শিরোনাম
◈ দিল্লিতে এক কেজির ইলিশ বিক্রি হচ্ছে ৩ হাজার রুপিতে ! ◈ খাগড়াছড়ির দীঘিনালায় শিক্ষার্থীদের মিছিলে হামলা-সংঘর্ষ, গুলি (ভিডিও) ◈ কুষ্টিয়ায় পদ্মার ভাঙনে জাতীয় গ্রিডের টাওয়ার নদীতে বিলীন ◈ ভারতে থাকার মেয়াদ শেষ হচ্ছে, কোন আইনের বলে ভারতে থাকবেন শেখ হাসিনা? ◈ (২০ সেপ্টেম্বর) বাংলাদেশি টাকায় আজকের মুদ্রা বিনিময় হার ◈ স্থিতিশীল ডলারের দর, ইতিবাচক প্রভাব পড়েছে দেশের বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভেও ◈ কেন্দ্রীয় ব্যাংকের ‘গ্যারান্টিতে’ নগদ টাকার সংকট কাটছে যে ৫ ব্যাংকের ◈ হত্যাকাণ্ড নিয়ে অপপ্রচার চলছে, জাবিতে কোন কমিটিই নেই : ছাত্রদল ◈ গণপিটুনিতে মৃত্যু: স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টার দুঃখপ্রকাশ, বৈষম্যবিরোধীদের নিন্দা, ফেসবুকে নানা সমালোচনা ◈ ভারতের গোলা যাচ্ছে ইউক্রেনে, ক্ষুব্ধ রাশিয়া

প্রকাশিত : ২০ মে, ২০২২, ০২:৩৪ রাত
আপডেট : ২০ মে, ২০২২, ০২:৩৪ রাত

প্রতিবেদক : নিউজ ডেস্ক

শিক্ষাখাতে বরাদ্দ বৃদ্ধির কথা বললেই রাষ্ট্র গরিব-মিসকিন হয়ে যায়!

ড. কামরুল হাসান মামুন

অধ্যাপক ড. কামরুল হাসান মামুন: আগামী অর্থবছরে ২০২২-২৩ দেশের ৫১টি পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের জন্য বরাদ্দ করা হয়েছে ১০ হাজার ৪৪৪ কোটি ৪ লাখ টাকা। What a shame! পৃথিবীতে অনেক বিশ্ববিদ্যালয় আছে যার একটির বরাদ্দই এর চেয়ে অনেক বেশি। যেমন গত বছর অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের বাজেট বরাদ্দ ছিল ২৩ হাজার ২৭৯ কোটি টাকা। অর্থাৎ ৫১টি বিশ্ববিদ্যালয়ের বাজেট বরাদ্দের দ্বিগুনেরও বেশি একটি বিশ্ববিদ্যালয়ের বাজেট। এমনিভাবে ক্যামব্রিজ, হার্ভার্ড কিংবা এমআইটি বাজেট দেখলেও একই চিত্র পাওয়া যাবে। এমনকি অনেক মাঝারি বিশ্ববিদ্যালয়ের বাজেটও আমাদের ৫১টি বিশ্ববিদ্যালয়ের জন্য বরাদ্দের চেয়ে বেশি। ৫১টি বিশ্ববিদ্যালয়ের মধ্যে বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ের জন্য বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে ৪৭ কোটি টাকা। পৃথিবীর অনেক বিশ্ববিদ্যালয় আছে যার একটি বিভাগের শুধু গবেষণা বরাদ্দও ৪৭ কোটির অনেক অনেক বেশি হতে পারে।  

