শিরোনাম

প্রকাশিত : ১৬ মে, ২০২২, ০২:২১ রাত
আপডেট : ১৬ মে, ২০২২, ১০:৪৪ দুপুর

প্রতিবেদক : নিউজ ডেস্ক

ড. কামরুল হাসান মামুন: শিক্ষা কেন্দ্রিক কিছু মেগা প্রজেক্ট নিন

অধ্যাপক ড. কামরুল হাসান মামুন

অধ্যাপক ড. কামরুল হাসান মামুন: বাংলাদেশের একজন প্রতিমন্ত্রী জুনায়েদ আহমেদ পলকের সাম্প্রতিক একটি পোস্ট আমার নজর কেড়েছে। একজন মন্ত্রী পৃথিবীসেরা প্রতিষ্ঠান এমআইটিতে গিয়েছেন, সেখানকার নেনো সাইন্স এন্ড টেকনোলজি সেন্টার দেখতে গিয়েছেন এবং সেখানকার বাংলাদেশী গবেষকদের সাথে কথা বলেছেন। আমিআইটি থেকে পিএইচডি করে দেশে এসে বুয়েটে জয়েন করাকে appreciate করেছেন এবং একই সাথে এমআইটির সাথে জয়েন্ট কোলাবোরেশনের চেষ্টা করেছেন। এটি খুবই inspiring! বুয়েট থেকে এমআইটিতে প্রায় নিয়মিত পিএইচডি করতে যাচ্ছে এটাই প্রমান করে বুয়েট ভালো করছে। কেন করছে? কারণ বুয়েটের ছাত্র এবং শিক্ষক রাজনীতি অনেক কম। সেখানে শিক্ষক নিয়োগে দলান্ধতাও কম। তবে পরিবেশ আরও ভালো করলে এমআইটি, ক্যালটেক ইত্যাদি বিশ্বসেরা প্রতিষ্ঠান যাওয়ার সংখ্যা আরও বাড়বে। একই সাথে নিজ দেশে শিক্ষা ও গবেষণার পরিবেশ তৈরি করলে ফিরে আসার হারও বাড়বে এবং এর ফলে দেশে মানসম্মত শিক্ষা বৃদ্ধি পাবে। 

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বয়স ১০০ বছর। জানিনা ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে এখনো কেউ এমআইটি হার্ভার্ডে পিএইচডি করতে যেতে পেরেছে কিনা। এই পরিবেশের মধ্যেও আমার পদার্থবিজ্ঞানের অনেক ছাত্র শিক্ষক প্রতিবছরই আমেরিকার অনেক ভালো ভালো বিশ্ববিদ্যালয়ে পিএইচডি করতে যাচ্ছে। এইবারই আমার নিজের ৫ জন থিসিস ছাত্র যাচ্ছে। ছোট পরিসরে এটাকে আমার একটা প্রাপ্তি বলে জানি। এছাড়া আমার আরও কিছু ছাত্র এবং বিভাগের কয়েকজন সহকর্মীও এইবার আমেরিকার বেশ ভালো ভালো বিশ্ববিদ্যালয়ে পিএইচডি করতে যাচ্ছে। আমরা যদি আমাদের ছাত্রদের একটু ভালো পরিবেশ দিতে পারতাম, শিক্ষকদের গবেষণার পরিবেশ এবং একটু ভালো বেতন দিতে পারতাম বিদ্যমান শিক্ষক দিয়েই ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের মান অনেক উন্নত করা যেত। প্রয়োজন কেবল আবাসিক হলগুলোর মানের উন্নয়ন করা যাতে সকল ছাত্রকে একটি বেড, একটি পড়ার টেবিল, কাপড় রাখার একটি আলমারি ও মোটামোটি ভালো মানের খাবার দিতে পারি আমাদের শিক্ষার্থীরা খুব ভালো করত। এই পরিবেশ না দিয়ে আমরা আমাদের শিক্ষার্থীদের বনসাই বানিয়ে রেখেছি। বিসিএস নামক এক নেশায় তাদেরকে নেশাগ্রস্ত করে রেখেছি। 

মন্ত্রী জুনায়েদ আহমেদ পলক নিশ্চই দেখে এসেছেন ওখানকার শিক্ষার্থীরা কেমন পরিবেশে থাকে, কেমন খাবার খায়। তত ভালো চাই না। মোটামোটি ভারতের আইআইটির শিক্ষার্থীরা যেমন থাকে, খায় এবং পড়াশুনার পরিবেশ পায় সেটাই নিশ্চিত করুন। আমাদের শিক্ষার্থীরা ভারতের শিক্ষার্থীদের কোনো অংশে কম নয়। আমাদের চিন্তা ভাবনা সংস্কৃতি সবতো একই রকম। কেবল এই পার্থক্যটা ঘুচিয়ে দিন তাহলেই হবে। দেখুন না আইআইটির শিক্ষার্থীরা কেমন পরিবেশে থাকে, দেখুন না আইআইটির শিক্ষকরা কেমন শিক্ষক নিয়োগ দেয় আর তারা কেমন বেতন পায়। এইসব কী খুব বেশি চাওয়া? কত কত মেগা প্রজেক্ট নিচ্ছেন। শিক্ষা কেন্দ্রিক কিছু মেগা প্রজেক্ট নিন না। দেখবেন সত্যিকারের টেকসই উন্নতি সেখান থেকেই শুরু হয়ে যাবে।
লেখক: শিক্ষক, পদার্থবিজ্ঞান বিভাগ, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় 

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়