শিরোনাম

প্রকাশিত : ১৬ মে, ২০২২, ০২:১১ রাত
আপডেট : ১৬ মে, ২০২২, ১০:৫৩ দুপুর

প্রতিবেদক : নিউজ ডেস্ক

কীসের দরকষাকষি, কী নিয়ে দর কষাকষি? 

ড. আসাদুজ্জামান রিপন

ড. আসাদুজ্জামান রিপন: বিএনপি আওয়ামী লীগের অবৈধ সরকারের অধীনে আগামীতে কোনো প্রহসনের ভোটে যাবে না। কথাটা স্পষ্টভাবে জানিয়ে দিয়েছেন দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান জনাব তারেক রহমান। মহাসচিবও সে একই কথা বলে আসছেন। মূলত এটাই সমর্থক ও কর্মীদের মনের কথা। আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের এই সহজ কথাটি বুঝতে না পেরে বলেছেন, ‘দর-কষাকষি করে লাভ নেই’। আপনাদের সাথে আবার কীসের দর কষাকষি এবং কী নিয়ে দর কষাকষি? আপনারা কি রাজনীতিতে সেই জায়গাটি আদৌ রেখেছেন। কারণ [১] আপনারা বেআইনিভাবে আমাদের দলের সর্বোচ্চ নেত্রী দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়াকে ফরমায়েশি রায়ে সাজা দিয়েছেন। একজন সুস্থ মানুষকে অন্যায়ভাবে কারাগারে রেখে তিলে তিলে অসুস্থ বানিয়ে হুইল চেয়ারের সাহায্য নেওয়ার পরিস্থিতি সৃষ্টি করেছেন।

আপনারা আমাদের প্রিয় নেত্রীকে তার ইচ্ছা অনুযায়ী বিদেশে উন্নত চিকিৎসাটা পর্যন্ত নিতে দেননি। আইন ব্যবহার করে তাকে রাজনীতি থেকেও প্রায় সরিয়ে দেওয়ার কূটচালটি আপাতত সম্পন্ন করেছেন। [২] আমাদের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান দেশনায়ক তারেক রহমানকেও ফরমায়েশি রায়ে সাজা দিয়েছেন। অথচ ১/১১ সরকারের আমলে আনীত মিথ্যা অভিযোগ বিচারিক আদালতে মিথ্যা প্রমণিত হওয়ার পরও উচ্চ আদালত ব্যবহার করে সাজা বহাল করেছেন এবং তার দেশে প্রত্যাবর্তনে ভয়াবহ নিরাপত্তার হুমকি হয়ে দাঁড়িয়েছেন। [৩] আমাদের দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যানের স্ত্রী ডা. জোবাইদা রহমানের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করেছেন। উদ্দেশ্য তিনিও যাতে ভবিষ্যতে নির্বাচনে দাঁড়াতে না পারেন। এসবের উদ্দেশ্য হলো: তারা যাতে নির্বাচনে দাঁড়াতে না পারে। জনগণ কিন্তু এসবই বোঝেন। [৪] আপনারা আমাদের দলের মহাসচিব মীর্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরসহ দলের প্রায় সকল নেতাদের বিরুদ্ধে মামলার পাহাড় সাজিয়ে রেখেছেন। আপনাদের সরকারের দেওয়া মিথ্যা মামলার বোঝায় দলের বিভিন্ন পর্যায়ে লক্ষ লক্ষ নেতাকর্মীর জীবন আজ দুঃসহ ও বিভীষিকায় পরিণত হয়েছে।

