আবুল হাসনাৎ মিলটন: প্রশান্ত কুমার হালদার ওরফে পিকে হালদারের এই লুটপাটে বাংলাদেশ ব্যাংক তার দায় এড়াবে কী করে? পিকে হালদার গং তো একদিনে পুরো টাকাটা লুটে নেয়নি। দিনের পর দিন নানা রকমের কারসাজি করে পিকে এই বিপুল পরিমান টাকা লুটপাট করেছে। বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক ডিজি অসুর গং ঘুষ খেয়ে সহায়তা না করলে পিকে হালদার এত টাকা আত্মসাত করতে পারতো না। সাম্প্রতিক অতীতের ঘটনাবলী বিশ্লেষণ করে দেখা যায়, ব্যাংক সংক্রান্ত সকল কেলেঙ্কারিতে বিভিন্ন ব্যাংকের উচ্চপদস্থ দুর্নীতিবাজ কর্মকর্তারা জড়িত ছিলো। এই যে প্রশান্ত কুমার হালদার ওরফে পিকে হালদার ১০ হাজার ২০০ কোটি টাকা আত্মসাত করেছে এই টাকাটা কার? এটা তো দেশের মানুষের টাকা। আমার পরিচিত একজন চিকিৎসক তার বিশেষ চাহিদাসম্পন্ন ছেলের ভবিষ্যত বিবেচনায় নিজের সারাজীবনের সঞ্চিত অর্থের একটা বড় অংশ এখানে জমা রেখেছিল। পিকে গং এই টাকাটাও আত্মসাত করেছে। দেশের স্বনামধন্য একজন শিক্ষক তার কষ্টার্জিত পঞ্চান্ন লাখ টাকা পিকে হালদারের প্রতিষ্ঠানে জমা রেখেছিলেন। এরকম অসংখ্য মানুষ যারা টাকা খুইয়েছে তারা পিকে হালদারের পাশাপাশি সঙ্গত কারণেই সরকারের উপরও ক্ষুব্ধ হবে। পিকে হালদার গ্রেফতার হলেও ক্ষতিগ্রস্তরা কি তাদের হারানো টাকা ফিরে পাবে?
আচ্ছা, পিকে গংদের কি সরকার পৃষ্ঠপোষকতা করে? সরকারের উচ্চ পর্যায় থেকে কি বাংলাদেশ ব্যাংকের অসুর চৌধুরীদের ঘুষ খেয়ে লুটপাটে সহযোগিতা করার কথা বলে দেয়? সেই সময়ের বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর কি এ ব্যাপারে কিছু জানতেন? সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ের লোকজনের কি এ ব্যাপারে কোনো ধারণা ছিল? বাংলাদেশের গোয়েন্দা সংস্থার লোকজন কী করেন? কর বিভাগের দায়িত্ব যাদের তারা কী করেন? নাকি সবাই মিলে দুর্নীতির একটা সিন্ডিকেট তৈরি করে যার যার ভাগের টাকা বুঝে নিচ্ছেন? দেখেশুনে মনে হয় দেশে এরা একটা মাফিয়াতন্ত্র কায়েম করেছে। বর্তমান সরকারের নজিরবিহীন উন্নয়নের গল্পগুলো এইসব মাফিয়াদের চৌর্যবৃত্তির কারণে ম্লান হয়ে যাচ্ছে। এক বালতি দুধের ভেতরে তারা ক্রমশ গোবর ঢেলে চলেছেন। কালেভদ্রে দুয়েকজন পিকে হালদার ধরা পড়লেও কত মাফিয়া নিশ্চিন্তে পাড়ি দিয়েছে বিদেশ, কত দুর্বৃত্ত আজো বুক ফুলিয়ে হাঁটছে ঢাকা শহরের বুকে তার কি কোন হিসেব আছে? এসব ঠেকানোর জন্য কি দেশে কেউ নাই? দিনের শেষে সব দায় গিয়ে কিন্তু পড়ে সরকারেরই উপর। ফেসবুক থেকে
আপনার মতামত লিখুন :