মাসুদ রানা: বাঙালী জাতির ইতিহাসে দুই নায়ক - নবাব সিরাজউদ্দৌলা ও প্রেসিডেণ্ট শেখ মুজিবুর রহমান! উভয়ই বিষাদ-নায়ক, তাঁদের করুণ পরিণতির জন্যে। নবাব সিরাজ ও প্রেসিডেণ্ট মুজিবের মধ্যে বেশ সাদৃশ্য লক্ষ করা যায়। উভয়েরই পূর্বপুরুষ বহিরাগত, কিন্তু উভয়ই বাংলার জন্যে নিবেদিত বাঙালীত্বের প্রবাদ-পুরুষ। উভয়ই বাংলাকে বিদেশী কর্তৃত্ব ও শোষণো থেকে মুক্তির প্রয়াসে আজীবন লড়েছেন তাঁদের বিশ্বাস ও পদ্ধতি অনুসারে। এবং, উভয় ষড়যন্ত্রের শিকার হয়ে প্রাণ হারান বিশ্বাসঘাতকের হাতে। নবার সিরাজউদ্দৌলা ও প্রেসিডেণ্ট শেখ মুজিবুর রহমান উভয়েরই ক্ষমতা অপব্যবহারের অভিযোগে সমালোচিত হন, কিন্তু উভয়কেই বাঙালী ভালোবাসে। ইতিহাসের কোনো পর্যায়ে কোনো দেশে কোনো জাতির নায়কেরাই সম্পূর্ণ নির্দোষ হয় না। দোষে-গুণেই তাঁরা মানুষ।
নবার সিরাজ ও প্রেসিডেণ্ট শেখ মুজিবের যতোই সমালোচনা থাকুক না কেনো, এঁরাই বাঙালী জাতির বীর দুই পুত্র, যাঁরা বাংলার - একান্তই বাংলার - স্বাধীনতা ও স্বাতন্ত্র্যের জন্যে আত্মনিয়োজিত ও অভ্যন্তরীণ ষড়যন্ত্রের নিহত। তাঁরাই বাঙালীর নায়ক, যাঁদের কোনো প্রতিস্থাপন নেই!
সুভাষ চন্দ্র বসুও বাঙালীর বিষাদ-নায়ক, কিন্তু তিনি বাংলার স্বাধীনতা ও স্বাতন্ত্র্যের জন্যে নয়, বরং হিন্দুস্থানের স্বাধীনতার জন্যে প্রাণ দিয়েছেন। ফলে, তিনি বাঙালীর চেয়েও বেশি হিন্দুস্থানী নায়ক, যদিও বাঙালী তাঁকে নেতাজি বলে সম্বোধন করে। এখানে একটি পরম্পরা লক্ষণীয় যে, সুভাষচন্দ্র বসু নবাব সিরাজউদ্দৌলাকে দারুণ শ্রদ্ধা করতেন। তিনি নবাব সিরাজুদ্দৌলার নামে আরোপিত কলকাতার ফৌর্ট উইলিয়ামে (দূর্গে) অন্ধকূপে ইংরেজ হত্যার মিথ্যা কলঙ্কের স্মৃতিস্তম্ভ গুড়িয়ে দিয়েছিলেন। প্রেসিডেণ্ট শেখ মুজিবুর রহমান সুভাষ চন্দ্র বসুকে শ্রদ্ধা করতেন এবং নেতাজি বলেই সম্বোধন করতেন। লণ্ডন, ইংল্যাণ্ড
আপনার মতামত লিখুন :