[৫] আপনাদের সরকারের আমলে আমাদের দলের অসংখ্য নেতাকর্মী খুন ও গুমের শিকার হয়েছেন। ইলিয়াস আলীসহ অনেকে যারা গুমের শিকার হয়েছেন - তাদের পরিবারের কষ্ট, যন্ত্রণা আর আহাজারীতে বাতাস আজও ভারী হয়ে আছে। [৬] আপনারা দেশটাকে শ্রীলঙ্কার শাসকদের মতো একটি পারিবারিক সম্পত্তি বানিয়ে ফেলেছেন। আপনাদের দুঃশাসনের যাঁতাকলে মানুষের জীবন এখন ওষ্ঠাগত। [৭] আপনারা খুব ভালো করেই জানেন, অবাধ নিরপেক্ষ ভোটের আয়োজন হলে আপনাদের জন্য এখন কুড়িটি আসনও আর অবশিষ্ট নেই মানুষের মনে। আপনাদের ১৪ বছরের দুঃশাসনে মানুষের মনে আপনারা এতোটাই ক্ষোভের কারণ ঘটিয়েছেন, এদেশের ব্যাপক জনগোষ্ঠী আপনাদের এখন ঘৃণা করতে শুরু করেছে। সেটা কি আপনারা টের পেয়েছেন?

[৮] দক্ষিণ এশিয়ার একটি দেশ শ্রীলঙ্কায় এখন যে দুঃখজনক অশান্তি চলছে, শাসকগোষ্ঠী সেদেশের মানুষের ঘৃণার পাত্রে পরিণত হয়েছে, আর এমপি, মন্ত্রীদের জনতা যেভাবে দিগম্বর করে ছাড়ছে তার দৃশ্যাবলী সোশ্যাল মিডিয়াতে দেখে একজন রাজনৈতিক কর্মী হিসেবে আমি সত্যিই লজ্জিত। একটি দেশে ক্ষমতাসীন রাজনৈতিক নেতাদের এমন অপদস্ততা সাম্প্রতিক কালে আমি দ্বিতীয়টি আর দেখিনি। অথচ ওই দেশের মানুষ সরকারকে ক্ষমতা ছাড়তে বলেছিলো আরও আগেই, কিন্তু তারা গায়ের জোরে ক্ষমতা আকড়ে থাকতে চেয়েছে।

এখন তারা পালাচ্ছে। মার খাচ্ছে। এসবই ক্ষমতা আকড়ে থাকতে চাওয়ার ফল। সবই তাদের কর্মফল। তবে, এখন থেকে কি কিছু শিক্ষা নিলেন? হ্যাঁ, তারপরও আপনাদের সাথে দর কষাকষি একটা হতে পারে। কারণ আমরা দেশের স্বার্থটাকে গুরুত্ব দিই সবার আগে। সে কারণে, আমাদের সাথে এখন যেসব দর কষাকষি করতে পারেন বা যে সুযোগটি এখনও হারিয়ে যায়নি। তাহলো: [১] কীভাবে সম্মানজনকভাবে বিদায় নিতে পারেন।

[২] নির্বাচনকালে একটা নির্দলীয় সরকার ব্যবস্থা কীভাবে সংবিধানে অন্তর্ভুক্ত করা যায়।

[৩] দেশকে যাতে ভবিষ্যতে বিপর্যয়ের মুখে পরতে না হয়, ব্যাপক গণআন্দোলনের মত পরিস্থিতি সৃষ্টি হওয়ার আগেই জাতীয় স্বার্থে নির্দলীয় সরকারের কাছে হস্তান্তরের রূপরেখা নিয়ে সকল রাজনৈতিক দলের সাথে আলোচনা শুরু করার পদক্ষেপ নেওয়া।

[৪] কীভাবে একটা লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড তৈরি করা যায়, এসব বিষয়ে আর কোনো বিষয় এখন অবশিষ্ট নেই, আমাদের সাথে আপনাদের দর কষাকষির। বিষয়টি যতো দ্রুত উপলদ্ধি করতে পারবেন এবং সে অনুযায়ী একটি নির্দলীয় সরকারের ক্ষমতায় আসার পথটা উনুক্ত (Transition phase) করে দিতে পারবেন, ততোই আপনাদের জন্য মঙ্গল। না হলে একপর্যায়ে উদ্ধারকারীদেরও আপনারা পাশে পাবেন না। ফেসবুক থেকে

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়