মহসিন কবির: রাজধানীতে দাপিয়ে বেড়াচ্ছে ব্যাটারিচালিত রিকশা চালকরা। দুর্ঘটনাও ঘটাচ্ছে।অটোরিকশার ধাক্কায় জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ব বিদ্যালয়ের এক ছাত্রী নিহতও হয়েছেন। আওয়ামী লীগের আমলে একবার ব্যাটারিচালিত অটোরিকশা চালানো বন্ধ করেছিলো। কিন্তু চালকের আন্দোলনের ফলে আবার চালানোর অনুমতি দিতে বাধ্য হয়।
এরপর মঙ্গলবার (১৯ নভেম্বর) বিচারপতি ফাতেমা নজীব ও বিচারপতি মাহমুদুর রাজীর হাইকোর্ট বেঞ্চ ঢাকা মহানগর এলাকায় তিন দিনের মধ্যে ব্যাটারিচালিত রিকশা চলাচল বন্ধের আদেশ দিয়েছিলেন। কিন্তু ব্যাটারিচালিত অটোরিকশা চালকরা হাইকোর্টের নির্দেশ অমান্য করে রাস্তায় নেমে রাস্তা অবরোধ করে বিক্ষোভ করেন। ফলে রাজধানীর বিভিন্ন সড়কে তীব্র যানজটের সৃষ্টি হয়। ভোগান্তি পড়ে সাধারণ মানুষ।
ব্যাটারিচালিত অটোরিকশা চালানো ও বন্ধের বিষয়ে নেটিজনরা বিভিন্ন মন্তব্য করছেন। কেউ ব্যাটারিচালিত অটোরিকশা বন্ধের পখ্সে মত দিয়েছেন আবার কেউ চালানোর বিপক্ষে মত দিয়েছেন।
মো. বাদল নামে একজন ফেসবুকে লিখেছেন, রাস্তায় দুর্ঘটনা ঠেকানোর পাশাপাশি বিদ্যুৎ সাশ্রয় করতে ব্যাটারি চালিত অটো রিকশা অবশ্যই বন্ধ করা উচিত।
মো. জাহিদুল ইসলাম নামে একজন ফেসবুকের কমন্সে বক্স লিখেছেন, কুবুদ্ধি দিয়ে দেশটাকে অশান্ত করেন না। আগে আগে কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা করেন, তাদেরকে নিয়োগ দেন। তারপর এই সিদ্ধান্ত নেন। নাহলে দেশও অশান্ত হবে।
খায়রুল আলম নামে একজন ফেসবুকে লিখেছেন, অটো চালকদের কঠোর হস্তে দমন করা প্রয়োজন। এই অটোর কারণে সড়ক চলাচলের অযোগ্য হয়ে পড়েছে। অটো বন্ধ হলে সেই পুরনো চিত্র ফিরে পাবে রাজধানীবাসী। বেশিরভাগ অটো চালক নেশাগ্রস্ত এবং বেয়াদব, এটা ১০০% সত্য। এখানে দ্বিমত হওয়ার কোনো সুযোগ নেই।
সুমন হোসাইন নামে একজন লিখেছেন, এই রিকশাগুলোর কারণে ঢাকাতে এক্সিডেন্ট বেশি হয়। যা আমি নিজের চোখেই কয়েকটা দুর্ঘটনা দেখিছি। তারা হাইওয়ে রাস্তাগুলোকে নিজের বাবা-দাদার সম্পত্তি মনে করে। তাদের কঠোর হস্তে দমন করতে হবে।
সোহেল বাবু নামে একজনর লিখেছেন, বেআইনি অটো রিকশা চালানোর দাবি তারা কীভাবে করার সাহস পায়। এই নগর থেকে তাদের অবশ্যই চলে যেতে হবে। নয়তো তাদের কঠোরভাবে দমন করার অনুরোধ রইল।
সাকলায়েন রাসেল নামে একজন ফেসবুকে লিখেছেন, বেপরোয়া অটোচালকদের শক্ত হাতে দমন করুন। এদের ইন্ধনদাতা মালিকদের চিহ্নিত করুন। ঢাকা শহরে ব্যাটারিচালিত রিকশাকে নিষিদ্ধ করতেই হবে।
