এ কে আজাদ: নির্বাচন জমে উঠেছে। সময় যতো কমছে, প্রার্থীদের প্রচার-প্রচারণার গতি ততো বাড়ছে। সেই সাথে, অনেক স্বতন্ত্র প্রার্থীই দৃঢ়ভাবে আশাবাদী হয়ে উঠেছেন যে, তাঁরা এমপি নির্বাচিত হবেনই। নৌকা ও নৈৗকা-দলীয়-স্বতন্ত্র প্রার্থীকে ঘিরে আওয়ামীলীগের তৃণমূলের কর্মীরা তাদের অবস্থান জানান দিতে শুরু করেছে। কোনো রাজনৈতিক পরিচিতি নেই, অথচ আওয়ামীলীগের সমালোচক বা আওয়ামীলীগ প্রার্থীকে অপছন্দ করে, এমন ভোটাররাও স্বতন্ত্র প্রার্থীর পক্ষে মুখ খুলছেন, মাঠে নামছেন। অন্যান্য দল ও জোটের প্রার্থীরাও প্রচারণার মাঠে নিজ নিজ শক্তি প্রদর্শন করছেন। প্রার্থী চুড়ান্তকরণ ও প্রতীক বরাদ্দের পর নির্বচনের মাঠ আরও অধিক সরগরম, প্রাণবন্ত ও জমজমাট হয়ে উঠার আভাস স্পষ্ট।
এ পরিস্থিতিতে গতকাল আওয়মীলীগ সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের বলেছেন, ‘স্বতন্ত্র প্রার্থীদের নৌকার সাথে মল্লযুদ্ধ করতে দেওয়া হবে না’। তাঁর এই মন্তব্যটি অনেকটা গরম চা’য়ে জল ঢেলে দেওয়ার মতো বা পূর্ণগতিতে চলতে শুরু করা নির্বাচনী ট্রেনে অযথা ব্রেক-কষে দেওয়ার মতো। ওবায়দুল কাদেরের এ বক্তব্য আওয়ামীলীগের স্বতন্ত্র প্রার্থী ও তাদের কর্মী-সমর্থকদের চিন্তিত করবে বা দো-টানায় ফেলতে পারে। ‘স্বতন্ত্র প্রার্থীদের নৌকার সাথে মল্লযুদ্ধ করতে দেওয়া হবে না’- এ কথার মানে কি ?
প্রতীক বরাদ্দের পূর্বে অথবা নির্বাচনী প্রচারণা চলাকালীন কোনো কোনো স্বতন্ত্র প্রার্থীকে ‘ডোন্ট মুভ’ জাতীয় মেসেজ পাঠিয়ে নিবৃত্ত করে দেওয়ার নিয়ত নেই তো ? এ কথা এখন ওপেন-সিক্রেট যে, বেশকিছু কেন্দ্রীয় নেতা সহ নৌকার অনেক প্রার্থীর ভীষণ মাথা ব্যথার কারণ হয়ে উঠেছেন স্বতন্ত্র প্রার্থীরা। শুধু নৌকার প্রার্থী নয়, জাতীয় পার্টিও ভয় পাচ্ছে নৌকার স্বতন্ত্রদের। জাতীয় পার্টির মহাসচিব মুজিবুল হক চুন্নুর কথায় ভয়ের বিষয়টি প্রকাশ্য হয়েছে। তিনি বলেছেন, আসন সমঝোতা হলে, কেবল নৌকা প্রত্যাহার করলেই হবে না, আওয়ামীলীগের স্বতন্ত্রদেরও বসিয়ে দিতে হবে। শোনা যাচ্ছে, জাতীয় পার্টির এ আব্দার নাকচ করে দিয়েছেন আওয়ামীলীগ সভানেত্রী ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। রাজনীতি সচেতন নাগরিকরা মনে করনে, নির্বাচন শতভাগ সুষ্ঠু হলে নৌকার কোনো প্রার্থীর পরাজয়ের শঙ্কা থাকলেও আওয়ামীলীগের তো ভয়ের কিছু নেই। আওয়ামীলীগ বিপুল সংখ্যাগরিষ্ঠতা নিয়ে পঞ্চমবারের মতো ক্ষমতায় আসবেই। সুতরাং এখন প্রয়োজন, ভোট কেন্দ্রে ভোটারের উপস্থিতি কতো বেশী বাড়ানো যায়, সে চেষ্টা করার পাশাপাশি একটি অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচন উপহার দেওয়া।
দলীয় স্বতন্ত্র ও ডামি প্রার্থীর বিষয়ে প্রধানমন্ত্রী প্রথম যে বক্তব্য দিয়েছিলেন, এখনো সেটাই বহাল আছে। দলীয় স্বতন্ত্র প্রার্থীদের বসিয়ে দিতে বা তাদের বিরুদ্ধে কোনো সাংগঠনিক ব্যবস্থা নিতে রাজী নন তিনি। কারণ অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচনের পাশাপাশি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা একটি অংশগ্রহনমূলক এবং উৎসবমুখর নির্বাচন দেশবাসীকে উপহার দিতে চান।
আপনার মতামত লিখুন :