ত্র চায়। অথচ এদের বেশিরভাগের দলের মধ্যেই গণতন্ত্রের ছিটেফোটা নাই। গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠার লম্বা (আসলে অতো লম্বাও না, পাঁচ বা দশ বছরের শ্রমের ব্যাপার) পথ পারি না দিয়ে ওনারা সবাই তত্ত্বাবধায়ক সরকারের মতো অরাজনৈতিক যন্ত্র দিয়া গণতন্ত্র কায়েম করতে চান। সাময়িক ও দ্রুত গতির সমাধানের নামে... জিনিসটা বাংলাদেশের গণতন্ত্রের উপর চাপিয়ে দেওয়া হয়েছে। পার্মানেন্ট সমাধান না খুঁজে দ্রুত ও সাময়িক সমাধানের নামে যা হাজির করা হয়েছে, সেইটাই পরে জন্ম দিয়েছে পার্মানেন্ট সাংবিধানিক সংকটের এবং আমাদের রাজনৈতিক দলগুলা এতোই বুদ্ধিমান যে এখনো তারা ওই দ্রুত ও সাময়িক সমাধানের পেছনেই ছুটতাছেন। 

এমন সাময়িক সমাধান আর শর্টকার্টের ধান্ধায় থাইকা লসের পাল্লা যে ক্রমেই আরো ভারি থেকে ভারি হচ্ছে, সেই ব্যাপারটা অনুধাবনের ক্ষমতাও নাই আপনাদের। কেউ কেউ দেখলাম বলতাছেন যে বস্তিতে আগুন লাগলে আমাদের খবর হয় না, কিন্তু মধ্যবিত্তদের বিল্ডিংয়ে লাগায় খবর হইছে। ওরে ভাই, এই মধ্যবিত্ত সিনাগিরিই আপনাদের সর্বনাশ করেছে। আপনারা বস্তিতেই থাকেন, এই সত্যটা স্বীকার করেন। স্বীকার করলে অন্তত পরিস্থিতি পাল্টাইতে চাইবেন। ফেসবুকে ১-৩-২৪ প্রকাশিত হয়েছে। 

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়