রাজিব আহমেদ একজন ফেসবুকে লিখেছেন, কোটা পুনর্বহালের রায়ের কারণে শেখ হাসিনা গণ কেইস হয়ে গেছে। ব্যাটারিচালিত রিকশা বন্ধের রায় কার পতন ঘটায় কে জানে। আমাদের আদালত বাস্তবতার ধারে কাছে নেই। আইন শৃঙ্খলা পরিস্থিতি যখন নাজুক, তখন এমন একটা রায় কেমনে দিলেন মাই লর্ড? সবার জানা ছিল, জীবিকার উপর আঘাত এলে চালকরা রাস্তায় নামবে।
রিমন তালুকদার নামে একজন ফেসবুকে লিখেছেন, ঢাকা সিটিতে কোন ধরনের রিকশাই চলাচল করতে দেয়া উচিত না। যেহেতু রুটি রুজির বিষয় জড়িত তাই যে সড়কগুলোতে বাস চলাচল করে সেই সড়কগুলোতে সব ধরনের রিক্সা বা অটোরিক্সা চলতে দেয়া উচিত না । তবে গলির ভিতরে বৈধ রিক্সা বা অটোরিক্সা চলতে দেয়া যেতে পারে।
সাইদুল ইসলাম নামে একজন ফেসবুকে লিখেছেন, পায়ে চলা রিক্সা বন্ধ করুক। ব্যাটারি চালিত রিকশার মোটরের চালন ক্ষমতা হ্রাস করে স্বল্প গতির করা হোক। সংখ্যা নিয়ন্ত্রণ করা হোক।
শেখ শাহ আলম নামে একজন ফেসবুকে লিখেছেন, যেসকল রোডে লোকাল বাস চলাচল করে.. সেই সকল রোডে সকল ধরনের রিক্সা চলাচল বন্ধ করা উচিত।
মিনহাজ আহমেদ নামে একজন ফেসবুকে লিখেছেন, সঠিক মনে করি, ব্যাটারি চালিত রিক্সা বন্ধের দাবী জানাই, রাস্তার ৮০% এক্সিডেন্টে প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে তারা দ্বায়ী থাকে। আর যদি চালাতেই হয়, বুয়েট থেকে এদেরকে সেইফ শেপ পাওয়ার ব্রেকিং ব্যালেন্স নির্ধারণ করে দিতে হবে। প্রফেশনাল ড্রাইভিং লাইসেন্স বাধ্যতামূলক করতে হবে।
এম এ সাঈদ শিকদার নামে একজন ফেসবুকে লিখেছেন, প্রধান সড়কে কোন রিক্সা চলা যাবেনা। শুধুমাত্র গলির রাস্তায় স্বল্প সংখ্যক রিক্সা চালানোর অনুমতি দেয়া যেতে পারে।
সাইক আহমেদ মামুন নামে একজন ফেসবুকে লিখেছেন, আজকে রিক্সা চালকদের বিশৃঙ্খলার জন্য দায়ী অবৈধ গ্যারেজ মালিকরা। রিক্সা চালানো ভালো পেশা না। রিক্সা তুলে দেওয়া উচিত। এরচাইতে শিল্প কারখানা বা অন্য কোন প্রডাক্টিভ কাজ করা উচিৎ চালকদের। তাতে দেশের উন্নতিতে তারা অবদান রাখতে পারবে।
মো. কামাল উদ্দিন চৌধুরী নামে একজন ফেসবুকে লিখেছেন, না সঠিক না। তাদের ও জীবিকার দরকার আছে কারণ তাদের পরিবার আছে। ওরা বসে বসে খাচ্ছে না রিকশা চলাইয়া খাচ্ছে ওরা কারো বাপের টাকা খাচ্ছে না।
আরসিন রাফসান একজন ফেসবুকে লিখেছেন, পায়ে চালিত রিকশা খুবই অমানবিক। সব রিকশা কে ব্যাটারী চালিত করা উচিত এবং ফিডার রাস্তায় সীমাবদ্ধ করা উচিত।