ভারতের আইআইটি খড়গপুরের জন্য গত বছর বরাদ্দ ছিল ১ হাজার ৪৮৬ কোটি টাকা। আইআইটির খড়গপুরের ছাত্র সংখ্যা মাত্র ১৫ হাজারের মত। ৩৫ হাজারের বেশি ছাত্র সংখ্যার ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের জন্য এইবার বরাদ্দ হলো ৮৬৪ কোটি ৯৪ লাখ টাকা। অন্যদিকে বুয়েটের ছাত্র সংখ্যা ৮ থেকে ৯ হাজারের মত। এই বিশ্ববিদ্যালয়ের জন্য বরাদ্দ হলো প্রায় ২২২ কোটি টাকা। গত কয়েক বছরের বাজেট বরাদ্দের অংক কষলে দেখায় যায় প্রতি বছর বিশ্ববিদ্যালয়গুলো জন্য বরাদ্দ প্রায় ৯০০ কোটি টাকার মত বাড়ানো হয়। প্রতিবছরই নতুন বিশ্ববিদ্যালয় হচ্ছে, পুরাতন বিশ্ববিদ্যালয়ে নতুন বিভাগ ও ইনস্টিটিউট খোলা হচ্ছে, নতুন নতুন শিক্ষক, কর্মকর্তা ও কর্মচারীর সংখ্যা বাড়ছে, জিনিসপত্রের দাম বাড়ছে, মুদ্রাস্ফীতি বাড়ছে। এইসব কিছু বিবেচনায় নিলে স্পষ্ট করে বলা যায় যে আসলে এই যে বাড়া এইটা বাজেট বরাদ্দ বৃদ্ধি নয়। সংখ্যার দিক থেকে বেড়েছে বটে কিন্তু সবকিছু বিবেচনায় নিলে হয়ত দেখা যাবে ইফেক্টভ বরাদ্দ কমেছে। 

উচ্চ শিক্ষা ব্যয়বহুল। কারণ বিশ্ববিদ্যালয় কেবল জ্ঞান বিতরণই করে না জ্ঞান সৃষ্টিও করে। জ্ঞান সৃষ্টি হলো মানুষের সকল সৃষ্টির সেরা সৃষ্টি। আর সেরা সৃষ্টি বলেই এটি অত্যন্ত ব্যাবহুল। আর ব্যয়বহুল বলেই বিশ্ববিদ্যালয়ের বিশাল বিশাল বাজেট বরাদ্দ দিতে হয়। জ্ঞান যারা বিলাবে এবং সৃষ্টি করবে তাদের আনন্দে রাখতে হবে, তাদের জ্ঞান সৃষ্টির অনুকূল পরিবেশ দিতে হবে, ছাত্র শিক্ষকদের থাকা খাওয়ার মনোরম পরিবেশ থাকতে হবে। সেই জন্যই ভালো বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্যাম্পাস যেন একেকটি পার্ক। আর আমাদেরগুলো যেন একেকটি ভাগাড়। এই কারণেই দেশের মানুষের মান খারাপ হচ্ছে। শিক্ষা প্রতিষ্ঠানকে অবহেলা করে, শিক্ষক ছাত্রদের অবহেলা করে সুন্দর উন্নত দেশ গড়ার ইতিহাস পৃথিবীতে নাই। কথা পরিষ্কার? আপনারা যেই উন্নয়নের কথা বলছেন সেখানে শিক্ষা নাই। আর শিক্ষা নেই বলেই দুর্নীতি, ধর্মান্ধতা, স্বার্থান্ধতা, দলান্ধতায় দেশ ছেঁয়ে গেছে।

শিক্ষা খাতে বরাদ্দ বৃদ্ধির কথা বললে রাষ্ট্র গরিব মিসকিন হয়ে যায়। মেগা প্রজেক্ট আর অন্যান্য প্রজেক্টগুলোর বরাদ্দ নানা অজুহাতে এক লাফে শত শত এমনকি হাজার কোটি টাকাও বেড়ে যায়। তখনতো টাকার অভাব হয় না। দুর্নীতির জন্য তো টাকার অভাব হয় না। 
লেখক: শিক্ষক, পদার্থবিজ্ঞান বিভাগ, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়