আর রাজী: কে বা কারা তাতে কিছুই যায় আসে নাÑযদি কোনো ব্যক্তি, গোষ্ঠী বা দল দীর্ঘমেয়াদে ক্ষমতায় থাকতেই থাকে, তাহলে সে বা তারা অনিবার্যভাবে নষ্ট হবেই, স্বৈরাচার হয়ে উঠবেই। এই স্বৈরাচারী শাসকরা যাই করে তার লক্ষ্য থাকে নিজের বা নিজেদের আরও আরও দীর্ঘকাল ক্ষমতাসীন রাখা। নিজ রাষ্ট্রজনদের বিরুদ্ধে হেন ষড়যন্ত্র নাই যা তারা করে না। এমনকি জোর বা কৌশল করে ক্ষমতায় থাকা এই স্বৈরাচারেরা রাষ্ট্র ক্ষমতা ধরে রাখতে গৃহযুদ্ধ লাগিয়ে দিতে পারে, বাধিয়ে দিতে পারে ভিন্ন রাষ্ট্রের সাথে যুদ্ধ।
অধিকাংশ ক্ষেত্রে এই স্বৈরাচারেরা বিপ্লব, বিদ্রোহ, উপল্লব বা অভ্যূত্থানে বিদায় নিতে বাধ্য হয়। বিদায়ের পর বেরিয়ে পরে গোপন কারাগার, গণকবর, নির্যাতনের নানান আয়োজন। লুকিয়ে রাখা অর্থনৈতিক দুর্দশা, নীতি-নৈতিকতার অবক্ষয়, সামাজিক বিশৃঙ্খলা, মানুষের আত্মপরতা, জিঘাংসা সব সব একযোগে বেরিয়ে এসে অরাজক এক দিশেহারা পরিস্থিতিতে ফেলে দেয় রাষ্ট্রজনদের।
এই কথাগুলো ইতিহাসের প্রামাণ্য শিক্ষা। অস্বীকারের জো নাই কোনো। খেয়াল করে দেখুন, আপনিও জানেন এই সত্য। তারপরও কিছু মানুষ ইতিহাসের শিক্ষাকে গোপন করে, আত্মশ্লাঘায়, অলীক সব কল্পনায় মানুষের জীবনকে, সম্ভবত সকল সৃষ্টিকেই বিপদগ্রস্ত করে ফেলে। অথচ আপনি আপনার জানাকে আড়ালে রেখে বিশ্বাস করতে চান, একনায়কের অলীক কথামালায়। আর আপনি আশা করতে থাকেন, একটা ক্ষমতাচোর বা ক্ষমতাডাকাত স্বৈরাচার আপনার জন্য, আপনার সন্তানদের জন্য ভাল কিছু হয়তো করবেন! হায়, আপনার এবং আপনাদের-আমাদের সকলের জন্য নিশ্চিতভাবেই অপেক্ষা করছে ভয়ঙ্কর এক আগামী!
লেখক: সহকারী অধ্যাপক, গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগ, চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়
আপনার মতামত লিখুন :