বুলবুল নামে একজন ফেসবুকে লিখেছেন, পায়ে চালানো রিক্সা বেশ পরিশ্রমের কাজ। তাই ব্যাটারী চালিত রিক্সাগুলোর একটা সঠিক নিরাপদ আকার তথা নির্দিষ্ট ডিজাইন এবং সর্বোচ্চ গতি সীমিতকরণ বিষয়ে বুয়েটের পরামর্শ এবং সহযোগীতা নেয়া উচিত। একই সাথে কোন সিটি কর্পোরেশন এলাকায় কত রিক্সা থাকবে তাও নির্ধারন করা হোক এবং সিটি কর্পোরেশনের রেজিস্ট্রশন নাম্বার বাধ্যতামূলক করা জরুরি।
মোহাম্মদ কোরবান নামে একজন ফেসবুকে লিখেছেন, ব্যাটারিচালিত অটোরিকশা চলাচল বন্ধ করার পক্ষে পায়ে চালিত রিকশা চালকদের দাবি কিছুটা সঠিক হতে পারে, তবে বিষয়টি কিছুটা জটিল। পায়ে চালিত রিকশা চালকদের মতে, ব্যাটারিচালিত অটোরিকশা তাদের আয়ের ওপর প্রভাব ফেলছে, কারণ এগুলো দ্রুত এবং সহজে চলতে পারে, যার ফলে তারা কম যাত্রী পাচ্ছে। এছাড়াও, ব্যাটারিচালিত রিকশাগুলো ট্রাফিক জ্যাম এবং দুর্ঘটনার কারণ হতে পারে।
তবে অন্যদিকে, ব্যাটারিচালিত অটোরিকশা পরিবহন খরচ কমায় এবং যাত্রীদের জন্য সুবিধাজনক হতে পারে। সুতরাং, উভয় দিক বিবেচনা করে একটি ভারসাম্যপূর্ণ সিদ্ধান্ত নেওয়া উচিত, যা সকল পক্ষের জন্য ন্যায়সঙ্গত হবে।
সিরাজুল ইসলাম নামে নামে একজন ফেসবুকে লিখেছেন, রিক্সা মানে প্যাডেল চালিত মানুষের পায়ের শক্তি দিয়ে চলবে যেটা খেটে খাওয়া মানুষের একমাত্র অবলম্বন। ব্যাটারি দিয়ে যদি রিকশা চালায় তাহলে সেটা নামে রিক্সা কাজ হচ্ছে বসে থাকা আর এক্সিডেন্ট করা । এটা জাতির সাথে মশকরা করার সমান। বিদ্যুৎ নষ্ট করে ব্যাটারি চালীতো রিক্সা না চালিয়ে সবার প্যাডেল রিক্সা চালানো উচিত অন্যথায় মানুষ পরিশ্রম না করে অলসের দিকে ধাবিত হচ্ছে। কিছু অসাধু ব্যবসায়ী নিজেদের সুবিধার জন্য এই প্রথা,চালু করছে। আমার মতে যারা ব্যাটারি রিকশা চালায় সবার পেেডল চালিত রিকশা চালানো উচিত।
অভিনেতা, নায়ক নিলয় ফেসবুকে নিলয় লিখেন, ‘অটো রিকশা ইমেপোর্ট করে দেশে এনে আবার বন্ধ করা হচ্ছে।ইমপোর্ট করার পারমিশন দেয় কে আর বন্ধ করার পারমিশন দেয় কে? অটো রিকশাকে নিয়ে কেনো এই ছিনিমিনি খেলা!’
এক নেটিজেন নিলয়ের পোস্টের মন্তব্যের ঘরে লিখেছেন, ‘বিকল্প কর্মসংস্থান তৈরি না করে অটো রিকশা বন্ধ করা কি উচিত? এতে করে লাখ লাখ মানুষ বেকার হয়ে যাবে। হাজার হাজার পরিবারের আয়ের রাস্তা সম্পূর্ণভাবে বন্ধ হয়ে যাবে।আগে বিকল্প কর্মসংস্থান তৈরি করেন।’ অনুসারীদের অনেকেই ধন্যবাদ জানিয়েছেন অভিনেতাকে।
আপনার মতামত লিখুন :