শিরোনাম
◈ যুক্তরাষ্ট্র কঠোর হচ্ছে ‘বার্থ টুরিজম’ বন্ধে ◈ আইন উপদেষ্টা আসিফ নজরুলকে নিয়ে ভারতের গণমাধ্যমে বিভ্রান্তিকর প্রতিবেদন, আইন মন্ত্রণালয়ের বিবৃতি ◈ যেসব অঞ্চলে সকালের মধ্যে ঝড় হতে পারে ◈ কুয়েটের ভিসি-প্রো-ভিসিকে প্রত্যাহার করে প্রজ্ঞাপন জারি ◈ ভারত কি পাকিস্তানে সিন্ধু নদীর পানির প্রবাহ বন্ধ করতে পারবে? ◈ আ.লীগ নিষিদ্ধের কথা বললে পশ্চিমাদের দৃষ্টিভঙ্গির দোহাই দেয় সরকার: শহিদি সমাবেশে সারজিস আলম ◈ কৃষি বিপ্লবের হাতছানি, ৪২০০ টাকার ন্যানো সার মিলবে ২৩০ টাকায়! ◈ পোপ ফ্রান্সিসের শেষকৃত্যে যোগ দিতে ভ্যাটিকানে অধ্যাপক ইউনূস ◈ দেশীয় অস্ত্র নিয়ে কুমিল্লায় কিশোর গ্যাংয়ের মহড়া, এলাকায় আতঙ্ক ◈ আইপিএলে ম্যাচ গড়াপেটার অভিযোগ, প্রমাণ করতে ভিডিও নিয়ে হাজির পাকিস্তা‌নের ক্রিকেটার

প্রকাশিত : ২২ মে, ২০২২, ০২:২১ রাত
আপডেট : ২২ মে, ২০২২, ০২:২১ রাত

প্রতিবেদক : নিউজ ডেস্ক

জ্ঞান অর্জনের প্রথম ধাপ হলো সন্দেহ করা!

এম আমির হোসেন

এম আমির হোসেন: প্রচলিত ধারণা ও বিশ্বাসকে সন্দেহ করার মাধ্যমেই প্রকৃত-জ্ঞান অর্জন সম্ভব। জ্ঞান অর্জনের প্রথম ধাপ হলো সন্দেহ করা। সন্দেহ করার মাধ্যমে মানুষের মনে যে প্রশ্ন তৈরি হয় তা সমাধানের প্রচেষ্টা থেকেই জন্ম নেয় নতুন নতুন বিজ্ঞান ও দর্শন। জ্ঞান-বিজ্ঞানের বিকাশে সন্দেহ-করা যে মোক্ষম কাজ করেছে তা সন্দেহাতীতভাবে প্রমাণিত। মানুষের মনে সন্দেহ নামক অমূল্য সম্পদটি না থাকলে অন্য বন্য প্রাণীর মতোই আমাদের জীবনধারণ করতে হতো, কখনো পাওয়া হতো না সভ্যতার ছোঁয়া।

সন্দেহবাদ ও সংশয়বাদের ধারণা আমরা প্রথমে পাই প্রাচীন গ্রিক-দার্শনিক প্রোটাগোরাসের লেখায়। সমাজের প্রচলিত ধারণাকে সন্দেহ করার খেসারত হিসাবে তাঁকে সমাজচ্যুত হতে হয়েছিল, প্রাণভয়ে গ্রিস ছেড়ে পালাতে হয়েছিল। পরবর্তীতে সন্দেহকে জ্ঞান আহরণের পদ্ধতি হিসাবে প্রতিষ্ঠিত করেছিলেন ফরাসি দার্শনিক ডেকার্টে। তিনি বলতেন, চিন্তা থেকেই সন্দেহের উৎপত্তি, আর সন্দেহ থেকে উৎপত্তি হয় জ্ঞানের। একমাত্র সন্দেহ করার এই ক্ষমতা ছাড়া বাকি সবকিছুতেই সন্দেহ করতেন তিনি। Cogito ergo sum (আমি চিন্তা করি, তাই আমি আছি), Dubito ergo sum (আমি সন্দেহ করি, তাই আমি আছি)— তাঁর বহুল প্রচলিত দুটি বচন। জন লক, ডেভিড হিউম সন্দেহবাদকে দিয়েছিলেন পরিপূর্ণতা। ইন্দ্রিয়লব্ধ জ্ঞানের মূল কারণ কী—তা অনুসন্ধান করতে গিয়ে তাঁরাও সন্দিহান হয়ে পড়েন। এই সন্দেহের যথাযথ উত্তর দিয়েছে বিজ্ঞান। বিজ্ঞান বলেছে, ইন্দ্রিয় তথা মানুষের সহজাত ধর্ম মূলত বস্তু সমষ্টির-ই ধর্ম। মানুষও কতিপয় বস্তুর সমষ্টি;—বস্তু ছাড়া মানুষের আলাদা কোনো অস্তিত্ব নেই।

এতো কথার মূল কথা হলো, সন্দেহ-সংশয় থেকেই জ্ঞানের শুরু; যা ধারাবাহিক গ্রহণ-বর্জনের প্রক্রিয়ায় পরিপক্ব এক পর্যায়ে এসে মানব কল্যাণে ব্যবহৃত হয়। জ্ঞান উৎপাদনের পরীক্ষিত এই প্রক্রিয়া থেকে বাঙালি জাতি বহুযুগ ধরে বহুদূর পিছিয়ে আছে। হায়! অবোধ বাঙালি পুরুষ প্রচলিত ধারণাকে নয়, ঘরের বউকেই কেবল সন্দেহ করতে জানে! ভাব আর ভাবির কাঙাল হয়েই তারা থাকল চিরকাল। সেই রবীন্দ্রনাথ থেকে শুরু। ভাবে মরল, ভাবি কাদম্বরীও মরল। এই কাঙালপনা থেকে উৎরাতে পারল না আর। সুখী-সুখী ভাবালুতার নকশিকাঁথা গায়ে দিয়ে বিশ্বাসের তুলতুলে নরম বালিশে অব্যবহৃত মস্তকটিকে রেখে বেঘোরে ঘুমানোই এখানে সমাজস্বীকৃত আদর্শ-জীবন। সন্দেহবাদী মৌলিক-চিন্তা যে বাঙালি-স্নায়ুর কর্ম নয় তা নিয়ে বিন্দুমাত্রও সন্দেহ নেই আমার!
 লেখক: চিকিৎসক

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়