শিরোনাম
◈ অনুশোচনা নেই আওয়ামী লীগে, অপেক্ষা অন্তর্বর্তী সরকার ব্যর্থ হওয়ার ◈ (১৫ নভেম্বর) বাংলাদেশি টাকায় আজকের মুদ্রা বিনিময় হার  ◈ ওয়েটিং লাউঞ্জ উদ্বোধন করলেম প্রধান উপদেষ্টা ◈ বার বার ফ্যাসিস্ট বলা আমি পছন্দ করি না, কারণ এরাওতো আমাদের পরিবারের সদস্য: লন্ডনে জামায়াতের আমীর ◈ স্থানীয়রা আটক করল সাবেক এমপিকে, এরপর যা ঘটল ◈ মায়ের সঙ্গে যাচ্ছিল শিশুটি, হঠাৎ ভেঙে পড়ল দেয়াল(ভিডিও) ◈ তিন দিনের জন্য চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফি ১০ ডিসেম্বর বাংলাদেশে আসবে ◈ ঘুমের ওষুধ খাইয়ে শিল্পপতিকে জবাই করেন পরকীয়া প্রেমিকা রুমা: পুলিশ (ভিডিও) ◈ সংখ্যালঘুদের নিরাপত্তা আমাদের দায়িত্ব, এ বিষয়ে ভারতের কিছু বলার দরকার নেই: উপদেষ্টা নাহিদ (ভিডিও) ◈ ফ্যাসিবাদের মূল উৎপাটন না হওয়া পর্যন্ত রাজপথে থাকবো :  শহীদ আব্দুল্লাহর জানাজায় হাসনাত আব্দুল্লাহ (ভিডিও)

প্রকাশিত : ১৫ নভেম্বর, ২০২৪, ০১:৩৪ রাত
আপডেট : ১৫ নভেম্বর, ২০২৪, ০৬:০০ সকাল

প্রতিবেদক : নিউজ ডেস্ক

বিএনপির একত্রিশ

নাসির উদ্দিন, ফেইসবুক থেকে : আমার জানায় ভুল আছে। অথবা আমার পাঠ মিথ্যা। এই দুর্ভাগ্য আমার। এই অজ্ঞতাই আমাকে প্রশ্ন করে।  বিএনপির ৩১ দফা নিয়ে আমি শঙ্কিত। ক্ষমতায় যাবে নিশ্চিত হয়েই হয়তো দলটি তার পুরনো দফানামা মানুষকে স্মরণ করিয়ে দিলো। ৩১ দফার প্রথম দিকের কয়েকটি এখানে উত্থাপন করলাম।

দলটি বলেছে, 'বাংলাদেশি জাতীয়তাবাদের ভিত্তিতে একটি অন্তর্ভুক্তিমূলক, বৈষম্যহীন ও সম্প্রীতিমূলক রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা করা হবে'। আমার প্রশ্ন, জাতিয়তাবাদে অন্তর্ভুক্তি বৈষম্যহীন ও সম্প্রীতির সুযোগ কোথায়? 

জাতি হচ্ছে একটি অভিন্ন সাংস্কৃতিক ও সামাজিক সম্প্রদায়। যাদের রক্তের ধারাও অভিন্ন হয়। এই অভিন্ন জাতিবোধ থেকে নৈতিক এবং দার্শনিক চেতনার উন্মেষ থেকে জাতীয়তাবাদের সৃষ্টি। আর জাতিয়তা গড়ে ওঠে, ভাষা সাহিত্য রীতিনীতি চাল-চলন ধ্যান-ধারনা ও ঐতিহ্যের দ্বারা ঐক্যবদ্ধ জনসমষ্টি নিয়ে। এই দুটি ইস্যুতে বাংলাদেশকে জাতীয়তাবাদের ছকে ফেলা অসম্ভব। কারণ একটি জাতি ও রাষ্ট্র একই সামাজিক ধারায় গড়ে ওঠলেই দেশটি জাতীয়তাবাদী হয়। 

দলটি বলছে, 'গণতন্ত্র ও ভোটাধিকার পুনঃপ্রতিষ্ঠায় এবং স্বচ্ছ গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়াকে স্থায়ী সাংবিধানিক ও প্রাতিষ্ঠানিক রূপ দিতে, ‘নির্বাচনকালীন দলনিরপেক্ষ তত্ত্বাবধায়ক সরকার’ ব্যবস্থা প্রবর্তন করা হবে'। 

নির্বাচন গনতন্ত্রের একটা নগণ্য অংশ মাত্র। আর গনতন্ত্র হচ্ছে একটা সম্পূর্ণ শাসনতান্ত্রিক প্রক্রিয়া। কেবল নির্বাচনকালীন তত্ত্বাবধায়ক সরকার প্রবর্তন করেই গনতন্ত্রকে স্থায়ী সাংবিধানিক রূপ দেয়ার কথা একদমই শিশুতোষ। 

তারা বলছে, 'প্রধানমন্ত্রী ও মন্ত্রীসভার নির্বাহী ক্ষমতায় ভারসাম্য আনা হবে। রাষ্ট্রীয় ক্ষমতার ভারসাম্য প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে নির্বাহী বিভাগ, আইন বিভাগ ও বিচারবিভাগের ক্ষমতা, দায়িত্ব ও কর্তব্যের সুসমন্বয় করা হবে। চতুর্থ দফায় অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ইস্যুর অবতারণা করা হয়েছে। কিন্তু এই দফায় দলটির হীন উদ্দেশ্য অত্যন্ত পরিস্কার। 

প্রথমত: জন দাবী হচ্ছে প্রধানমন্ত্রীর একচ্ছত্র ক্ষমতা কমিয়ে রাষ্ট্রপতির সঙ্গে ক্ষমতার ভারসাম্য সৃষ্টি করা। দলটি বলছে, প্রধানমন্ত্রীর সাথে মন্ত্রীদের ক্ষমতার ভারসাম্যের কথা। এটি নিতান্তই ব্যক্তি ও পরিবারতন্ত্র টিকিয়ে রাখার কৌশল। কারণ দেশের বড়ো দুই দলের নেতাদের দলীয়প্রধান ও প্রধানমন্ত্রীর পদধূলি পেতেও কৃপা লাগে। সেখানে প্রধানমন্ত্রীর সাথে তারা কি সমন্বয় করবেন? দুই দল হচ্ছে লিমিটেড কোম্পানি। অন্য সবাই কর্মচারীতূল্য। 

দ্বিতীয়ত: আরও গুরুত্বপূর্ণ ইস্যু হচ্ছে, মানুষের দীর্ঘকালীন প্রত্যাশা হচ্ছে বিচার বিভাগের স্বাধীনতা। কিন্তু বিএনপি বলছে, নির্বাহী বিভাগ, আইন বিভাগ ও বিচার বিভাগের সমন্বয়ের কথা। দলটি আইন বিভাগকে নির্বাহী বিভাগের পরে নামিয়ে এনে রাষ্ট্রের কতৃত্বের জায়গাটিকেই ঈঙ্গিত করেছে। মানে প্রধানমন্ত্রীই থাকছেন সর্বেসর্বা। অথচ গনতন্ত্র বা জনগণের শাসনের চিন্তা মাথায় থাকলে আইন বিভাগকে প্রথম তারপর বিচার এবং সবশেষে নির্বাহী বিভাগের কথা আসতো। নির্বাহী বিভাগকে প্রথমে রেখে একনায়কতন্ত্র ও আমলাতান্ত্রিক ব্যবস্থাকেই প্রাধান্য দিয়েছে দলটি। 

বাংলাদেশের সংবিধান গনতান্ত্রিক অস্তিত্ব হারিয়েছে ৭০ অনুচ্ছেদ বিলুপ্তির ফলে। জনদাবী হচ্ছে, এই অনুচ্ছেদের পুনর্বহাল। বিএনপি বলছে, 'আস্থাভোট, অর্থবিল, সংবিধান সংশোধনী বিল এবং রাষ্ট্রীয় নিরাপত্তার প্রশ্ন জড়িত এমন সব বিষয় ব্যতীত অন্যসব বিষয়ে সংসদ সদস্যদের স্বাধীনভাবে মতামত প্রদানের সুযোগ নিশ্চিত করার লক্ষ্যে সংবিধানের ৭০ অনুচ্ছেদ সংশোধন করার বিষয় পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে (দেখা হবে) বিবেচনা করা হবে'। আশ্চর্য গনতন্ত্রের আশ্বাস! 

দলটি গনতন্ত্রকে উলঙ্গ করে উচ্চকক্ষ প্রতিষ্ঠার কথা বলছে। একটি কার্যকর গনতান্ত্রিক ব্যবস্থায় নির্বাচিত আইনসভাই কেবল এমন একটি গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত নিতে পারে। আইনসভায় অনুমোদনের আগে এ সংক্রান্ত আইনের অনুমোদন লাগবে। কাঠামোগত প্রক্রিয়া, যাদের অন্তর্ভুক্ত করা হবে তাদের যোগ্যতা, দলীয় পরিচয় ইত্যাদি বিষয়ে মীমাংসা লাগবে। জনতা ও অংশীজনদের মতামত ছাড়া এ ধরনের একটি দলীয় সিদ্ধান্ত আরেকটি মাথা ভারি অকার্যকর ব্যবস্থার জন্ম দিবে। (এক)

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়